পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዒ¢ 8 রবীন্দ্র-রচনাবলী দেখিতাম বসিয়া বসিয়া, মরমের ঘুমঘোরে কত দেখিতাম স্বপ্ন যেত দিন হাসিয়া-খুসিয়া। বনের পাখির মতো অনন্ত আকাশতলে গাহিতাম। অরণ্যের গানআর কেহ শুনিত না, প্ৰতিধ্বনি জাগিত না, শূন্যে মিলাইয়া যেত তান। প্ৰভাত এখনো আছে, এরি মধ্যে কেন তবে আমার এমন দুরন্দশা ভবিষ্যতে এ কি রে কুয়াশা! যেন এই জীবনের আঁধার সমুদ্র-মাঝে ভাসায়ে দিয়েছি জীর্ণ তরী, এসেছি যেখান হতে অস্ফুট সে নীলতট এখনো রয়েছে দৃষ্টি ভরি! সেদিকে ফিরায়ে আঁখি এখনো দেখিতে পাই ছায়া-ছায়া কাননের রেখা, নানা বরণের মেঘ মিশেছে বনের শিরে এখনো বুঝি। রে যায় দেখা! যেতেছি যেখানে ভাসি সেদিকে চাহিয়া দেখি কিছুই তো না পাই উদ্দেশআঁধার সলিলরাশি সুদূর দিগন্তুে মিশে, কোথাও না দেখি তার শেষ! ক্ষুদ্র জীৰ্ণ ভগ্ন তরি একাকী যাইবে ভাসি যত দিনে ডুবিয়া না যায়, সমুখে আসন্ন ঝড়, সমুখে নিস্তািন্ধ মিশি শিহরিছে বিদ্যুতশিখায়! দিকবালা দূর আকাশের পথ উঠিছে জলদরথ, নিম্নে চাহি দেখে কবি ধারণী নিদ্রিত। অস্ফুট চিত্রের মতো নদ নদী পরবত, পৃথিবীর পটে যেন রয়েছে চিত্রিত! সমস্ত পৃথিবী ধরি একটি মুঠায় অনন্ত সুনীল সিন্ধু সুধীরে লুটায়। হাত ধরাধরি করি দিকবালাগণ দাড়ায়ে সাগরতীরে ছবির মতন।