পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छिन्न न S(E আমার কথাটা এখন থাক, অন্য-এক সময় হবে। অমরবাবুর সফলতায় ঈর্ষা করে এমন খুদে লোক বাংলাদেশে অনেক আছে। এ দেশের মানুষরা বড়োলোকের মড়ক । কিন্তু দোহাই তোমার, আমাকে সেই বামনদের দলে ফেলো না । শোনো আমি কত বড়ো একটা ক্রিমিনাল পুণ্যকর্ম করেছি।- দুর্গাপূজার চাদার টাকা আমার হাতে ছিল। সে টাকা দিয়ে দিয়েছি অমরবাবুর বিলেত যাত্রার কন্ডে। দিয়েছি কাউকে না বলে। যখন ফ্ৰাস হবে, জীববলি খোজবার জন্যে মায়ের ভক্তদের বাজারে দৌড়তে হবে না। আমি নতিক, আমি বুঝি সত্যকার পূজা কাকে বলে। ওরা ধর্মপ্রাণ, ওরা কী বুঝবে ।” “এ কী কাজ করলে অতীক । তুমি যাকে বল তোমার পবিত্র নাস্তিকধর্ম এ কাজ কি তার যোগ্য, এ যে বিশ্বাসঘাতকতা ।” “মানি। কিন্তু আমার ধর্মের ভিত কিসে দুর্বল ক’রে দিয়েছিল তা বলি। খুব ধুম করে পূজা দেবে বলে আমার চেলারা কোমর বেঁধেছিল। কিন্তু চাদার যে সামান্য টাকা উঠল। সে যেমন হাস্যকর তেমন শোকাবহ । তাতে ভোগের পাঠাদের মধ্যে বিয়োগান্ত নাট্য জমত না, পঞ্চমাঙ্কের লাল রঙটা হত। ফিকে । আমার তাতে আপত্তি ছিল না। স্থির করেছিলেম নিজেরাই কাঠি হাতে ঢাকে ঢোলে বেতালা চাটি লাগবে অসহ্য উৎসাহে। আর লাউকুমড়ের বক্ষ বিদীর্ণ করব স্বহন্তে খড়গাঘাতে । নাক্তিকের পক্ষে এই যথেষ্ট, কিন্তু ধর্মপ্রাগের পক্ষে নয়। কখন সন্ধাবেলায় আমাকে না জানিয়ে ওদের একজন সাজিল সাধুবাবা, পাঁচজন সাজল চেলা, কোনো একজন ধনী বিধবা বুড়িকে গিয়ে রেললে, তার যে ছেলে রেঙ্গুনে কাজ করে, জগদম্বা স্বল্প দিয়েছেন, যথেষ্ট পাঠা আর পুরোবহরের পুজো না পেলে মা তাকে আন্ত খাবেন । তার কাছ থেকে কু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পাঁচ হাজার টাকা বের করেছে। যেদিন শুনলুম, সেইদিনই টাকাটার সৎকার করেছি। তাতে আমার জাত গেল। কিন্তু টাকাটার কলঙ্ক ঘুচিল। এই তোমাকে করলুম। আমার কনফেশনাল। পাপ কবুল করে পাপক্ষালন করে নেওয়া গেল। পাচ হাজার টাকার বাইরে আছে উনত্রিশটি মাত্র টাকা । সে রেখেছি কুমড়োর বাজারের দেনাশোধের জন্য ।” সুন্মি এসে বললে, “বাজু, বেহারিার ত্বর বেড়েছে, সঙ্গে সঙ্গে কাশি, ডাক্তারবাবু কী লিখে দিয়ে In, Q we 'G' " বিভার হাত চেপে ধরে অভীক বললে, “বিশ্বহিতৈষিণী, রোগতাপের তদবির করতে দিনরাত ব্যন্ত আছ, আর যে-সব হতভাগার শরীর অতি বিশ্ৰী রকমে সুন্থ তাদের মনে করবার সময় পাও না ।” “বিশ্বহিত নয় গো, কোনো একজন অতি সুন্থ। হতভাগাকে ভুলে থাকবার জন্যেই এত করে কাজ বানাতে হয়। এখন ছাড়ো, আমি যাই, তুমি একটু বোসো, আমার গয়না সামলিয়ে রেখো।”

  • আর আমার লোভ কে সমলবে ।”

“NON: Ass lo কিছুকাল দেখা নেই অতীকের। চিঠিপত্র কিছু পাওয়া যায়নি। বিভার মুখ শুকিয়ে গেছে। কোনো কাজ করতে মন যাচ্ছে না। তার ভাবনাগুলো গেছে ঘুলিয়ে। কী হয়েছে, কী হতে পারে, তার ঠিক পাচ্ছে না। দিনগুলো যাচ্ছে*াজার-ভেঙে দেওয়া বোঝার মতন । ওর কেবলই মনে হচ্ছে, অতীক ওর উপরেই অভিমান করে চলে গেছে। ও ঘরছাড়া ছেলে, ওর বাধীন নেই, উধাও হয়ে চলে গেল ; ও ইয়তো আর ফিরবে না । ওর মন কেবলই বলতে লাগল, “রাগ কোরো না, ফিরে এসো, আমি তোমাকে আর দুঃখ দেব না। অতীকের সমন্ত ছেলেমানুবি, ওর অবিবেচনা, ওর আবদার, যতই মনে ছিল লাগল তাই জল পড়তে লাগল ও দুই চক্ষু বেয়ে কেবলই নিজেকে পাবলী বলে কিকার এমন সময়ে এল চিঠি স্টীমারের ছাপমারা । অতীক লিখেছেআইজের সেন্টাকার হয়ে চলেছি বিলোতে । এজিনে কয়লা জোগাতে হবে । বলছি বটে ভাবনা