टिन नौ SRV) দুল মাদ্রািলয়, স্পষ্ট মেেয়। আন আন কেবলই ভাবছি, প্রথম একটি কথা শুরু করব কী করে । এই সময়ে কাছাকাছি দুই-একটা ডাকাতি হয়ে গিয়েছিল। মনে হল এই উপলক্ষে অচিরাকে বলি, ‘রাজাকে বলে আপনার জন্যে পাহারার বন্দোবন্ত করে দিই৷ ” ইংরেজ মেয়ে হলে হয়তো এই গায়েপড়া আনুকূল্যকে স্পৰ্থ মনে করত, মাথা বঁকিয়ে বলত, “সে ভাবনা আমার ; কিন্তু এই বাঙালির মেয়ে যে কী ভাবে কথাটা নেবে, আমার সে অভিজ্ঞতা নেই। দীর্ঘকাল বাংলার বাইরে থেকে আমার মনের অভ্যাস অনেকখানি জড়িয়ে গেছে বিলিতি সংস্কারে । দিনের আলো প্ৰায় শেষ হয়ে এসেছে। এইবার অচিরার ঘরে ফেরবার সময়, কিংবা ওর দাদামশায় এসে ওকে বেড়াতে নিয়ে যাবেন । এমন সময়ে একজন হিন্দুস্থানী গোয়ার এসে অচিরার হাত থেকে হঠাৎ তার ব্যাগ আর ডায়ারিটা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিল, আমি সেই মুহুর্তেই বনের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে বললুম, “কোনো ভয় নেই আপনার ”- এই বলে দুটে সেই লোকটার ঘাড়ের উপর গিয়ে বঁাপিয়ে পড়তেই সে ব্যাগ আর খাতা ফেলে দৌড় মারলে । আমি লুঠের ধন নিয়ে এসে অচিরাকে দিলুম। অচিরা বললে, “ভাগ্যিস আপনি--” আমি বললুম, “আমার কথা বলবেন না, ভাগ্যিস ও লোকটা এসেছিল।” “তার মানে ?” “তার মানে, ওরই সাহায্যে আপনার সঙ্গে প্রথম কথাটা হয়ে গেল। এতদিন কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলুম না, কী যে বলি।” “কিন্তু ও যে ডাকাত ।” “না, ও ডাকত নয়, ও আমার বীরকন্দাজ ।” অচিরা মুখে তার খয়েরী রঙের আঁচল তুলে ধরে খিলখিল করে হেসে উঠল। কী মিষ্টি তার ধ্বনি, যেন ঝরনার স্রোতে নুড়ির সুরওয়ালা শব্দ । হাসি থামতেই বললে, “কিন্তু সত্যি হলে খুব মজা হত ।” “মজা হত। কার পক্ষে ।” “যাকে নিয়ে ডাকাতি তার পক্ষে'। এই রকম যে একটা গল্প পড়েছি।” “তার পরে উদ্ধারকর্তার কী হত ।” “তাকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে চা খাইয়ে দিতুম ।” “আর এই বঁফাকি উদ্ধারকর্তার কী হবে ।” "তার তো আর-কিছুতে দরকার নেই। সে তো আলাপ করবার প্রথম কথাটা চেয়েছিলপেয়েছে দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম কথা।” "গণিতের সংখ্যাগুলো হঠাৎ ফুরোবে না তো ।” "कन यूलाल ।"
- আচ্ছা, আপনি হলে আমাকে প্রথম কথাটা কী বলতেন।”
"আমি হলে বলতুম, রাস্তায় ঘাটে কতকগুলো নুড়ি কুড়িয়ে কী ছেলেমানুযি করছেন। আপনার কি বয়স হয় নি।” “কোন বলেন নি ।” “ভয় করেছিল ।” "ভয় ? আমাকে ভয় ?” "আপনি যে বড়ো লোক। দাদুর কাছে শুনেছি। তিনি যে আপনার লেখা প্ৰবন্ধ বিলিতি কাগজে পড়েছিলেন। তিনি যা পড়েন আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করেন ।” "এটাও করেছিলেন ?”
