পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(히 8心创 মাঝপথেই পক্ষীরাজের পাখা ভাঙা অসম্ভব নয়। যদি ভাঙে তবে এক নিমেষে সত্যলোকে পৌঁছােব, সুপ্রিদক্ষিণের পথে একেবারে মিলে যাব পৃথিবীর সঙ্গে। যদি বেঁচে থাকি, আকাশের খেয়া-পারাপারে যদি নৈপূণ্য ঘটে, তা হলে একদিন পুপূদিদিকে নিয়ে শূন্যপথে পাড়ি দিয়ে আসব, মনে এই ইচ্ছে বুইল। সত্যযুগে বোধ হয় ইচ্ছে আর ঘটনা একই ছিল। চেষ্টা করব। ধানযোগে ইচ্ছেকেই ঘটনা বলে ধরে নিতে। ছেলেবেলা থেকে অকারণে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকাই আমার অভ্যাস। ঐ আকাশটা পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ যুগের কোটি কোটি ইচ্ছে দিয়ে পূর্ণ। এই বিলীয়মান ইচ্ছেগুলো বিশ্বসৃষ্টির কোন কাজে লাগে কী জানি। বেড়াক উড়ে আমার দীর্ঘনিশ্বাসে উৎসারিত ইচ্ছেগুলো সেই আকাশেই যে আকাশে আজ আমি উড়তে চলেছি। পুপূদিদি ব্যাকুল হয়ে উঠে জিগেস করলে, সুকুমারদার এখনকার খবর কী। আমি বললুম, সেইটেই পাওয়া যাচ্ছে না বলেই তার বাবা বিলেতে সন্ধান করতে চলেছেন। বিবর্ণ হয়ে গেল দিদির মুখ। আন্তে আন্থে উঠে ঘরে দরজা বন্ধ করে দিলে। আমি জানি, সুকুমারের আঁকা সেই ছেলেমানুবি পুপুদিদি আপন ডেস্কে লুকিয়ে রেখেছে। আমি চশমাটা মুছে ফেলে চলে গেলুম সুকুমারদের বাড়ির ছাদে। সেই ভাঙা ছাতাটা সেখানে নেই, নেই সেই আতসবাজির আধাপোড়া কাঠি ।