পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R8br রবীন্দ্র-রচনাবলী দেখব। শ্ৰদ্ধা করে করে বেড়াবা ? মািল যাচাই নেই, একেবারে wholesale প্ৰদ্ধা ? একে বলে protection, ব্যাবসাদারিতে বাইরে থেকে কৃত্রিম মাসুল চাপিয়ে দর-বাড়ানো।” “মিথ্যে তর্ক কোরো না ।” “অৰ্থাৎ তুমি তর্ক করবে, আমি করব না। একেই বলে, “দিন ভয়ংকর, মেয়েরা বাক্য কবে কিন্তু পুরুষরা রবে নিরুত্তর ” । “অভী, তুমি কেবলই কথা কাটাকাটি করবার অছিলা খুঁজছি। বেশ জন আমি বলতে চাইছিলুম, মেয়েদের থেকে স্বভাবত একটা দূরত্ব বঁচিয়ে চলাই পুরুষের পক্ষে ভদ্রতা।” “স্বভাবত দূরত্ব বাচানো, না অস্বভাবত ? আমরা মডার্ন, মেকি ভদ্রতা মানি নে, খাটি স্বভাবকে BDSS DDBDB TLLB DBD DDDBDBDBSBDB DBD DBSBDBB DDB SBDB পাশাপাশিটাই। ভদ্রতার খাতিরে মাঝখানে দেড়হাত৷ জায়গা রাখলে অশ্রদ্ধ করা হত স্বভাবকে ৷” “অভী, তোমরা নিজের থেকে মেয়েদের বিশেষ মূল্য দিয়ে দামী করে তুলেছিলে, তাদের খেলো করনি নিজের গরজেই। সেই দাম আজ যদি ফিরিয়ে নাও নিজের খুশিকেই করবে সন্তা, ফাকি দেবে। নিজের পাওনাকেই । কিন্তু মিথ্যে বকছি, মডার্ন কালটাই খেলো ।” অভীক জবাব দিলে, “খেলো বলব না, বলব বেহায় । সেকালের বুড়োশিব চোখ বুজে বসেছেন ধ্যানে, একালের নদীভূজী আয়না। হাতে নিয়ে নিজেদের চেহারাকে ব্যঙ্গ করছে- যাকে বলে debunking। জন্মেছি একালে, বোমভোলানাথের চেলা হয়ে কপালে চোখ তুলে বসে থাকতে পারব না ; নদীভূঙ্গীর বিদঘুটে মুখভঙ্গির নকল করতে পারলে আজকের দিনে নাম হবে।” “আচ্ছা আচ্ছা, যাও নাম করতে দশ দিককে মুখ ভোঙচিয়ে । কিন্তু তার আগে আমাকে একটা কথা সত্যি করে বলে, তোমার কাছে আশকার পেয়ে রাজ্যের যত মেয়ে তোমাকে নিয়ে এই যে টানাটানি করে এতে কি তোমার ভালোলাগার ধার ভেঁাতা হয়ে যায় না । তোমরা কথায় কথায় যাকে বল thrill, ঠেলা ঠেলিতে তাকে কি পায়ের নীচে দলে ফেলা হয় না।” “সত্যি কথাই বলি। তবে, বী, যাকে বলে thrill, যাকে বলে ecistasy. সে হল পয়লা নম্বরের জিনিস, ভাগ্যে দৈবাৎ মেলে। কিন্তু তুমি যাকে বলছ ভিড়ের মধ্যে টানাটানি, সে হল সেকেন্ডহ্যান্ড দোকানের মাল, কোথাও বা দাগী, কোথাও বা ছেড়া, কিন্তু বাজারে সেও বিকোয়, অল্প দামে । সেরা জিনিসের পুরো দাম দিতে পারে ক'জন ধনী ?” “তুমি পার অভী, নিশ্চয় পাের, পুরো মূল্য আছে তোমার হাতে। কিন্তু অদ্ভুত তোমার স্বভাব, ছেঁড়া জিনিসে, ময়লা জিনিসে তোমাদের আটিস্টের একটা কৌতুক আছে, কৌতুহল আছে। সুসম্পূর্ণ জিনিস তোমাদের কাছে picturesque নয় । থাক গে। এ সব বৃথা তর্ক। আপাতত ক্রাইসলারের পালটা যতদূর সম্ভব এগিয়ে দেওয়া যাক ৷” এই বলে চৌকি ছেড়ে বিভা পাশের ঘরে চলে গেল। ফিরে এসে অভীকের হাতে একতাড়া নোট দিয়ে বললে, “এই নাও তোমার ইনসপিরেশন, কোম্পানিবাহাদুরের মার্কামারা । কিন্তু তাই বলে তোমার ঐ ঘড়ি আমাকে নিতে বোলো না।” চৌকিতে মাথা রেখে অভীক মেঝের উপরে বসে রইল। বিভা দ্রুত পদে তার হাত টেনে নিয়ে বললে, “আমাকে ভুল বুঝে না । তোমার অভাব ঘটেছে। আমার অভাব নেই এমন সুযোগে-” বিভাকে থামিয়ে দিয়ে অতীক বললে, “অভাব আছে আমার, দারুণ অভাব । তোমার হাতেই রয়েছে সুযোগ, তা পূরণ করবার। কী হবে টাকায় ।” বিভা অতীকের হাতের উপরে জিপ্তভাবে হাত বুলোতে বুলোতে বললে, “যা পারি। নে তার দুঃখ রইল আমার মনে চিরদিন । যতটুকু পারি। তার সুখ থেকে কেন, আমাকে বঞ্চিত করবে।” “নানা না, কিছুতেই না । তোমারই কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে শীলাকে আমি গাড়ি চড়িয়ে বেড়াবা ? এ প্রস্তাবে ধিকার দেবে এই ভেবেছিলুম, রাগ করবে। এই ছিল আশা ।” “রাগ করব কেন। তোমার দুটুিমি কতক্ষণের। এটা সাংঘাতিক শীলার পক্ষে, তোমার পক্ষে