পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ' ' & 24 “আগে লেখাটা দেখো, তার পরে দরদস্তুর হবে ।” “কিন্তু, আর-কাউকে দিতে পারবে না বলে রাখছি। যিনি ষত দর স্থাকুন, আমি তার উপরে—” “च्यांछछ्, पञांच्ह, cन श्रद ।” শেষকালটা উঠে যাবার সময় বলে গেলেন, “তোমাদের ইনি— বুঝতে পারছ ? নাম করব না— ঐ যে তোমাদের সাহিত্যধুরন্ধর— মন্ত লেখক বলে বড়াই ; কিন্তু, যা বল তোমার স্টাইলের কাছে তার স্টাইল যেন ডসনের বুট জার তালতলার চাট ।” বুঝলেম, আমাকে উপরে চড়িয়ে দেওয়াটা উপলক্ষমাত্র, তুলনায় ধুরন্ধরকে নাবিয়ে দেওয়াটাই লক্ষ্য । এই গেল আমার ভূমিকা। এইবার আমার কঠোর অভিজ্ঞতার কাহিনী। ‘সন্ধ্যা’ কাগজ যেদিন থেকে পড়তে শুরু, সেইদিন থেকেই আহারবিহার সম্বন্ধে আমার কড়া ভোগ । সেটাকে জেলযাত্রার রিহার্সাল বলা হত। দেহের প্রতি অনাদরের অভ্যাস পাকা হয়ে উঠল। তাই প্রথমবার যখন ঠেললে হাজতে, প্রাণপুরুষ বিচলিত হয় নি। তার পর বেরিয়ে এসে নিজের পরে কারও সেবাশুশ্রীষার হস্তক্ষেপমাত্র বরদাস্ত করি নি। পিসিমা দুঃখবোধ করতেন। তাকে বলতেম, “পিসিমা, স্নেহের মধ্যে মুক্তি, সেবার মধ্যে বন্ধন। তা ছাড়া, একের শরীরে অন্ত শরীরধারীর আইন খাটানোকে বলে ডায়ার্কি, দ্বৈরাজ্য— সেইটের বিরুদ্ধে আমাদের অসহযোগ।” r তিনি নিশ্বাস ছেড়ে বলতেন, “আচ্ছা, বাবা, তোমাকে বিরক্ত করব না ।” নির্বোধ, মনে মনে ভাবতেম বিপদ কাটল । ভুলেছিলেম, স্নেহসেবার একটা প্রচ্ছন্ন রূপ আছে। তার মায়া এড়ানো শক্ত । অকিঞ্চন শিব যখন র্তার ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে দারিদ্র্যগৌরবে মগ্ন তখন খবর পান না যে, লক্ষ্মী কোন এক সময়ে সেট নরম রেশম দিয়ে বুনে রেখেছেন, তার সোনার স্বতোর দামে সুর্যনক্ষত্র বিকিয়ে যায়। যখন ‘ভিক্ষের অন্ন খাচ্ছি’ বলে সন্ন্যাসী নিশ্চিন্ত তখন জানেন না যে, অন্নপূর্ণ এমন মসলায় বানিয়েছেন যে, দেবরাজ প্রসাদ পাবার জন্তে নন্দীর কানে কানে ফিসফিস করতে থাকেন। আমার হল সেই দশ । শয়নে বসনে অশনে পিসিমার সেবার হস্ত গোপনে ইন্দ্ৰজাল বিস্কার করতে লাগল, সেটা দেশাত্মৰোধীর অন্তমনস্ক চোখে পড়ল না । মনে মনে ঠিক দিয়ে বলে আছি, তপস্যা আছে অক্ষুন্ন। চমক ভাঙল জেলখানায় গিয়ে । পিসিমা ও পুলিসের ব্যবস্থার