পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা OOS আমি বললেম, “আমার আর তো সব জীৰ্ণ হয়ে গেল, কিন্তু তোমার গলায় আমার সেই পঁচিশ বছরের যৌবন আজও তো স্নান হয় নি।” আন্তে আন্তে সেই মালাটি নিয়ে সে আমার গলায় পরিয়ে দিলে। বললে, “মনে আছে ? সেদিন বলেছিলে, তুমি সত্ত্বনা চাও না, তুমি শোককেই চাও।” লজ্জিত হয়ে বললেম, “বলেছিলেম। কিন্তু, তার পরে অনেক দিন হয়ে গেল, তার পরে কখন ভুলে গেলেম ।” সে বললে, “যে অন্তর্যামীর বর, তিনি তো ভোলেননি। আমি সেই অবধি ছায়াতলে গোপনে বসে আছি । আমাকে বরণ করে নাও ।” আমি আর হাতখনি আমার হাতে তুলে নিয়ে বললেম, “এ কী তোমার অপরাপ মূর্তি।” সে বললে, “যা ছিল শোক, আজ তাই হয়েছে শান্তি ।” उाव: S७२७ 3 শ্মশান হতে বাপ ফিরে এল । তখন সাত বছরের ছেলেটি- গা খোলা, গলায় সোনার তাবিজ- একলা গলির উপরকার ଐକାହିଁ । ୪୦ । কী ভাবছে তা সে আপনি জানে না । সকালের রৌদ্র সামনের বাড়ির নিম গাছটির আগডালে দেখা দিয়েছে ; কঁচা আমওয়ালা গলির মধ্যে এসে ইয়াক দিয়ে দিয়ে ফিরে গেল । বাবা এসে খোকাকে কোলে নিলে ; খোকা জিজ্ঞাসা করলে, “মা কোথায় ।” বাবা উপরের দিকে মাথা তুলে বললে, “স্বৰ্গে।” R সে রাত্রে শোকে শ্ৰান্ত বাপ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ক্ষণে ক্ষণে গুমরে উঠছে। । দুয়ারে লন্ঠনের মিটমিটে আলো, দেয়ালের গায়ে একজোড়া টিকটিকি । সামনে খোলা ছাদ, কখন খোকা সেইখানে এসে দাঁড়াল । চারিদিকে আলো-নেবানো বাড়িগুলো যেন দৈত্যপুরীর পাহারাওয়ালা, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছে। উলঙ্গ গায়ে খোকা আকাশের দিকে তাকিয়ে। 曙 তার দিশহারা মন কাকে জিজ্ঞাসা করছে, “কোথায় স্বর্গের রাস্তা।” আকাশে তার কোনো সাড়া নেই ; কেবল তারায় তারায় বোবা অন্ধকারের চোখের জল । चनि »७२७ SSS