পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓisimg br তিনি বুঝি পাগল ছিলেন ? স্থা, যেমন পাগল আমি । , তুমি আবার পাগল ? কী-যে বল তার ঠিক নেই। ষ্ঠার পাগলামির লক্ষণ শুনলে বুঝতে পারবে, আমার সঙ্গে তার আশ্চর্য মিল । কী রকম শুনি । BBD SD DBBSYBBD DB DDSS DBO DBDB DBD S তুমি যা বল সে তো সত্যি কথা। কিন্তু, তিনি যা বলতেন তা যে মিথ্যে। দেখো দিদি, সত্য কখনো সত্যই হয় না। যদি সকলের সম্বন্ধেই সে না খাটে । বিধাতা লক্ষকোটি মানুষ বানিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই অদ্বিতীয়। র্তাদের ছােচ ভেঙে ফেলেছেন। অধিকাংশ লোকে নিজেকে পাঁচজনের সমান মনে করে আরাম বোধ করে | দৈবাৎ এক-একজন লোককে পাওয়া যায় যারা জানে, তাদের জুড়ি নেই। মুনশি ছিলেন সেই জাতের মানুষ । দাদামশায়, তুমি একটু স্পষ্ট করে তঁর কথা বলো-না, তোমার অর্ধেক কথা আমি বুঝতে পারি নে। ক্ৰমে ক্রমে বলছি, একটু ধৈর্য ধরে - আমাদের বাড়িতে ছিলেন মুনশি, দাদাকে ফারসি পড়াতেন। কাঠামোেটা তার বানিয়ে তুলতে মাংসের পড়েছিল টানাটানি । হাড় কখানার উপরে একটা চামড়া ছিল লেগে, যেন মোমজামার মতো । দেখে কেউ আন্দাজ করতে পারত না তার ক্ষমতা কত । না পারবার হেতু এই যে, ক্ষমতার কথাটা জানতেন কেবল তিনি নিজে । পৃথিবীতে বড়ো বড়ো সব পালোয়ান কখনো জেতে কখনো হারে । কিন্তু, যে তালিম নিয়ে মুনশির ছিল গুমর তাতে তিনি কখনো কারও কাছে হাটন নি। তার বিদ্যেতে কারও কাছে তিনি যে ছিলেন কমতি সেটার নজির বাইরে থাকতে পারে, ছিল না তার মনে । যদি হত ফারসি পড়া বিদ্যে তা হলে কথাটা সহজে মেনে নিতে রাজি ছিল লোকে । কিন্তু, ফারসির কথা পাড়লেই বলতেন, আরে ও কি একটা বিদ্যে । কিন্তু, তার বিশ্বাস ছিল আপনার গানে। অথচ তার গলায় যে আওয়াজ বেরোত সেটা চেচনি কিংবা কাদুনির জাতের, পাড়ার লোকে ছুটে আসত বাড়িতে কিছু বিপদ ঘটেছে মনে করে। আমাদের বাড়িতে নামজাদা গাইয়ে ছিলেন বিষ্ণু, তিনি কপাল চাপড়িয়ে বলতেন, মুনশিজি আমার রুটি মারলেন দেখছি। বিষ্ণুর এই হতাশ ভাবখানা দেখে মুনশি বিশেষ দুঃখিত হতেন না- একটু মুচকে হাসতেন মাত্র । সবাই বলত, মুনশিজি, কী গলাই ভগবান আপনাকে দিয়েছেন। খোশনামটা মুনশি নিজের পাওনা বলেই টেকে খুঁজতেন । এই তো গেল। গান । আরো একটি বিদ্যে মুনশির দখলে ছিল । তারও সমজদার পাওয়া যেত না । ইংরেজি ভাষায় কোনো হাড়পাকা ইংরেজও তার সামনে দাড়াতে পারে না, এই ছিল তার বিশ্বাস । একবার বক্ততার আসরে নাবলে সুরেন্দ্র বাড়জেকে দেশছাড়া করতে পারতেন কেবল যদি ইচ্ছে করতেন। কোনোদিন তিনি ইচ্ছে করেন নি। বিকুর রুটি বেঁচে গেল, সুরেন্দ্রনাথেরও নামও । কেবল কথাটা উঠলে মুনশি একটু মুচকে হাসতেন । কিন্তু, মুনশির ইংরেজি ভাষায় দখল নিয়ে আমাদের একটা পাপকর্মের বিশেষ সুবিধা হয়েছিল। কথাটা খুলে বলি। তখন আমরা পড়তুম বেঙ্গল অ্যাকাডেমিতে, ডিকরজি সাহেব ছিলেন ইস্কুলের মালিক। তিনি ঠিক করে রেখেছিলেন, আমাদের পড়াশুনো কোনোকালেই হবে না। কিন্তু, ভাবনা কী । আমাদের বিদ্যেও চাই নে, বুদ্ধিও চাই নে, আমাদের আছে পৈতৃক সম্পত্তি । তবুও তঁর ইস্কুল থেকে টুটি চুরি করে নিতে হলে তার চলতি নিয়মটা মানতে হত। কর্তাদের চিঠিতে ছুটির দাবির কারণ দেখতে হত। সে চিঠি যত বড়ো জালই হােক, ডিকরজি সাহেব চোখ বুজে দিতেন ছুটি । মাইনের পাওনাতে লোকসান না ঘটলে তঁার ভাবনা ছিল না। মুনশিকে জানাতুম ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। মুনশি মুখ টিপে হাসতেন। হবে না ? বাস রে, তার ইংরেজি ভাষার কী জোর। সে ইংরেজি কেবল ব্যাকরণের ঠেলায় হাইকোর্টের জজের রায় ঘুরিয়ে দিতে পারত। আমরা বলতুম, নিশ্চয়! হাইকোর্টের জজের