পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○。 রবীন্দ্র-রচনাবলী আশ্চর্য করে দিলে। মামা এক সময়ে বসবার ঘরে এসে দেখে, ছেলেটি ভারি ব্যন্ত । “কী কানাই, কী করছিস ।” ভায়ে খুব আগ্রহ করেই দেখালে সে কী করছে। কেবল তিনটিমাত্র বই নয়, অন্তত পঁচিশখন বইয়ে ছাপার অক্ষরে কানাইয়ের নাম । এ কী কাণ্ড। পড়াশুনোর নাম নেই, ছোড়াটার কেবল খেলা। আর, এ কী রকম খেলা। কানাইয়ের বহু দুঃখে জোটানো নামের অক্ষরগুলি হাত থেকে সে ছিনিয়ে নিলে । কানাই শোকে চীৎকার করে কাদে, তার পরে যুঁপিয়ে যুঁপিয়ে কঁাদে, তার পরে থেকে থেকে দমকায় দমকায় কেঁদে ওঠে- কিছুতেই সত্ত্বনা মানে না । বুড়ি ঝি ছুটে এসে জিজ্ঞেস করলে, “কী হয়েছে, বাবা।” কানাই বললে, “আমার নাম ।” মা এসে বললে, “কী রে কানাই, কী হয়েছে।” কানাই। রুদ্ধকণ্ঠে বললে, “আমার নাম ।” ঝি লুকিয়ে তার হাতে আন্ত একটি ক্ষীরপুলি এনে দিলে ; মাটিতে ফেলে দিয়ে সে বললে, “আমার ୍ୟ ।” মা এসে বললে, “কানাই, এই নে তোর সেই রেলগাড়িটা।” কানাই রেলগাড়ি ঠেলে ফেলে বললে, “আমার নাম।” থিয়েটার থেকে বন্ধু এল । মামা দরজার কাছে ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে, “কী হ’ল।” বন্ধু বললে, “ওরা রাজি হল না৷ ” অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে মামা বললে, “আমার সর্বস্ব যায় সেও ভালো, আমি নিজে থিয়েটার খুলিব ।” বন্ধু বললে, “আজ ফুটবল ম্যাচ দেখতে যাবে না ?” ও বললে, “না, আমার জ্বরভাব ।” বিকেলে মা এসে বললে, “খাবার ঠাণ্ডা হয়ে গেল।” ও বললে, “খিদে নেই।” সন্ধের সময় স্ত্রী এসে বললে, “তোমার সেই নতুন লেখাটা শোনাবে না ?” ও বললে, “মাথা ধরেছে।” ভাগ্নে এসে বললে, “আমার নাম ফিরিয়ে দাও।” মামা ঠাস করে তার গালে এক চড় কবিয়ে দিলে। \914 &\9&br