পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় রচনাবলীর বর্তমান খণ্ডে মুদ্রিত গ্রন্থগুলির প্রথম প্রকাশের তারিখ ও রচনা-সংক্রান্ত জ্ঞাতব্য তথ্য গ্রন্থপরিচয়ে পাওয়া যাইবে। প্রয়ােজনবােধে কোনাে কোনাে রচনার পাণ্ডুলিপি ও সাময়িক পত্রে পাঠভেদ এবং রচনা-প্রসঙ্গে কবির প্রণিধেয় উক্তি সংকলিত হইয়াছে। বিশ্বভারতী-প্রচলিত রবীন্দ্র-রচনাবলীর সপ্তবিংশ ও অচলিত সংগ্ৰহ প্রথম খণ্ড বর্তমান খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হইল । স্মৃলিঙ্গ “স্মৃলিঙ্গ’ ১৩৫২ সালের ২৫ বৈশাখ প্রকাশিত হয়। ২৫ বৈশাখ ১৩৫৬ সালে ইহার পুনর্মুদ্রণ এবং ১৩৬৭ সালের চৈত্র মাসে ইহার পরিবর্ধিত শতবর্ষপূর্তি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সংকলিত কবিতাগুলি প্ৰথম ছত্রের বর্ণানুক্রমে সন্নিবিষ্ট । রচনাবলীর বর্তমান খণ্ডে এই পরিবর্ধিত সংস্করণটিই অন্তর্ভুক্ত হইল। ১৩৩৪ সালে লেখন প্রকাশিত হয় । লেখনের সগোত্র আরো বহু কবিতা রবীন্দ্রনাথের নানা পাণ্ডুলিপিতে, বিভিন্ন পত্রিকায় এবং তাহার স্নেহভাজন বা আশীর্বাদপ্রাথীদের সংগ্রহে বিক্ষিপ্ত হইয়া ছিল। কেহ কেহ তাহদের সংগ্রহের কবিতাগুলি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এই কবিতাসমষ্টি হইতে সংকলন করিয়া ‘স্মৃলিঙ্গ'র প্রকাশ । লেখন প্রকাশের পূর্বে উহার নাম ‘স্মৃলিঙ্গ থাকিবে এইরূপ ভাবা হইয়াছিল। পরে আলোচ্য সংকলনটির নাম ‘স্মৃলিঙ্গ’ রাখা হয় এবং প্রবেশক-স্বরূপে ‘স্মৃলিঙ্গ তার পাখায় পেল লেখনের এই কবিতাটি গৃহীত হয় । প্রবাসীতে (কার্তিক ১৩৩৫) লেখন গ্ৰন্থ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ যে প্রবন্ধ প্রকাশ করেন স্মৃলিঙ্গর সগোত্র বলিয়াই তাহার অংশ-বিশেষ নীচে মুদ্রিত হইল । (aज2न्म যখন চীনে জাপানে গিয়েছিলেম প্রায় প্রতিদিনই স্বাক্ষরলিপির দাবি মেটাতে হত । কাগজে, রেশমের কাপড়ে, পাখায় অনেক লিখতে হয়েছে। সেখানে তারা আমার বাংলা লেখাই চেয়েছিল, কারণ বাংলাতে এক দিকে আমার, আবার আর-এক দিকে সমস্ত বাঙালি জাতিরই স্বাক্ষর | এমনি করে যখন-তখন পথে-ঘাটে যেখানে-সেখানে দু-চার লাইন কবিতা লেখা আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। এই লেখাতে আমি আনন্দও পেতুম । দু-চারটি বাক্যের মধ্যে এক-একটি ভাবকে নিবিষ্ট করে দিয়ে তার যে একটি বাহুল্যবর্জিত রূপ প্রকাশ পেত তা আমার কাছে বড়ো লেখার চেয়ে অনেক সময় আরো বেশি আদর পেয়েছে। আমার নিজের বিশ্বাস বড়ো বড়ো কবিতা পড়া আমাদের অভ্যাস বলেই কবিতার আয়তন কম হলে তাকে কবিতা বলে উপলব্ধি করতে আমাদের বাধে। অতিভোজনে যারা অভ্যস্ত, জঠরের সমস্ত জায়গাটা বোঝাই না হলে আহারের আনন্দ তাদের অসম্পূর্ণ থাকে ; আহার্যের শ্রেষ্ঠতা তাদের কাছে খাটাে হয়ে যায় আহারের পরিমাণ পরিমিত হওয়াতেই। আমাদের দেশে পাঠকদের মধ্যে আয়তনের উপাসক অনেক আছে- সাহিত্য সম্বন্ধেও তারা বলে, নামে সুখমস্তি- নাট্য-সম্বন্ধেও তারা রাত্রি তিনটে পর্যন্ত অভিনয় দেখার দ্বারা টিকিট কেনার সার্থকতা বিচার করে । জাপানে ছোটো কাব্যের অমর্যাদা একেবারেই নেই। ছোটোর মধ্যে বড়োকে দেখতে পাওয়ার সাধনা তাদের— কেননা তারা জাত-আটস্ট। সৌন্দৰ্য-বস্তুকে তারা গজের মাপে বা সেরের