পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8 by w রবীন্দ্র-রচনাবলী “সৌভাগ্যক্রমে অনেককাল পরে একটা সদৃষ্টান্ত আমাদের হাতের কাছে এসেছে। সেটা সম্বন্ধে আলোচনা করলে আমার কথাটা পরিষ্কার হবে - বাংলাদেশ ম্যালেরিয়ায় মরছে । সে মার কেবল দেহের মাের নয়, এই রোগে সমস্ত দেশটাকে মনমরা করে দিয়েছে । আমাদের মানসিক অবসাদ, চারিত্রিক দৈন্য, অধ্যবসায়ের অভাব এই রোগজীৰ্ণতার ফল । ম্যালেরিয়া থেকে যদি আমরা উদ্ধার পাই তা হলে কেবল যে আমরা সংখ্যা হিসাবে বাড়ব তা নয়, শক্তি হিসাবে বেড়ে উঠব। তখন কেবল যে দুইজনের কাজ একজনে করতে পারব তাও নয়, এমন প্রকৃতির কাজ এমন ধরনে করতে পারব যা এখন পারি নে। অর্থাৎ, কেবল যে কাজের পরিমাণ বাড়বে তা নয়, কাজের উৎকর্ষ বাড়বে। তাতে সমস্ত দেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এ কথা সকলেই জানি, সকলেই মানি- কিন্তু সেইসঙ্গে এতকাল এই কথাই মনে লেগে রয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে ম্যালেরিয়া দূর করে দেওয়া বা এই রোগের হ্রাস করা অসম্ভব। বাংলাদেশ ক্রমে ক্ৰমে নির্মানুষ হতে পারে, কিন্তু নিৰ্মশক হবে কী করে ? অতএব অদৃষ্টে যা আছে তাই হবে । “এমন সময়ে একজন সাহসিক বলে উঠলেন, দেশ থেকে মশা তাড়াবার ভার আমি নিলুম। এত বড়ো কথা বলবার ভরসাকেই তো আমি যথেষ্ট মনে করি । এই গুরু-মানা অবতার-মানা দেশে এত বড়ো বুকের পাটা তো দেখতে পাওয়া যায় না। এক-একটি গ্রাম নিয়ে তিনি কাজ আরম্ভ করেছেন। একটি গ্রামেও যদি তিনি ফল পান তা হলে সমস্ত দেশব্যাপী ব্যাধির মূলে কুঠারাঘাত করা হবে । “এইটুকুমাত্র কাজই তার যথার্থ কাজ, মহৎ কাজ । কোনো একটিমাত্র জায়গায় যদি তিনি দেখিয়ে দিতে পারেন য়ে, বিশেষ উপায়ে রোগের বাহনকে দূর করে দেওয়া যেতে পারে তা शब्लक्षे रुळल ।।” “স্বহস্তে তিনি নিজের চেষ্টায় সমস্ত অলস দেশকে নীরোগ করে দেবেন। এটা কল্যাণকর নয় । দৃষ্টান্ত-দ্বারা তিনি যেটা প্রমাণ করবেন। সেইটেকে দেশ স্বয়ং গ্রহণ করলে তবেই সে উপস্থিত বিপদ থেকে রক্ষা পাবে এবং ভাবী বিপদের বিরুদ্ধে চিরকালের মতো প্ৰস্তুত হবে । নইলে বারে বারে নূতন নূতন ডাক্তার গোপাল চাটুজের জন্যে তাকে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হবে, আর ইতিমধ্যে তার পিলে-যকৃতের সাংঘাতিক উন্নতি-সাধনে সে পৃথিবীর সকল দেশকে ছাড়িয়ে যাবে। “ম্যালেরিয়া যেমন শরীরের, অবুদ্ধি তেমনি মনের একটা বিষম ব্যাধি। এতে মানুষের মূল্য কমিয়ে দেয়। অর্থাৎ গুনতি হিসাবে তার পরিমাণ বাড়লেও গুণের হিসাবে অত্যন্ত কমে যায়। স্বরাজ বলো, সভ্যতা বলো, মানুষের যা-কিছু মূল্যবান ঐশ্বৰ্য সমস্তই এই গুণের হিসেবের উপরেই নির্ভর করে । বালুর পরিমাণ যতই বেশি হােক-না কেন, তাতে মাটির গুণ নেই বলেই ফসল ফলাতে পারে না। ভারতবর্ষের ত্ৰিশ কোটি মানুষের মন পরিমাণ হিসাবে প্রভূত, কিন্তু যোগ্যতা হিসাবে কতই স্বল্প। এই অযোগ্যতার, এই অবুদ্ধির, জগদ্দল পাথরটাকে ভারতবর্ষের মনের উপর থেকে ঠেলে না ফেললে বিধাতা আমাদের কোনো বর দিলেও তা সফল হবে না, এ যদি সত্য হয় তবে আমাদের কোমর বেঁধে বলতেই হবে এই আমাদের কাজ । এ কাজ প্ৰত্যেক কমীকে তার হাতের কাছ থেকেই শুরু করতে হবে। যেখানেই যতটুকই সফলতা লাভ করবেন। সেই সফলতা সমস্ত দেশের । আয়তন থেকে র্যারা সফলতার বিচার করেন তারা ক্ষুন্ন হবেন, সত্যতা থেকে র্যারা বিচার করেন তারা জানেন যে সত্য বামনরপে এসে বলির কাছ থেকে ত্ৰিভুবন অধিকার করে নিতে পারেন।” S BuuSBBDD DDSLBDBBSK cLeqSALtS DBBD SBSSSLDBBSKS DDDSDDS