পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাহিনী কহিনু নিশ্চয় ।” শুনি নীরব নৃপতি রহিলেন নতশিরে । সভাস্থ সকলে উঠিল ধিক্কার দিয়া উচ্চ কোলাহলে । কৰ্ণে হস্ত রুধি কহে যত বিপ্ৰগণ, “ধিক পাপ এ প্ৰস্তাব !” নৃপতি তখন ক্ষত্ৰিয়ের পণ মিথ্যা হইবে না কভু ।” তখন নারীর আর্ত বিলাপে চৌদিক কঁাদি উঠে, প্ৰজাগণ করে “ধিক ধিক, বিদ্রোহ জাগাতে চায় যত সৈন্যদল ঘূণাভরে । নৃপ শুধু রহিলা অটল । জ্বলিল যজ্ঞের বহ্নি । যিজনসময়ে কেহ নাই, কে আনিবে রাজার তনয়ে অন্তঃপুর হতে বহি । রাজভৃত্য সবে আজ্ঞা মানিল না কেহ । রহিল নীরবে: মস্ত্ৰিগণ । দ্বাররক্ষী মুছে চক্ষুজল, অস্ত্ৰ ফেলি চলি গেল যত সৈন্যদল । আমি ছিন্ন।মোহপাশ, সর্বশাস্ত্ৰজ্ঞানী, হৃদয়বন্ধন সব মিথ্যা ব’লে মানি— প্ৰবেশি নু অন্তঃপুর মাঝে ! মাতৃগণ শত-শাখা-অন্তরালে ফুলের মতন কাতর-উৎকণ্ঠা-ভরে । শিশু মোরে হেরি হাসিতে লাগিল উচ্চে দুই বাহু তুলি । জানাইল অর্ধস্ফুট কাকলি আকুলি— মাতৃব্যুহ ভেদ করে নিয়ে যাও মোরে । বহুক্ষণ বন্দী থাকি খেলাবার তরে ব্যগ্র তার শিশু-হিয়া । কহিলাম হাসি আয় মোর সাথে ।” এত বলি বল করি মাতৃগণ-অঙ্ক হতে লইলাম হরি সহাস্য শিশুরে । পায়ে পড়ি দেবীগণ পথ রুধি আর্তকণ্ঠে করিল ক্ৰন্দনআমি চলে এনু বেগে । বহ্নি উঠে জ্বলি— দাড়ায়ে রয়েছে রাজা পাষাণপুত্তলি । । কম্পিত প্ৰদীপ্ত শিখা হেরি হর্ষভরে বঁপাইতে চাহে শিশু । অন্তঃপুর হতে শতকণ্ঠে উঠে আর্তস্বর। । রাজপথে অভিশাপ উচ্চারিয়া যায় বিপ্ৰগণ নগর ছাড়িয়া । কহিলাম, “ হে রাজন, S S \O