পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় brS a পারবেন কেন ? তার পর আমি যখনই সুবিধা পেয়েছি বলেছি। এবারেও সুবিধে পেলুম, ছাড়ব কেন, সদুর মুখ দিয়ে কিছু বলিয়ে নিলুম।” -রবীন্দ্রনাথের উক্তি, ১৭ মে ১৯৪১ ৷ শ্ৰীীরানী চন্দ । আলাপচারি রবীন্দ্রনাথ “গুরুদেবকে প্রায়ই বলতে শুনতাম, 'দেখ— একরকম ভালোবাসা আছে যা তুলে ধরে, বড়ো করে। আর একরকম ভালোবাসা আছে, যেটা মারে, চাপা দিয়ে দেয় । আমাদের দেশের মেয়েরা বেশির ভাগ ঐ শেষের ভালোবাসাটাই জানে। তাদের ভালোবাসা দিয়ে তারালতার মতো জড়িয়ে থাকে, পুরুষকে বাড়তে দিতে পারে না ; তা কেন হবে ? এই নিয়ে পর পর কয়েকটি গল্পই লিখলেন তিনি ৷ ‘শেষ কথা’, ‘ল্যাবরেটরি’, সব শেষে রোগশয্যায় পড়েও লিখলেন ‘বদনাম' গল্পটি ।- সন্দুকে নিয়ে বদনাম গল্পটি যে লিখলেন, সে সময়ে ছিল আর-এক ভাব । তখন তিনি রোগশয্যায়, গল্প লিখবেন, নিজে লিখতে পারেন না, একসঙ্গে বেশি ভাবতেও পারেন। না, কষ্ট হয়, কপাল ঘেমে ওঠে । অল্প অল্প করে বলতেন, লিখে নিতাম । কখনও-বাঁ স্নান হচ্ছে র্তার, কি খাচ্ছেন, কি চোখ বুজে বিশ্রাম নিচ্ছেন ; হঠাৎ হঠাৎ ডেকে পাঠাতেন। এক লাইন কি দু লাইন কথা--- বললেন, “লিখে রাখো— মনে পড়ল কথা কয়টা । পরে সদুর মুখে এক জায়গায় জুড়ে দেওয়া যাবে।” —শ্ৰীীরানী চন্দ । গুরুদেব, পৃ: ১২৫ ‘বদনাম' গল্পটির রচনাকাল ভুলক্রমে ১১-২১ জুন মুদ্রিত হইয়াছে । ১১-২১ জুনের পরিবর্তে ১৫- ২২ মে হইবে । প্ৰগতিসংহার : আনন্দবাজার পত্রিকা (শারদীয়া), ৩ আশ্বিন ১৩৪৮ পর্বনাম— কাপুরুষ শেষ পুরস্কার : বিশ্বভারতী পত্রিকা, শ্রাবণ ১৩৪৯ “এটি ঠিক গল্প নয়, গল্পের কাঠামো মাত্র । রবীন্দ্রনাথের শেষ অসুখের সময় এটি কল্পিত হয়েছিল। এটিকে সম্পূর্ণ রূপ দেবার তীর ইচ্ছা ছিল, কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে নি।” --সম্পাদক, বিশ্বভারতী পত্রিকা মুসলমানীর গল্প, ঋতুপত্র, বর্ষা-সংখ্যা, আষাঢ় ১৩৬২ “এই লেখাটি পূর্ণাঙ্গ ছোট গল্প নয়। গল্পের খসড়া মাত্র ।--এটিই তার শেষ গল্পরচনার (58. " —সম্পাদক, ঋতুপত্ৰ শেষ অসুস্থতার সময়েও মুখে মুখে রবীন্দ্রনাথ যে গল্পের প্লট বলিয়া যাইতেন তাহার বিবরণ এই স্থলে সংকলনযোগ্য— “এই দিকে গরম বেড়ে চলেছে, সন্ধ্যার সময় গরমের তাপ কমলে তাকে বারাণ্ডায় বসিয়ে দেওয়া হত । সেই সময় তার মাথায় অনেক কিছু গল্পের প্লট ঘুরত। এবং অনেক রকমের প্লট মুখে-মুখে বলে যেতেন- । এই অসুখের মধ্যেও তার সাহিত্য-জীবনের গতিরোধ হয় নি, সে নিজের আনন্দ-স্রোতে ভেসে চলেছিল, মাঝে-মাঝে রোগের গ্লানির বাধা পড়ত তার গতির মুখে, কিন্তু সে-বাধা ভাসিয়ে দিয়ে র্তার সৃষ্টি চলত। আপন বেগে । সাহিত্যচর্চায় তার বিরাম ছিল না. । একদিন দুপুরে আহারাদির পর ঘুমিয়ে উঠেছেন, আমি পাশের ঘরে ছিলুম, হঠাৎ সুধাকান্ত” এসে আমাকে ডাকলেন, “বউদি, আপনার ডাক পড়েছে।” ঘুম থেকে তখনি উঠেছেন, বেলা তিনটা আন্দাজ হবে, কাছে বসতেই গল্প বলে যেতে লাগলেন-এক টুকরো কাগজ-কলম জোগাড় করে লিখে নিলুম। সেই প্লট থেকে আমূল পরিবর্তিত হয়ে উৎপত্তি হল ‘বদনাম গল্পের । এইরকম করেই খেলার ছলে গল্প ১ সুধাকান্ত রায়চৌধুরী