পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪৪

SOO রবীন্দ্র-রচনাবলী GB (KP SK তুমি কে ? । সেটা প্ৰকাশের যোগ্য নয় গোড়া থেকেই, জন্মকাল থেকেই । আমি বিধাতার pe সেই লোক কুকীর্তি, হাতের কাজের যে নমুনা দেখিয়েছেন তাতে উঠার সুনাম হয় নি। se if (NT A a সেই লোক । অর্থাৎ মজা লাগছে। ঐ গুণেই বেঁচে গেছি। প্ৰথম থাকাটা সামলে নিলেই লোকের মজা লাগে । লোক হাসিয়েছি বিন্তয় । পুষ্প । কিন্তু, সব জায়গায় মজা লাগে নি। সেই লোক । খবর পেয়েছ দেখছি ; তা হলে আর লুকিয়ে কী হবে । নাম আমার শ্ৰীমাখনচন্দ্র। বুঝতেই পারছি, যাত্রার দলের সরকারি গোফদাড়ি পরে এসেহি কেন । এ পাড়ায় মুখ দেখাবার সাহস নেই, পিঠ দেখানেই অভ্যোস হয়ে গেছে। পুষ্প । এলে যে বড়ো ? মাখন। চলেছিলুম নাজিরপুরে ইলিশ মাছ ধরার দলে। ইস্টেশনে দেখি বিজ্ঞাপন, হনুমানের দরকার। রইল পড়ে জেলেগিরি। জেলেরা ছাড়তে চায় না, আমাকে ভালোবাসে। আমি বললুম, ভাই, এদের বিজ্ঞাপনের পয়সা বেবাক লোকসান হবে। আমি যদি না যাই- আর দ্বিতীয় মানুষ নেই যার এত বড়ো যোগ্যতা । এ তো আর ত্রেতাযুগ নয় ! পুষ্প ৷ খাওয়াপরার কিছু টানাটানি পড়েছে বুঝি ? মাখন । নিতান্ত অষহত্যু হয় নি । কেবল যখন ধনেশাক দিয়ে ডিমওয়ালা কই মাছের কোলের গন্ধৰ্ম্মতি অন্তরাত্মার মধ্যে পাক খেয়ে ওঠে, তখন আমার শ্ৰীমতী বায়া আর শ্ৰীমতীতবলার তেরেকেটে মেরেকেটে ভিরুকুটি মিরকুটির তালে তালে দূর থেকে মন কেমন ধড় ফড়ি করতে থাকে। পুষ্প । তাই বুঝি ধরা দিতে এসেছ ? মাখন । না না, মনটা এখনো তত দূর পর্যন্ত শক্ত হয় নি। শেষে বিজ্ঞাপনদাতার খবর নিতে এসে যখন দেখলুম, ঠিকানাটা এই আঙিনারই সীমানার মধ্যে তখন প্রথমটা ভাবলুম বিজ্ঞাপনের মান রক্ষা করব, দেব এক লািফ । কিন্তু, রইলুম কেবল মজার লোভে । পণ করলুম শেষ পর্যন্ত দেখতে হবে । দিদি আমার, কেমন সন্দেহ হচ্ছে, কোনো সূত্ৰে বুঝি আমাকে চিনতে, নইলে অমান বিজ্ঞাপন তোমার थ! उड • | পুষ্প । তোমার আঁচিলওয়ালা নাকের খ্যাতি পাড়ার লোকের মুখে মুখে । তোমার বিজ্ঞাপন তোমার নাকের উপর । বিশ্বকর্মর হতে এ নাক দুবার তৈরি হতে পারে না- এইচ তিনি মনের ক্ষোতে (ES GRIMAR মাখন। এই নাকের জোরে একবার বেঁচে গিয়েছি, দিদি । মটুরুগঞ্জে চুরি হল, সন্দেহ করে আমাকে ধরলে চৌকিদার। দারোগা বুদ্ধিমান ; সে বললে, এ লোকটা চুরি করবে। কোন সাহসে- নাকি লুকোবে কোথায় । বুঝেছি দিদি ? আমার এ নাকটাতে ভাড়ামির ব্যাবসা চলে, চোরের ব্যাবসা G(KK3 R | পুষ্প । কিন্তু, তোমার হাতে যে কলার ছড়াটা দেখছি ওটা তো আমার চেনা, কোনো ফিকিরে তোমার জুড়ি-অন্নপূর্ণার ঘর থেকে সরিয়ে নিয়েছে। মাখন। অনেক দিনের পেটের জ্বালায় ওদের ভাড়ারে চুরি পূর্বে থেকেই অভ্যোস আছে। পুষ্প। এত বড়ো কঁদি নিয়ে করবে। কী । হনুমানের পালার তালিম দেবে ? মাখন। সে তো ছেলেবেলা থেকেই দিচ্ছি। পথের মধ্যে দেখলুম এক ব্ৰহ্মচারী বসে আছেন পাকুড়তলায়। আমার বদ অভ্যাস, হাসাতে চেষ্টা করলুম- ঠোঁটের এক কোণও নড়াতে পারলুম না, মন্ত্যর আউড়েই চলল। ভয় হল, বুঝি ব্ৰহ্মদত্যি হবে। কিন্তু, মুখ দেখে বুঝলুম উপাস করতে হতভাগা তিথিবিচার করছে না। ওর পজিতে তিনটে চারটি একাদশী একসঙ্গে জমাট বেঁধে গেছে।