পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVso ब्रौश-ब्रभावी করে। ইদানীং মাঝে মাঝে স্পষ্ট চোখাচে্যুখি হয়েছে - যতদূর আমার বিশ্বাস, সেটাতে চার চোখের অপঘাত বলে ওর মনে হয় নি । এর চেয়েও বিশেষ একটা পরীক্ষা হয়ে গেছে। এর আগে দিনের বেলায় মাটি-পাথরের কাজ সঙ্গ করে দিনের শেবে ঐ পঞ্চবটীর পথ দিয়ে একবারমাত্র যেতেম বাসার দিকে । সম্প্রতি যাতায়াতের পুনরাবৃত্তি হতে আরম্ভ হয়েছে। এই ঘটনােটা যে জিয়লজি সম্পর্কিত নয়, সে কথা বোঝাবার মতো বয়স হয়েছে অচিন্নার, আমারও সাহস ক্রমশ বেড়ে চলল। যখন দেখলুম, এই সুস্পষ্ট ভাবের আভাসেও তরুণীকে স্থানচ্যুত করতে পারল না। এক-একদিন হঠাৎ পিছন ফিরে দেখেছি, অচিরা আমার তিরোগমনের দিকে চেয়ে আছে, আমি ফিরতেই তাড়াতাড়ি ডায়ারির দিকে চোখ নামিয়ে নিয়েছে। সন্দেহ হল, ওর ডায়ারি লেখার ধারায় আগেকার মতো বেগ নেই। আমার বিজ্ঞানী বুদ্ধিতে মনোরহস্যের আলোচনা জেগে উঠল। বুঝেছি সে কোনো এক পুরুষের জন্যে তপস্যার ব্ৰত নিয়েছে, তার নাম ভাবতোষ, সে ছাপরায় আসিস্টেন্ট ম্যাজেটি করছে বিলেত থেকে ফিরে এসেই । তার পূর্বে দেশে থাকতে এদের দুজনের প্রণয় ছিল গভীর, কােজ নেবার মুখেই একটা আকস্মিক বিপ্লব ঘটেছে। ব্যাপারটা কী, খবর নিতে হবে । শক্ত হল না, কেননা পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কেমব্রিজের সতীৰ্থ আছে বঙ্কিম । ডাকে চিঠি লিখে পাঠালুম, “বোেহর সিভিল সার্ভিসে আছে। তবতোষ । কন্যাকর্তাদের মহলে জনশ্রুতি শোনা যায়, লোকটিস্যুৎপাত্র। আমার কোনো বন্ধু আমাকে তার মেয়ের জন্যে ঐ লোকটিকে প্ৰজাপতিক ফঁাদে ফেলতে সাহায্য করতে অনুরোধ করেছেন। রান্ত পরিষ্কার আছ কি না, আদ্যন্ত খবর নিয়ে তুমি যদি আমাকে জানাও, কৃতজ্ঞ হব। লোকটির মতিগতি কী রকম তাও জানতে চাই।' উত্তর এল, রান্ত বন্ধ। আর মতিগতি সম্বন্ধে এখনো যদি কৌতুহল বাকি থাকে, তবে শোনো।-- ‘কলেজে পড়বার সময় আমি ছাত্র ছিলুম ডাক্তার অনিলকুমার সরকারের- অ্যালফাবেটর অনেকগুলি অক্ষর জোড়া তার নাম। যেমন তার অসাধারণ পাণ্ডিত্য, তেমনি ছেলেমানুষের মতো ষ্ঠার সরলতা। একমাত্র সংসারের আলো তার নাতনিটিকে যদি দেখো, তা হলে মনে হবে সাধনায় খুশি হয়ে সরস্বতী কেবল যে আবির্ভূত হয়েছেন তার বুজিলোকে তা নয়, রূপ নিয়ে এসেছেন তার কোলে। ঐ শয়তান ভাবতোষ ঢুকাল ওঁর স্বৰ্গলোকে । বুদ্ধি তার তীক্ষ, বচন তার অনর্গল । প্ৰথমে ভুললেন অধ্যাপক, তার পরে ভুলল তার নাতনি। ওদের অসহ্য অন্তরঙ্গতা দেখে আমাদের হাত নিসপিস করত। কিছু বলবার পথ ছিল না, বিবাহসম্বন্ধ পাকাপার্কি স্থির হয়ে গিয়েছিল, কেবল অপেক্ষা ছিল বিলেত গিয়ে সিভিল সার্ভিসে উত্তীর্ণ হয়ে আসার । তার পাথেয়। আর খরচ জুগিয়েছেন অধ্যাপক। লোকটার সন্দির ধাত ছিল। বধির ভগবানের কাছে আমরা দুবেল প্রার্থনা করেছি, বিবাহের পূর্বে লোকটা যেন নুমোনিয়া হয়ে মরে। কিন্তু মরে নি। পাস করেছে। করেই ইন্ডিয়া গর্বমেন্টের উচ্চপদস্থ একজন মুরুবিধার মেয়েকে বিয়ে করেছে। লাজায় ক্ষোভে নিজেয় কাজ ছেড়ে দিয়ে মর্মাহত মেয়েটিকে নিয়ে অধ্যাপক কোথায় যে অন্তর্ধন করেছেন, তার খবর রেখে যান নি।” চিঠিখানা পড়লুম ! দৃঢ় সংকল্প কয়লুম, এই মেয়েটিকে তার লেজ থেকে অবসাদ থেকে উদ্ধার ইতিমধ্যে অচিরার সঙ্গে কোনোরকম করে একটা কথা আরম্ভ করবার জন্যে মন হুটুকটু করতে লাগল। যদি বিজ্ঞানী না হয়ে হতুমি সাহিত্যরসিক, কিংবা বাঙািল না হয়ে যদি হুদুম পশ্চিমবঙ্গের আধুনিক, তা হলে নিশ্চয় মুখে কথা বাধত না । কিন্তু বাঙালি মেয়েকে ভয় করি, চিনি নে বলে বোধ হয়। একটা ধারণা ছিল, হিন্দুনী অজানা পরপুরুষমাত্রের কাছে একান্তই অনধিগম্য। খামাক কথা কইতে যাই যদি, তা হলে ওর রক্তে লাগবে অশুচিতা। সংস্কায় জিনিসটা এমনি অন্ধ। এখানে কাজে যোগ দেবার পূর্বে কিছুদিন তো কলকাতায় কাটিয়ে এসেছি- আমীয়বন্ধুমহলে দেখে এলুম সিনেমািমকপথবিভিনীয়তমাখানো বাঙালি মেয়ে, যারা জাভবান্ধবী, তাদের- খাৰু তাদের কথা । কিন্তু অচিরায় কোনো পরিচয় না পেয়েই মনে হল, ও আর-এক জাতেন্ন- এ কালের বাইয়ে আছে।