পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগ্নহৃদয়। ܗ ܠ ܟܠ পুরানো প্ৰণয়ী-সাথে চোখে চোখে দেখা হলে শরমে আকুল হয়ে তাড়াতাড়ি যায় চলে ! প্ৰণয়ের স্মৃতি শুধু অনুতাপ-রূপে জাগে, ভুলিবারে চাহে যেন ভালো যে বাসিত আগে । বিবাহ করেছে তারা, সুখেতে রয়েছে কিবাভাই বন্ধু মিলি সবে কাটাইছে নিশি দিবা । সকলেই সুখে আছে যে দিকে ফিরিয়া চাই, আমি শুধু করিতেছি “কেহ নাই- কেহ নাই’ । তাদের প্ৰেয়সী যদি মোরে দেখিবারে পায় হাসিয়া লুকানো হাসি মোর মুখ-পানে চায়অবাক হইয়া তারা ভাবে কত মনে মনে, “এই কি নলিনী সেই মুখে যার হাসি নেই, বিষাদ-আঁধার জাগে জ্যোতিহীন দু-নয়নে ! এই কি নাথের মন হরেছিল একেবারে !” কিছুতে সে কথা যেন বিশ্বাস করিতে নারে ! হয়তো সে অভিমানে তুলিয়া পুরানো কথা নাথের হািদয়ে তার দিতে চায় মনোব্যথা । অমনি সে সীসংকোচে যেন অপরাধী-মতো মরমে মরিয়া গিয়া বুঝাইতে চায় কত ! কচি মুখে আধ’ আধ’ কথা পড়িতেছে ফুটি, অযতনে কপালেতে পড়ে আছে চুলগুলি--- চুপিচুপি কাছে গিযে কোলেতে লইনু তুলি । বুকেতে ধরিনু চাপি, হৃদয় ফাটিয়া গিয়া পড়িতে লাগিল অশ্রু দর দর বিগলিয়া ! ডাগর নয়ন তুলি মুখপানে চেয়ে চেয়ে কিছুখন পরে তারা চলিয়া গেল গো ধেয়ে ! আজি মোর কেহ নাই হয়, সকলোরি গৃহ আছে, গৃহমুখে চলে যায় নলিনীর কিছু নাই। হায় ! ত্ৰিয়ন্ত্রিাংশ সগ পৰ্ণশয্যায় শয়ান মুরলা। চপলা, চপলা । কী করিয়া এত তুই হলি রে নিষ্ঠুর, ললিতা সে, এত ভালো বাসিতিস যারে, কী করিয়া ফেলি তারে যাবি দূর-দূর এতদিনকার প্ৰেম ছিড়ি একেবারে !