পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ტ\ე श्रीक्ष-ब्रष्नावी এসেছি। এখানে। তুমি তো জািন আমাদের দেশে দৈবাং দুই-একজন সত্যিকার পুরুষ দেখা যায়। তোমাদের একমাত্র চেষ্টা এঁদের একেবারে নিজীব করে দিতে । আমরা দেশের মেয়েরা যদি এই সব সুসন্তানদের আপনি প্রাণ দিয়ে রক্ষা না করি তবে আমাদের নারীধর্মকে ধিক। তােমার অগােচরে নানা কৌশলে এতদিন এই কাজ করে এসেছি। যার কোনাে হুকুম কখনাে ঠেলতে পারিনি, সকলের চেয়ে কঠিন আজকের এই হুকুম-এও আমাকে মানতে হবে। এই আমার দেবতাকে আজ তোমার হাতেই ছেড়ে দিয়ে আমি সরে দাড়াব। জানি আমার চেয়ে বড়ো রক্ষক তঁর মাথার উপরে আছেন। দুদিন পরেই সমাজের সঙ্গে আমার সম্বন্ধ কিরকম নিন্দায় ভরে উঠবে তা আমি জানি। এই লাঞ্ছনা। আমি মাথায় করে নেব। কখনো মনে কোরো না চাতুরী করে তোমার স্ত্রীকে বঁচিয়ে এই মানুষকে আলাদা নালিশে জড়াতে পারবে। আমি চিরদিন তঁর পিছন পিছন থেকে শান্তির শেষ পালা পর্যন্ত যাব। তুমি সুখে থেকে। তোমার ভয় নেই, ইচ্ছা করলেই তুমি নূতন সঙ্গিনী পাবে। আর যা কর আমাকে দয়া কোরো না। আমার চেয়ে অনেক বড়ো ধারা তাদের তুমি তা কর নি। সেই নিষ্ঠুরতার অংশ নিয়ে মাথা উঁচু করেই আমি তোমার কাছ থেকে বিদায় নেব। প্রাণপণে তোমার সেবা করেছি। ভালোবেসে, প্ৰাণপণে তোমাকে বঞ্চনা করেছি। কর্তব্যবোধে, এই তোমাকে জানিয়ে গেলুম। এর পরে হয়তো আর সময় পাব না ।” সদূর কথায় বাধা দিয়ে অনিল বলে উঠল, “বিজয়বাবু, আজ আমি ধরা দেব বলেই স্থির করে এসেছিলুম। আমার আর কোনো ভাবনা নেই। আমার কাজ শেষ হয়ে গেছে। আপনি সদুর কথায় ভড়াকবেন না। ও একটি অসাধারণ মেয়ে, জন্মেছে আমাদের দেশে, একেবারে খাপছাড়া সমাজে । খুব ভালো করেই চিনেছি। আমি ওকে, চিনি বলেই আপনাকে বলছি ও নিষ্কলঙ্ক। যে কঠিন কর্তব্য আমরা মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়েছি। সেখানে ভালোবাসার কোনো ফাক নেই, আছে কেবল আপনাকে জলাঞ্জলি দেওয়া। বিশ্বসংসারের লোক সন্দু সম্বন্ধে কিছু জানবে না, আপনার কোনো ভয় নেই। ওকে নিয়ে আপনি মন্দিরের সুরঙ্গ পথ দিয়ে বাড়ি ফিরুন। আর আমি অন্যদিক থেকে পুলিসের হাতে এখুনি ধরা দিচ্ছি। এইসঙ্গে একটি কথা আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমাকে আপনারা বাধতে পারবেন। না। রবিঠাকুরের একটা গান আমার কণ্ঠস্থ আমারে বাধবি তোরা সেই বাধন কি (Vof(Mk VITARI" হঠাৎ গেয়ে উঠল বিদেশী গলায়, মন্দিরেব ভিত থর থর করে কেঁপে উঠল গলার জোরে। অবাক হয়ে গেলেন ইনসাপেক্টর বাবু। “এই গান অনেক বার গেয়েছি, আবার গাইব, তার পরে চলাব আফগানিস্থানের রাস্তা দিয়ে, যেমন করে হােক পথ করে নেব। আপনাদের সঙ্গে এই আমার কথা রইল। আর পনেরো দিন পরে খবরের কাগজে বড়ো বড়ো অক্ষরে বের হবে, অনিল বিপ্লবী পলাতক । আজ প্ৰণাম হই।” হঠাৎ বিজয়ের হাত কেঁপে উঠল, টাটা মাটিতে পড়ে গেল হাত থেকে। মুখের উপরে দুই হাত চেপে বসে পড়লেন। প্ৰদীপটাও দমকা বাতাসে শেষ হয়ে গেছে আগেই। SS-R) VE Sà8) Eskily þe8;