পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ठिनता नौ VOYʻG আমার গতি কী হবে । আমার গতি তুমি । আর আমাকে ছাড়লে তোমার কী গতি জানই তো । এখন যে তোমার পনেরোই আখিনে পনেরোই অক্টোবরে এক হয়ে যায়, নিজের নূতন ছাতার সঙ্গে পরের পুরোনো ছাতার স্বত্বাধিকারে ভেদজ্ঞান থাকে না, গাড়ি চড়ে ড্রাইভারকে এমন ঠিকানা বাতলিয়ে দাও সেই ঠিকানায় আজ পর্যন্ত কোনো বাড়ি তৈরি হয় নি, আর চাকরের ঘুম ভাঙবার ভয়ে সাবধানে পা টিপে টিপে কালতলায় নিজে গিয়ে কুঁজোয় জল ভরে নিয়ে আস।” অধ্যাপক আমার দিকে চেয়ে বললেন, “কী তুমি বল, নবীন।” কী জানি ওঁর হয়তো মনে হয়েছিল। ওঁদের এই পারিবারিক প্রস্তাবে আমার ভোটেরও একটা মূল্য আছে | আমি খানিকক্ষণ চুপ করে রইলুম, তার পরে বললুম, “অচিরাদেবীর চেয়ে সত্য পরামর্শ আপনাকে কেউ দিতে পারবে না ।” অচিরা তখনই উঠে দাঁড়িয়ে পা ছুঁয়ে আমাকে প্ৰণাম করলে। বোধ হল যেন চোখ থেকে জল পড়ল আমার পায়ে । আমি সংকুচিত হয়ে পিছু হটে গেলুম। অচিরা বললে, “সংকোচ করবেন না। আপনার তুলনায় আমি কিছুই নই। সে কথা নিশ্চয় জানবেন । এই কিন্তু শেষ বিদায়, যাবার আগে আর দেখা হবে না ।” অধ্যাপক বিস্মিত হয়ে বললেন, “সে কী কথা, দিদি ।” অচিরা বাষ্পগদগদ কণ্ঠ সামলিয়ে হেসে বললে, “দাদু, তুমি অনেক-কিছু জান, কিন্তু আরো-কিছু সম্বন্ধে আমার বুদ্ধি তোমার চেয়ে অনেক বেশি, এ কথা মেনে নিয়ো ।” এই বলে চলতে উদ্যত হল। আবার ফিরে এসে বললে, “আমাকে ভুল বুঝবেন না- আজি আমার তীব্র আনন্দ হচ্ছে যে আপনাকে মুক্তি দিলুম- তার থেকে আমারও মুক্তি । আমার চোখ দিয়ে জল পড়ছে- লুকোব না, জল আরো পড়বে। নারীর চোখের জল তারই সম্মানে যিনি সব বন্ধন কাটিয়ে জয়যাত্রায় বেরিয়েছেন।” দ্রুতপদে অচিরা চলে গেল । আমি পদধূলি নিয়ে প্ৰণাম করলুম অধ্যাপককে । তিনি আমাকে বুকে চেপে ধরে বললেন, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। তোমার সামনে কীর্তির পথ প্রশস্ত ।” ছোটাে গল্প ফুরল। পরোকার কথাটা খনি-খোড়ার ব্যাপার নিয়ে। তারও পরে আরো বাকি আছে- সে ইতিহাস নিরতিশয় একলার অভিযান, জনতার মাঝখান দিয়ে দুৰ্গম পথে রুদ্ধ দুর্গের দ্বার-অভিমুখে । , বাড়ি ফিরে গিয়ে যত আমার প্ল্যান আর নোট আর রেকর্ড উলটে পালটে নাড়াচাড়া করলুম। দেখলুম, সামনে দিগন্তবিস্তৃত কাজের ক্ষেত্র তাতেই আমার বৃহৎ ছুটি । সন্ধেবেলায় বারান্দায় এসে বসলুম। খাচা ভেঙে গেছে। পাখির পায়ে আটকে রইল ছিন্ন শিকল । সেটা নড়তে চড়তে পায়ে বাজবে । 8 SOOS