পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা * তেমনি আমার সচেষ্ট প্ৰাণ যখনই ছুটি পেল, তখনই সেই গভীর প্রাণের মধ্যে স্থান পেলুম যেখানে বিশ্বের আদিকালের লীলাক্ষেত্র । পথচলা পথিক যত দিন ছিলুম তত দিন পথের ধারের ঐ বটগাছটার দিকে তাকাবার সময় পাই নি ; আজ পথ ছেড়ে জানিলায় এসেছি, আজ ওর সঙ্গে মোকাবিলা শুরু হল। আমার মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে ক্ষণে ক্ষণে ও যেন অস্থির হয়ে ওঠে। যেন বলতে চায়, “বুঝতে পারছি না ?” আমি সত্ত্বনা দিয়ে বলি, “বুঝেছি, সব বুঝেছি ; তুমি অমন ব্যাকুল হেয়ে না।” কিছুক্ষণের জন্যে আবার শান্ত হয়ে যায়। আবার দেখি, ভারি ব্যন্ত হয়ে ওঠে ; আবার সেই থারথার ঝরঝর ঝলমল । আবার ওকে ঠাণ্ডা করে বলি, “ই হী, ঐ কথাই বটে ; আমি তোমারই খেলার সাথি, লক্ষ হাজার বছর ধরে এই মাটির খেলাঘরে আমিও গণ্ডুষে গণ্ডুবে তোমারই মতো সূর্যালোক পান করেছি, ধরণীর স্তন্যরসে আমিও তোমার অংশী ছিলেম।” তখন ওর ভিতর দিয়ে হঠাৎ হাওয়ার শব্দ শুনি ; ও বলতে থাকে, “ই, ই, হঁহা ।” যে ভাষা রক্তের মর্মরে আমার হৃৎপিণ্ডে বাজে, যা আলো-অন্ধকারের নিঃশব্দ আবর্তন ধ্বনি, সেই ভাষা ওর পত্রমর্মরে আমার কাছে এসে পৌছয়। সেই ভাষা বিশ্বজগতের সরকারি ভাষা। DBB DD DB BDBSDBu BDS DBDu BDuS BBB DDD SS সে ভারি খুশির কথা । সেই খুশিতে বিশ্বের অণু পরমাণু থারথার করে কঁপিছে । ঐ বটগাছের সঙ্গে আমার আজ সেই এক ভাষায় সেই এক খুশির কথা চলেছে। ও আমাকে বলছে, “আছ হে বটে ?” আমি সাড়া দিয়ে বলছি, “আছি হে মিতা।” এমনি করে ‘আছিতে 'আছিতে এক তালে করতালি বাজছে । R ঐ বটগাছটার সঙ্গে যখন আমার আলাপ শুরু হল তখন বসন্তে ওর পাতাগুলো কচি ছিল ; তার নানা ফাক দিয়ে আকাশের পলাতক আলো ঘাসের উপর এসে পৃথিবীর ছায়ার সঙ্গে গোপনে গলাগলি করত । তার পরে আষাঢ়ে বৰ্ষা নামল ; ওয়ও পাতার রঙ মেঘের মতো গভীর হয়ে এসেছে । আজ সেই পাতার রাশ প্রবীণের পাকা বুদ্ধির মতো নিবিড়, তার কোনো ফাক দিয়ে বাইরের আলো প্রবেশ করবার পথ পায় না। তখন গাছটি ছিল গরিবের মেয়েটির মতো ; আজ সে ধনীঘরের গৃহিণী, যেন পৰ্যাপ্ত পরিতৃপ্তির চেহারা । আজ সকালে সে তার মরকতমণির বিশানলী হার ঝলমলিয়ে আমাকে বললে, “মাথার উপর শাখনতরো ইটপাথর মুড়ি দিয়ে বসে আছ কেন । আমার মতো একেবারে ভরপুর বাইরে এসো-না।” আমি বললেম, “মানুষকে যে ভিতর বাহির দুই বঁচিয়ে চলতে হয় !" গাছ নড়েচড়ে বলে উঠল, “বুঝতে পারলেম না।” আমি বললেম, “আমাদের দুটাে জগৎ, ভিতরের আর বাইরের ” গাছ বললে,“সৰ্বনাশ! ভিতরেরটা আছে কােথায় ן" আমার আপনারই ঘেরের মধ্যে ।” "6थं कद्र दी ” "हैि क।ि" "সৃষ্টি আবার ঘেরের মধ্যে ! তোমার কথা বোঝবার জো নেই।”