পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 O R রবীন্দ্র-রচনাবলী গাড়ির ছাদের উপর দাঁড়িয়ে ডাক দিতে লািগলুম, বনমালী, বনমালী। ইটুপিডের কোনাে সাড়াশব্দ নেই। স্পষ্টই বােঝা গেল, সে তখন বােলপুর স্টেশনের প্লাটফরমে চাদর মুড়ি দিয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুমােচ্ছ। ভারি রাগ হল। ইচ্ছে করল, তার নাকের মধ্যে ফাউন্টেন পেনের সুড়সুড়ি দিয়ে তাকে হাঁচিয়ে দিয়ে আসি গে। এ দিকে পীকের জলে আমার চুলগুলো গেছে ভিজে। না আঁচড়ে নিয়ে ওর বউদিদির ওখানে যাই কী করে। গোলমাল শুনে পুকুরপাড়ে হাসগুলো প্যাক প্যাক করে ডেকে উঠেছে। এক লাফ দিয়ে পড়লুম তাদের মধ্যে ; একটাকে চেপে ধরে তার ডানা দিয়ে ঘষে ঘষে চুলটা একরকম ঠিক করে নিলুম। পুতুলাল বললে, ঠিক বলেছি, দাদাবাবু। ব্যাঙের লাফে বড়ো আরাম বোধ হচ্ছে। ঘুম আসছে। যাওয়া গেল ওর বউদিদির বাড়িতে। খিদের চোটে একেবারে ভুলে গেছি। কনে দেখার কথা। বউদিদিকে জিগেস করলেম, আমার সঙ্গে ছিল সে, তাকে দেখছি নে কেন। তিন হাত দোপাট্রা কাপড়ের ঘোমটার ভিতর থেকে মিহি সুরে বউদিদি বললে, সে কনে খুঁজতে কোন চুলোয় । মজা দিঘির ধারে বঁাশতলায় । কত দূর হবে। তিন পহরের পথ । দূর বেশি নয় বটে। কিন্তু, খিদে পেয়েছে। তোমার সেই চাটুনি বের করে দিকি । বউদিদি নাকি সুরে বললে, হায় রে আমার পোড়া কপাল, এই গেল মঙ্গলবারের আগের মঙ্গলবারে ফাটা ফুটবল ভর্তি করে সমস্তটা পাঠিয়ে দিয়েছি। বুজুদিদির ওখানে- সে ওটা খেতে ভালোবাসে ছোলার ছাতুর সঙ্গে সর্ষেতেল আর লঙ্কা দিয়ে মেখে। মুখ শুকিয়ে গেল ; বললুম, আমরা খাই কী । বউদিদি বললে, শুকনো কুঁচো চিংড়িমাছের মোরব্বা আছে টাটুকা চিটেগুড়ে জমানো। বাছারা খেয়ে নাও, নইলে পিত্তি পড়ে যাবে। কিছু খেলেম, অনেকটাই রইল বাকি । পুতুলালকে জিগেস করলুম, খাবি ? সে বললে, ভঁড়টা দাও, বাড়ি গিয়ে আহিক করে খাব । বাড়ি এলেম ফিরে । চটিজুতো ভিজে, গা-ময় কাদা। বনমালীকে ডাক দিয়ে বললুম, বদর, কী করছিলি । সে হাউহাউ করে কাদতে কঁদিতে বললে, বিছে কামড়েছিল, তাই ঘুমছিলুম। বলেই সে চলে গেল ঘুমতে । এমন সময় একটা গুণ্ডাগোছের মানুষ একেবারে ঘরের মধ্যে উপস্থিত । মন্ত লম্বা, ঘাড় মোটা, মোটা পিপের মতো গর্দান, বনমালীর মতো রঙ কালো, ঝাঁকড়া চুল, খোচা খোচা গোফ, চোখ দুটাে রাঙা, গায়ে ছিটের মেরুজাই, কোমরে লাল রঙের ডোরাকাটা লুঙির উপর হলদে রঙের তিন-কোণা গামছা বাধা, হাতে পিতলের কঁকামারা লম্বা একটা বঁাশের লাঠি, গলার আওয়াজ যেন গদাইবাবুদের মোটরগাড়িটার শিঙের মতে । হঠাৎ সে সাড়ে তিন মোন ওজনের গলায় ডেকে উঠল, বাবুমশায় ! চমকে উঠে কলমের খোচায় খানিকটা কাগজ ছিড়ে গেল । বললুম, কী হয়েছে, কে তুমি । সে বললে, আমার নাম পাল্লারাম, দিদির বাড়ি থেকে এসেছি, জানতে চাই তোমাদের সে কোথায় tोक्त । अभि वजनूश, उाभि की छानि । পাল্লারাম চোখ পাকিয়ে ইয়াক দিয়ে বললে, জান না বটে ! ঐ যে তার তালি দেওয়া আঁশ-বের করা সবুজ রঙের এক পাটি পশমের মোজা কাদাসুদ্ধ শুকিয়ে গিয়ে মরা কাঠবেড়ালির কাটা