পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wr রবীন্দ্র-রচনাবলী জেলেনেীকো এল ঘাটে, কুড়ি কাখে জুটেছে মেছুনি ; মাথার উপরে ওড়ে চিল । মহাজনী নীেকোগুলো ঢালুতটে বাধা পাশাপাশি । মাল্লা বুনিতেছে জাল রৌদ্রে বসি চালের উপরে } আঁাকড়ি মোষের গলা সাতারিয়া চাষী ভেসে চলে ওপারে ধানের খেতে । অদূরে বনের উর্ধে মন্দিরের চুড়া ঝলিছে প্ৰভাত-রৌদ্রালোকে । মাঠের অদৃশ্য পারে চলে রেলগাড়ি ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর ধ্বনিরেখা টেনে দিয়ে বাতাসের বুকে, পশ্চাতে ধোয়ায় মেলি মনে এল. কিছুই সে নয়, সেই বহুদিন আগে, দু’পহরু রাতি, নৌকা বাধা গঙ্গার কিনাৱে । জোৎস্নায় চিকণ জল, কচিৎ বনের ফাকে দেখা যায় প্ৰদীপের শিখা ৷ সহসা উঠিনু জেগে শব্দশান্য নিশীথ-আকাশে উঠিছে গানের ধ্বনি তরুণ কণ্ঠের, ছুটিছে ভাটির স্রোতে তস্বী নীেকা তরতার বেগে । মুহুর্তে অদৃশ্য হয়ে গেল ; দুই পারে স্তব্ধ বনে জাগিয়া রহিল শিহরন ; চাদের-মুকুট-পরা আচঞ্চল রাত্রির প্রতিমা রহিল নির্বাক হয়ে পরাভূত ঘুমের আসনে । দূর প্রসারিত চর শূন্য আকাশের নীচে শূন্যতার ভাষ্য করে যেন । হেথা হোথা চরে গোরু শস্যশেষ বাজরার খেতে ; ছাগল খেদায়ে রাখে কাঠি হাতে কৃষাণ-বালক । কোথাও বা একা পীনারী শাকের সন্ধানে ফেরে ঝুড়ি নিয়ে কাখে । কীভূ বহু দূরে চলে নদীর রেখার পাশে পাশে নতপূণ্ঠ ক্লিষ্টগতি গুণটানা মাল্লা একসারি । জলে স্থলে সজীবের আর চিহ্ন নাই। সারাবেলা ।