পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকসাহিত্য Գ ՏՏ কিন্তু দীেতকার্যে যেরূপ নিপুণতা থাকা আবশ্যক হিমালয়ের নিকট তাহা প্রত্যাশা করা যায় না। কৈলাসে কন্যার সহিত অনৰ্থক বাচসা করিয়া তীহার বিপুল স্কুল প্রকৃতির পরিচয় দিলেন। দােষের মধ্যে অভিমানিনী তীকে বলিয়াছিলেন কহ বাবা নিশ্চয়, আর কব পাছে— সত্য করি বলে আমার মা কেমন আছে। তুমি নিঠুর হয়ে কুঠুর মনে পাসরিলা ঝি। শিবনিন্দা করছি কত তার বলব কী ৷ সত্য দােষরোপে ভালোমত উত্তর জোগায় না বলিয়া রাগ বেশি হয়। গিরিরাজ সুযোগ পাইলে শিবনিন্দা করিতে ছাড়েন না ; এ কথার প্রতিবাদ করিতে না পরিয়া রুষ্ট হইয়া বলিয়া উঠিলেন— মা, তুমি বল নিঠুর কুঠুর, শস্তু বলেন শিলা। ছার মেনকার বুদ্ধি শুনে তোমায় নিতে এলাম ॥ ৬ তখন শুনে কথা জগৎমাত কঁাদিয়া অস্থির । , পঢ়া মেঘের বৃষ্টি যেন প’ল এক রীত ৷ নয়নজলে ভেসে চলে, আকুল হল নদীকৈলাসেতে মিলল ঝরা, হল একটি নদী ॥ • কেঁদো নামা, কেঁদো না মাত্রিপুরসুন্দরী। কাল তোমাকে নিয়ে যাব পাষাণের পুরী ৷ সন্দেশ দিয়েছিলেন মেনকারানী, দিলেন দুর্গার হাতে । তুষ্ট হয়ে নারায়ণী ক্ষান্ত পেলেন তাতে ৷ উমাকন শুন বাবা, বোসো পুনর্বার। জলপান করিতে দিলেন নানা উপহার ॥ যত্ন করি মহেশ্বরী রানুন করিলা । শ্বশুর জামাতা দোহে ভোজন করিলা ৷ আপত্তি না করিয়া থাকে, তবে আমাদের বলিবার কোনাে কথাই নাই ; কিন্তু জামাতৃগৃহে সমাগত পিতার সহিত কন্যার মান-অভিমান ও তাহার শান্তি ও পরে আহার-অভ্যর্থনা- এই গৃহচিত্ৰ যেন প্রত্যক্ষের মতো দেখা যাইতেছে। নদীটা এক পাশে দাড়াইয়া ছিল, সে মাঝে হইতে আকুল হইয়া গেল। শ্বশুরজামাতা ভোজনে বসিয়াছেন এবং গৌরী স্বহস্তে রন্ধন করিয়া উভয়কে পরিবেশন করিতেছেন, এ চিত্ৰ মনে গাথা হইয়া রহিল। শয়নকালে দুৰ্গা বলে আজ্ঞা দেহ স্বামী । ইচ্ছা হয় যে বাপের বাড়ি কাল যাইব আমি ৷ শুন গীেরী কৈলাসপুরী তুচ্ছ তোমার ঠাই। দেখছি তোমার কাঙালি পিতার ঘর-দরজা নাই ৷ শেষ দুইটি ছত্ৰ বুঝিতে একটু গােল হয়; ইহার অর্থ এই যে তোমার বাসের পক্ষে কৈলাসপুরীই তুচ্ছ, এমন স্থলে তোমার কাঙািল পিতা তোমাকে স্থান দিতে পারেন এমন সাধ্য র্তাহার কী আছে! পতিকে লইয়া পিতার সহিত বিরোধ করিতে হয়, আবার পিতাকে লইয়া পতির সহিত বিবাদ বাধিয়া উঠে, উমাের এমনি অবস্থা । গীেরী কন, আমি কইলে মিছে। দন্দোজ হবে। সেই- যে আমার কাঙালি পিতা ভিক্ষা মাঙছেন। কবে ৷ তারা রাজার বেটা, দালান-কোঠা অট্টালিকাময়। যাগযজ্ঞ করছে কত শ্মশানবাসী নয় ৷