পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কণিকা টুনটুনি কহে, এ যে দেখিতে বেআড়া, দেহ তব যত বড়ো পুচ্ছ তারে বাড়া । আমি দেখো লঘুভারে ফিরি দিনরাত, তোমার পশ্চাতে পুচ্ছ বিষম উৎপাত । ময়ুর কহিল, শোক করিয়ো না মিছে, জেনো ভাই, ভার থাকে গৌরবের পিছে । মহাভারতের মধ্যে ঢুকেছেন কীট, কেটেকুটে ফুড়েছেন এপিঠ-ওপিঠ । পণ্ডিত খুলিয়া দেখি হস্ত হানে শিরে ; বলে, ওরে কীট, তুই এ কী করিলি রে ! হেন খাদ্য কত আছে ধূলির উপরে । কীট বলে, হয়েছে কী, কেন এত রাগ, ওর মধ্যে ছিল কী বা, শুধু কালো দাগ ! আমি যেটা নাহি বুঝি সেটা জানি ছার, আগাগোড়া কেটেকুটে করি ছারখার । যথাকতব্য ছাতা বলে, ধিক ধিক মাথা মহাশয়, এ অন্যায় অবিচার আমারে না। সয় । তুমি যাবে হাটে বাটে দিব্য অকাতরে, রৌদ্র বৃষ্টি যতকিছু সব আমা—“পরে । তুমি যদি ছাতা হতে কী করিতে দাদা ? মাথা কয়, বুঝিতাম। মাথার মর্যাদা, বুঝিতাম। তার গুণে পরিপূর্ণ ধরা, মোর একমাত্ৰ গুণ তারে রক্ষা করা | অসম্পূর্ণ সংবাদ চকোরী ফুকারি কঁাদে, ওগো পূৰ্ণ চাদ, পণ্ডিতের কথা শুনি গনি পরমাদ ! তুমি নাকি একদিন রবে না। ত্ৰিদিবে, মহাপ্ৰলয়ের কালে যাবে নাকি নিবে ! হায় হায় সুধাকর, হায় নিশাপতি, তা হইলে আমাদের কী হইবে গতি । চাদ কহে, পণ্ডিতের ঘরে যাও প্ৰিয়া, তোমার কতটা আয়ু এসো শুধাইয়া । CVS