পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Abt রবীন্দ্র-রচনাবলী পথ নাহি দেখা যায়, ক্ষণে ক্ষণে কলকায় বিদ্যুতের পরিহাসহাসি । সুরেশে জড়ায় দৃঢ়তর । অবসয় পদ ত্যায় প্ৰতি পদে বাধা পায়, তরাসেতে তনু থর থর । ঝলিল বিদ্যুৎ-শিখা, ভগ্ন এক অট্টালিকা অদূরেতে প্ৰকাশিল তথাকক্ষ এক হতে তার মুমূর্ষু আলোকধার কহে কি রহস্যময় কথা ! চলিল আলয়-পানে দোহে আশ্বাসিত প্ৰাণে সহসা জাগিল নীরবতাউঠিল সংগীতস্বর, বালার হাদয়-’পর প্ৰবেশিল দু-একটি কথা“পাগলিনী, তোর লাগি কি আমি করিব বল । কোথায় রাখিব তোরে খুঁজে না পাই ভূমণ্ডল ।” কঁাপিছে বালার বুক, নীল হয়ে গেছে মুখ, কপোলে বহিছে ঘৰ্মজলঘুরিছে মস্তক তার, চরণ চলে না। আর, শরীরে নাইক বিন্দুবল । তবুও অবশমনে অলক্ষিত আকর্ষণে চলিল সে ভীষণ আলয়ে— অঙ্গন হইয়া পাের - খুলি এক জীৰ্ণ দ্বার গৃহে পদাপিল ভয়ে ভয়ে । ভগ্ন ইষ্টকের পরে দীপ মিট মিট করে, বিদ্যুৎ ঝলকে বাতায়নে হেথা হােথা পড়িছে নয়নে । বিছানো শুকানো পাতা, শুয়ে আছে রাখি মাথা পুরুষ একটি শ্রান্তকায়অতি শীৰ্ণ দেহ তার, এলোথোলো জটাভার, মুখশ্ৰী বিবৰ্ণ অতি ভায় । জ্যোতিহীন নেত্র তার, পাতাটিও তুলিবার নাই যেন তঁমাখির শকতিদ্বারে শুনি পদধবনি হৃদয়ে বিস্ময় গনি তুলে মুখ ধীরে ধীরে অতি । সহসা নয়নে তার জ্বলিল অনল, সহসা মুহুর্ততরে দেহে এল বল । “ললিতা” “ললিতা” বলি করিয়া চীৎকারদু-পা হয়ে অগ্রসর কম্পিবান কলেবর শ্ৰান্ত হয়ে ভূমিতলে পড়িল আবার ।