পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কালান্তর \ely শত্রু নয় ; কাজ সিদ্ধ হব। মাত্র আবার তাড়া খেয়ে তোষাখানার মধ্যে ঢোকে। শূত্রের এই তো বহু যুগের দীক্ষা । তার কাজে স্বার্থও নেই, সন্মানও নেই, আছে কেবল ‘স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ’ এই বাণী । নিধনের অভাব হচ্ছে না ; কিন্তু তার চেয়েও মানুষের বড়ো দুৰ্গতি আছে যখন সে পরের স্বার্থের বাহন হয়ে পরের সর্বনাশ করাকেই অনায়াসে কর্তব্য বলে মনে করে। অতএব এতে আশ্চর্ষের কথা নেই যে, যদি দৈবক্রমে কোনোদিন ব্রিটানিয়া ভারতবর্ষকে হারায় তা হলে নিশ্বাস ফেলে বলবে: I miss my best servant. א-ס\ס\ x বৃহত্তর ভারত বৃহত্তর ভারত পরিষদ -কর্তৃক অনুষ্ঠিত বিদায়সম্বর্ধন উপলক্ষে যবদ্বীপ যাবার পূর্বাহ্নে যে অভিনন্দন আপনার আমাকে দিলেন তাতে আমার মনে বল সঞ্চার করবে। আমরা চার দিকের দাবির দ্বারা আমাদের প্রাণশক্তি আবিষ্কার করি । যার যা দেবার তা বাইরের নেবার ইচ্ছা থেকে আমরা দিতে সক্ষম হই। দাবির আকর্ষণ যদি থাকে তবে আপনি সহজ হয়ে যায় দেওয়ার পথ । বাইরে যেখানে দাবি সত্য হয় অস্তরে সেখানেই দানের শক্তি উদবোধিত হয়ে ওঠে। দানের সামগ্রী আমাদের থাকলেও আমরা দিতে পারি নে সমাজে যতক্ষণ প্রত্যাশা না সজীব হয়ে ওঠে। আজ একটা আকাজক্ষা আমাদের মধ্যে জেগেছে যে আকাঙ্ক্ষা ভারতের বাইরেও ভারতকে বড়ো করে সন্ধান করতে চায় । সেই আকাঙ্ক্ষাই বৃহত্তর ভারতের প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে রূপ গ্রহণ করেছে। সেই আকাঙ্ক্ষাই আপন প্রত্যাশা নিয়ে আমাকে অভিনন্দন করছে। এই প্রত্যাশা আমার চেষ্টাকে সার্থক করুক । বর্বরজাতীয় মামুষের প্রধান লক্ষণ এই যে, তার আত্মবোধ সংকীর্ণসীমাবদ্ধ। তার চৈতম্ভের আলো উপস্থিত কাল ও বর্তমান অবস্থার ঘেরটুকুকেই আলোকিত করে রাখে বলে সে আপনাকে তার চেয়ে বড়ে ক্ষেত্রে জানে না। এইজম্ভেই জ্ঞানে কর্মে সে দুর্বল। সংস্কৃত লোকে বলে : যাদৃশী ভাবনা মস্ত সিদ্ধিৰ্ভবতি তাদৃশী। অর্থাৎ, ভাবনাই_হচ্ছে সাধনার স্বশিক্তির মুলে নিজের সম্বন্ধে, নিজের দেশ সম্বন্ধে বড়ো করে ভাবনা করবার দরকার আছে, নইলে কর্মে জোর পৌছয় না এবং অতি ক্ষীণ জাশ ও অতি ক্ষুদ্র সিদ্ধি নিয়ে অকৃতাৰ্থ হতে হয় । নিজের কাছে নিজের পরিচয়টাকে