পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

AVSNR রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী সভাকবি । নটরাজ, মহারানী-মাতার কল্যাণে সেদিন রাজবাড়ি থেকে কিছু ভোজ্যপানীয় সংগ্ৰহ করে নিয়ে আসছিলেম গৃহিণীর ভাণ্ডার-অভিমুখে। মধ্যপথে বাহনটা পড়ল উচাট খেয়ে, ছড়িয়ে পড়ল মোদক মিষ্টান্ন পথের পাকে, গড়িয়ে পড়ল পায়সান্ন ভাঙা হাঁড়ি থেকে নালার মধ্যে। তখন মুষলধারে বর্ষণ হচ্ছে- নৈবেদ্যটা শ্রাবণ স্বয়ং নিয়ে গেলেন ভাসিয়ে । তোমাদের এই প্ৰণামটাও দেখি সেইরকম। খুবই ছড়িয়েছ বটে, কিন্তু পৌঁছল কোথায় ভেবে পাচ্ছি নে। নটরাজ । কবিবর, আমাদের প্রণামের রস তোমার ইড়িভাঙা পয়েসের রস নয়- ওকে নষ্ট করতে পারবে না কোনো পাকের অপদেবতা ; সুরের পাত্রে রইল ও চিরকালের মতো, চিরকালের শ্যামল বঁধুর ভোগে বর্ষে বর্ষে ওর অক্ষয় উৎসৰ্গ । রাজা । কিছু মনে কোরো না। নটরাজ, আমাদের সভাকবি দুঃসহ আধুনিক । ইড়িভাঙা পায়েসের রস পাকে গড়ালে উনি সেটাকে নিয়ে চৌরপঙ্কশতক রচনা করতে পারেন, কিন্তু তৃপ্তি পান না সেই রসে যার সঙ্গে না আছে জঠরের যোগ, না আছে ভাণ্ডারের । তোমার কাজ অসংকোচে করে যাও, NGR Dag (MRVe VSA i নটরাজ। বনমালিনী, এবার তবে বর্ষ্যধারাজানের আমন্ত্রণ ঘোষণা করে দাও নূপুরের ঝংকারে, নৃত্যের হিল্লোলে। চেয়ে দেখো, শ্রাবণ ঘনশ্যামলার সিক্ত বেণীবন্ধন দিগন্তে স্বলিত, তার ছায়াবাসনাঞ্চল প্রসারিত ঐ তমালতালীবন শ্রেণীর শিখরে শিখরে । এসো নীপবনে ছায়াবীথিতলে, za KR | দাও আকুলিয়া ঘন কালো কেশ, পরো দেহ ঘোরি মেঘনীল বেশকাজল নয়নে, ঘূখীমালা গলে, এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে । আজি খনে খনে হাসিখানি সখী, অধরে নয়নে উঠুক চমকি । মল্লারগানে তাৰ মধুঘরে দিক বাণী আনি বনমর্মিরো ঘন বরিষনে জলকলকলে এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে ৷ রাজা । উত্তম । কিন্তু চাফল্য যেন কিছু বেশি, বৰ্ষাঋতু তো বসন্ত নয়। নটরাজ। তা হলে ভিতরে তাকিয়ে দেখুন। সেখানে পুলক জেগেছে, সে পুলক গভীর, সে ඕෂ) { সভাকবি । ঐ তো মুশকিল। ভিতরের দিকে ? ও দিকটাতে বাধা রান্তা নেই তো । নটরাজ। পথ পাওয়া যাৰে সুরের স্রোতে । অন্তরকাশে সজলে হওয়া মুখর হয়ে উঠল। বিরহের দীর্ঘনিশ্বাস উঠেছে সেখানে- কার বিরহ জানা নেই। ওগো গীতরসিক, বিশ্বকোেনার সঙ্গে হৃদয়ের রাগিণীর মিল করে ।