পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१S९ রবীন্দ্র-রচনাবলী তাদের ছাপ মেরে বস্তাবন্দী করে রাখা কেন । তোমার যদি এতই দয়া থাকে তোমার ঘর নেই নাকি।” যা হোক, মেয়েটি যখন মাখা হেট করে পায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, আমি সংকুচিত অথচ বিগলিতচিত্তে একখানা খবরের কাগজ মুখের সামনে ধরে বিজ্ঞাপনের উপর চোখ বুলিয়ে যেতে লাগলেম। এমন সময় হঠাৎ অকালে অমিয়া ঘরের মধ্যে এসে উপস্থিত ; নবযুগের উপযোগী ভাইফোটার একটা নূতন ব্যাখ্যা সে লিখেছে। সেইটে ইংরেজিতেও সে প্রচার করতে চায় ; আমার কাছে তারই সাহায্য আবশুক। এই লেখাটির ওরিজিন্তাল আইডিয়াতে ভক্তদল খুব বিচলিত— এই নিয়ে তারা একটা ধুমধাম করবে বলে কোমর বেঁধেছে। ঘরে ঢুকেই সেবানিযুক্ত মেয়েটিকে দেখেই অমিয়ার মুখের ভাব অত্যন্ত শক্ত হয়ে উঠল। তার দেশবিশ্রত দাদা যদি একটু ইশারামাত্র করত তা হলে তার সেবা করবার লোকের কি অভাব ছিল। এত মানুষ থাকতে শেষকালে কি এই— থাকতে পারলে না। বললে, “দাদা, হরিমতিকে কি তুমি—” প্রশ্নটা শেষ করতে না দিয়ে ফস করে বলে ফেললেম, “পায়ে বড়ো ব্যথা করছিল।” পুলিস-সার্জেন্টের হাতে একটি মেয়ের অপমান বঁাচাতে গিয়ে জেলখানায় গিয়েছিলেম। আজ এক মেয়ের আক্রোশ থেকে আর-এক মেয়েকে আচ্ছাদন করবার জন্তে মিথ্যে কথা বলে ফেললেম । এবারেও শাস্তি শুরু হল । অমিয়া আমার পায়ের কাছে বসল। হরিমতি তাকে কুষ্ঠিত মৃদুকণ্ঠে কী একটা বললে, সে ঈষৎ মুখ বাকিয়ে জবাবই করলে না । হরিমতি আস্তে আস্তে উঠে চলে গেল। তখন অমিয়া পড়ল আমার পা নিয়ে। বিপদ ঘটল আমার । কেমন করে বলি ‘দরকার নেই, আমার ভালোই লাগে না । এতদিন পর্যন্ত নিজের পায়ের সম্বন্ধে যে স্বায়ত্তশাসন সম্পূর্ণ বজায় রেখেছিলেম, সে আর টেকে না বুঝি 1 । ধড়ফড় করে উঠে বসে বললেম, “অমিয়া, দে তোর লেখাটা, ওটা তৰ্জমা করে ফেলি।” “এখন খাক-না, দাদা। তোমার পা কামড়াচ্ছে, একটু টিপে দিই-না ?” “ন, পা কেন কামড়াবে। হা হা, একটু কামড়াচ্ছে বটে। তা, দেখ, অমি, তোর এই ভাইফোটার আইডিয়াটা ভারি চমৎকার। কী করে তোর মাথায় এল, তাই ভাবি । ঐ যে লিখেছিস বর্তমান যুগে ভাইয়ের ললাট অতি বিরাট, সমস্ত বাংলাদেশে বিস্তৃত, কোনো একটিমাত্র ঘরে তার স্থান হয় না— এটা খুব-একটা বড়ো কথা। দে, wift first of : With the advent of the present age, Brother's