পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কালাস্তুর °像曲 আজকাল জামরা এই একটা বুলি ধরেছি, ঘরে যখন আগুন লেগেছে তখন শিক্ষ+ দীক্ষা সব ফেলে রেখে সর্বাগ্রে আগুম নেবাতে কোমর বেঁধে ট্রাড়ানে চাই, অতএব সকলকেই চরকায় স্থতো কাটতে হবে। আগুন লাগলে আগুন নেবানো চাই এ কথাটা জামার মতো মামুযেৰ কাছেও দুর্বোধ নয় । এর মধ্যে দুঙ্গহ ব্যাপার হচ্ছে কোনটা আগুন সেইটে স্থির করা, তার পরে স্থির করতে হবে কোনটা জল । ছাইটাকেই আমরা যদি আগুন বলি তা হলে ত্রিশ কোটি ভাঙাকুলো লাগিয়েও সে আগুন নেবাতে পারব না । নিজের চরকার স্বতো, নিজের তাতেৱ কাপড় আমরা যে ব্যবহার করতে পারছি নে সেটা আগুন নয়, সেটা ছাইয়ের একটা অংশ অর্থাৎ আগুনের চরম ফল । নিজের তাত চালাতে থাকলেও এ আগুন জলতে থাকবে । বিদেশী আমাদের রাজা এটাও আগুন নয়, এটা ছাই ; বিদেশীকে বিদায় করলেও আগুন জলবে— এমনকি স্বদেশী রাজা হলেও দুঃখদহনের নিবৃত্তি হবে না। এমন নয় যে, হঠাৎ আগুন লেগেছে, হঠাৎ নিবিয়ে ফেলব। হাজার বছরের উর্ধ্বকাল যে আগুন দেশটাকে হাড়ে মাসে জালাচ্ছে, আজ স্বহস্তে স্থতো কেটে কাপড় বুনলেই সে আগুন চু দিনে বশ মানবে এ কথা মেনে নিতে পারি নে। আজ দুশো-বছর আগে চরকা চলেছিল, তাতও বন্ধ হয় নি, সেই সঙ্গে আগুনও দাউ-দাউ করে জলছিল। সেই আগুনের জালানিকাঠটা হচ্ছে ধর্মে কর্মে অবুদ্ধির অন্ধতা । যেখানে বর্বর অবস্থায় মানুষ ছাড়া-ছাড়া হয়ে থাকে সেখানে বনে জঙ্গলে ফলমূল খেয়ে চলে, কিন্তু যেখানে বহু লোকের সমাবেশে সভ্যতার বিচিত্র উদ্যম প্রকাশ পেতে চায় সেখানে ব্যাপক ক্ষেত্র জুড়ে বেশ ভালোরকম করে চাষ করা অত্যাবশ্যক হয়ে ওঠে। সকল বড়ো সভ্যতারই অন্নরূপের আশ্রয় হচ্ছে কৃষিক্ষেত্র। কিন্তু সভ্যতার একটা বুদ্ধিরূপ আছে, সে তো অল্পের চেয়ে বড়ো বই ছোটো নয়। ব্যাপকভাবে সৰ্বসাধারণের মনের ক্ষেত্র কর্ষণ করে বিচিত্র ও বিস্তীর্ণ-ভাবে বুদ্ধিকে ফলিয়ে তুলতে পারলে তবেই সে সভ্যতা মনস্বী হয়। কিন্তু যেখানে অধিকাংশ লোক মূঢ়তায় আৱিষ্ট হম্বে অন্ধসংস্কারের নানা বিভীষিকায় সর্বদা ত্রস্ত হয়ে গুরু-পুরোহিত-গণৎকারের দরজায় অহরহ ছুটোছুটি করে মরছে সেখানে এমন কোনো সর্বজনীন স্বাধীনতামূলক রাষ্ট্রক বা সামাজিক ব্যবস্থাতন্ত্র ঘটতেই পারে না যার সাহায্যে অধিকাংশ মানুষ নিজের অধিকাংশ ৰাষ্য প্রাপ্য পেতে পারে। আজকালকার দিনে আমরা সেই রাষ্ট্রনীতিকেই শ্রেষ্ঠ বলি যার ভিতর দিয়ে সর্বজনের স্বাধীন বুদ্ধি স্বাধীন শক্তি নিজেকে প্রকাশ করবার উপায় পাৱ। কোনো দেশেই আজ পর্যন্ত তাৰ সম্পূর্ণ অাদর্শ দেখি নি। কিন্তু আধুনিক যুরোপে আমেৰিকায় এই আদর্শের অভিমুখে প্রয়াল দেখতে পাই । এই