পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ রবীন্দ্র-রচনাবলী চড়িয়ে তার চেকনাই বের করতে পারি, আগে থাকতেই হাতযশ আছে । জহরতকে দামী করে তোলে জহর পরের ভেগেরই জন্ত, কী বল। স্বৰী, ইনিই ক্ষিতীশবাবু, জান বোধ হয় । h _ স্বৰ্যমা। জানি বইকি। এই সেদিন পড়ছিলুম ওঁর বোকার বুদ্ধি গল্পটা ৷ কাগজে কেন এত গাল দিয়েছে বুঝতে পারলুম না। ক্ষিতীশ । অর্থাৎ বইখানা গাল দেবার যোগ্য এতই কী ভালো । স্বৰ্যমা। ওরকম ধারালো কথা বলবার ভার বঁাশরি আর ঐ আমার পিসতুতো বোন লীলার উপরে। আপনাদের মতো লেখকের বই সমালোচনা করতে ভয় করি, কেননা তাতে সমালোচনা করা হয় নিজেরই বিদ্যে-বুদ্ধির। অনেক কথা বুঝতেই পারি নে। বঁাশরির কল্যাণে আপনাকে কাছে পেয়েছি, দরকার হলে বুঝিয়ে নেব। বঁাশরি। ক্ষিতীশবাবু ন্যাচার্ল হিস্ট্রি লেখেন গল্পের ছাচে । যেখানটা জানা নেই, দগদগে রঙ লেপে দেন মোটা তুলি দিয়ে। রঙের আমদানি সমুদ্রের ওপার থেকে । দেখে দয়া হল। বললুম, জীবজন্তুর সাইকলজির খোজে গুহাগহবরে যেতে যদি খরচে না কুলোয়, অন্তত জুয়োলজিকালের খাচার ফাক দিয়ে উকি মারতে দোষ কী । স্বযমা। তাই বুঝি এনেছ এখানে ? বঁাশরি। পাপমুখে বলব কী করে। তাই তো বটে। ক্ষিতীশবাবুর হাত পাকা, মালমশলাও পাকা হওয়া চাই। যথাসাধ্য জোগাড় দেবার মজুরগিরি করছি। স্বষম। ক্ষিতীশবাবু, একটু অবকাশ করে নিয়ে আমাদের ও দিকে যাবেন। মেয়েরা সদ্য আপনার বই কিনে আনিয়েছে সই নেবে বলে। সাহস করছে না কাছে আসতে। বঁশি, ওঁকে একলা ঘিরে রেখে কেন অভিশাপ কুড়োচ্ছ । বঁাশরি। (উচ্চহাতে ) সেই অভিশাপই তো মেয়েদের বর। সে তুমি জান। জয়যাত্রায় মেয়েদের লুটের মাল প্রতিবেশিনীর ঈর্ষ। স্বষম। ক্ষিতীশবাবু, শেষ দরবার জানিয়ে গেলুম। গণ্ডি পেরোবার স্বাধীনতা যদি থাকে একবার যাবেন ও দিকে / সুষমার প্রস্থান [ /ر ক্ষিতীশ । কী আশ্চর্য ওঁকে দেখতে । বাঙালি ঘরের মেয়ে বলে মনেই হয় না । যেন এখীনা, যেন মিনর্ভা, যেন ক্ৰনহিল্ড । বঁাশরি। (তীব্ৰহাস্তে) হায় রে হায়, যত বড়ো দিগগজ পুরুষই হোক-না কেন সবার মধ্যেই আছে আদিম যুগের বর্বর। হাড়-পাকা রিয়লিস্ট্র বলে দেমাক কর, ভান কর মন্তর মান না। লাগল মন্তর চোখের কটাক্ষে, একদম উড়িয়ে নিয়ে গেল মাইখলজির