পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

868 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী এখনো আছে কঁচা । সুযোগ পেলে মশগুল হয়ে ছেলেমানুবি করি বানিয়ে, হয়তো মানানসই হয় না। তাই বলে আগাগোড়াই যদি ছেলেমানুবি কর, তা হলে সত্যিকার ছেলেমানুষই হয় না। ছেলে বয়সের ভিতরে ভিতরে বড়ো বয়সের মিশল থাকে । দিদি, এটা একটা কথার মতো কথা বলেছ। শিশুর কোমল দেহেও শক্ত হাড়ের গোড়াপত্তন शांक । q कथbों आधि झूलहिनूम ना कि । তোমার বকুনি শুনে মনে হয়, যখন আমি ছোটাে ছিলুম। তখনকারদিনে এমন কিছুই ছিল না যা ব্যঙ্গ করবার নয়। অথচ মজা করবার । একটা উদাহরণ দেখাও । মনে করো, আমাদের মাস্টারমশায় । তিনি অদ্ভুত ছিলেন, কিন্তু খাটি অদ্ভুত। তাই তাকে এত ভালো লগত । আচ্ছা, তার কথাটা একটু ধরিয়ে দাও-না। আজও তার মুখখানা স্পষ্ট মনে পড়ে। ক্লাসে বসতেন যেন আলগেছে, বইগুলো ছিল কণ্ঠস্থ। উপরের দিকে তাকিয়ে পাঠ বলে যেতেন, কথাগুলো যেন সদ্য ঝরে পড়ছে আকাশ থেকে । আমরা ক্লাসে উপস্থিত থাকিব, মন দিয়ে পড়া শুনিব, সে গরজটা সম্পূর্ণ আমাদেরই বলে তিনি মনে করতেন। তিনি তোমাদের মুখ চেনবার সুযোগ পান নি বোধ হয়। চেষ্টাও করেন নি। একদিন ছুটির দরবার নিয়ে ঠার ঘরে ঢুকতেই তিনি শশব্যস্ত হয়ে চৌকি ছেড়ে উঠে পড়লেন ; মনে করলেন, আমি বুঝি যাকে বলে একজন রীতিমত মহিলা । उाभनडाला अड्डादीश टूल कद्मा ऊँद्ध अडाठ छिल । ছিল বৈকি। তোমার দাড়ি দেখে কোনোদিন তোমাকে নবাব খাঞ্জেখার প্রাইভেট সেক্রেটারি বলে ভুল করেন নি তো ? না, ঠাট্ট নয়, তিনি তো তোমার বন্ধু ছিলেন, বিলো-না তার কথা । র্তার শত্ৰু কেউ ছিল না, কিন্তু সমজদার বন্ধু ছিলুম একলা আমি। লোকে যখন তার খ্যাপামির কথা রটাত। তিনি আশ্চর্য হয়ে যেতেন । একদিন আমাকে এসে বললেন, সবাই বলছে, আমি ক্লাস পড়াই কিন্তু ক্লাসের দিকে তাকাই নে । ר আমি বললুম, তোমার সাঙাৎরা তোমার বিদ্যের দোষ ধরতে পারে না, তোমার বুদ্ধির দোষ ধরে । তারা বলে, তোমার পড়ানোর ভুল হয় না। কিন্তু পড়ােচ্ছ যে সেইটেই ভুলে যাও। পড়াচ্ছি। যদি না ভুলি তবে পড়াতে পারতুম না, নিছক মাস্টারিই করে যৌতুম। পড়ানোটা নিঃশেষে হজম হয়ে গেছে, ওটা নিয়ে মনটা আইঢাই করে না । জলচর জলে সাতার দিলে টের পাওয়া যায় না, স্থলচর দিলে সেটা খুবই মালুম হয় । তুমি অধ্যাপন-সরোবরের গভীর জলের মাছ । আমি যদি ছাত্রদের দিকে তাকাই তবে ক্লাসের দিকে মন দেব কী করে । তোমার সেই ক্লাসটা আছে কোথায় । কোথাও না, সেইজন্যেই তো বাধা পাই নে। ছাত্ররাই যদি আমার চোখ জুড়ে বসে তা হলে ক্লাসের আত্মপুরুষটা আড়ালে পড়ে যে । 'পড়ো বাবা আত্মারাম’ এই বুঝি তোমার বুলি ? পড়াচ্ছি। কই । আমার আত্মারামকেই টহল দেওয়াচ্ছি। তোমার প্রণালীটিা কিরকম । গঙ্গাধারার বহে যাবার প্রণালী যেরকম। ডাইনে বঁায়ে কোথাও মরু, কোথাও ফসল, কোথাও শ্মশান, কোথাও শহর । এই নিয়ে গঙ্গামায়ীকে পদে পদে বিচার করতে যদি হত তা হলে আজ পর্যন্ত সাগরসন্তানদের উদ্ধার হত না । যাদের যতটা হবার তাই হয়, বিধাতার সঙ্গে টকর দিয়ে তার চেয়ে বেশি হওয়াতে গেলেই চলা বন্ধ । আমার পড়ানো চলে মেঘের মতো শূন্য দিয়ে, বর্ষণ হয় নানা খেতে,