পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VS রবীন্দ্র-রচনাবলী R আজ দেশ থেকে তার স্ত্রীর প্রথম চিঠি এল । লিখেছে, “তুমি কবে ফিরে আসবে। এসো এসো, শীঘ্র এসো। তোমার দুটি পায়ে পড়ি।" এই আসা-যাওয়ার সংসারে তারও চলে যাওয়া আর তারও ফিরে আসার যে এত দাম ছিল এ কথা কে জানত। সেই দুটি আতুর চোখের চাউনির সামনে সে নিজেকে দাড় করিয়ে দেখলে, আর তার মন বিস্ময়ে ভরে উঠল। ভোরবেলায় উঠে চিঠিখনি নিয়ে দেবদারুর ছায়ায় সেই বঁাকা পথে সে বেড়াতে বেরোল। চিঠির পরশ তার হাতে লাগে আর কানে যেন সে শুনতে পায়, “তোমাকে না দেখতে পেয়ে আমার জগতের সমন্ত আকাশ কান্নায় ভেসে গেল ।” মনে মনে ভাবতে লাগল, “এত কান্নার মূল্য কি আমার মধ্যে আছে।” V এমন সময় সূর্য উঠল। পূর্ব দিকের নীল পাহাড়ের শিখরে। দেবদারুর শিশিরভেজা পাতার ঝালারের ভিতর দিয়ে আলো ঝিলমিল করে উঠল। হঠাৎ চারটি বিদেশিনী মেয়ে দুই কুকুর সঙ্গে নিয়ে রাস্তার বঁাকের মুখে তার সামনে এসে পড়ল । কী জানি কী ছিল তার মুখে, কিংবা তার সাজে, কিংবা তার চালচলনে- বড়ো মেয়েদুটি কৌতুকে মুখ একটুখানি বাকিয়ে চলে গেল। ছোটাে মেয়েদুটি হাসি চাপাবার চেষ্টা করলে, চাপতে পারলে না ; দুজনে দুজনকে ঠেলাঠেলি করে খিলখিল করে হেসে ছুটে গেল। কঠিন কৌতুকের হাসিতে ঝরনাগুলিরও সুর ফিরে গেল। তারা হাততালি দিয়ে উঠল। প্রবাসী মাথা হেঁট করে চলে আর ভাবে, ‘আমার দেখার মূল্য কি এই হাসি।” সেদিন রাস্তায় চলা তার আর হল না। বাসায় ফিরে গেল, একলা ঘরে বসে চিঠিখনি খুলে পড়লে, “তুমি কবে ফিরে আসবে। এসো, এসো, শীঘ্র এসো, তোমার দুটি পায়ে পড়ি।” বৈশাখ ১৩২৯ রথযাত্রা qQRIES fropick | তাই রানী রাজাকে বললে, “চলো, রথ দেখতে যাই ।” রাজা বললে, “আচ্ছা ।” ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসানি । দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল। কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির বঁটার কাঠি কুড়িয়ে আনা তার কাজ । সর্দার এসে দয়া করে তাকে বললে, “ওৱে, তুই যাবি তো আয় ।” সে হাত জোড় করে বললে, “আমার যাওয়া ঘটবে না।” রাজার কানে কথা উঠল, সবাই সঙ্গে যায়, কেবল সেই দুঃখীটা যায় না। রাজা দয়া করে মন্ত্রীকে বললে, “ওকেও ডেকে নিয়ো ।” রান্তার ধারে তার বাড়ি। হাতি যখন সেইখানে পৌঁছল মন্ত্রী তাকে ডেকে বললে, “ওরে দুঃখী, छैाकून्न (नथ िछन् ।”