পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8論の রবীন্দ্র-রচনাবলী কাছে কোনোদিন তঁাকে কলম পেশ করতে হয় নি। কিন্তু, সবচেয়ে তীর জীক ছিল লাঠি-খেলার কারদানি নিয়ে। আমাদের বাড়ির উঠানে লোদ পড়লেই তার খেলা শুরু হত। সে খেলা ছিল নিজের ছায়াটার সঙ্গে। হুংকার দিয়ে ঘা লাগাতেন কখনো ছায়াটার পায়ে, কখনো তার ঘাড়ে, কখনো তার মাথায় । আর মুখ তুলে চেয়ে চেয়ে দেখতেন চারিদিকে যারা জড়ো হত তাদের দিকে। সবাই বলত, শাবাশ ! বলত, ছায়াটা যে বর্তিয়ে আছে সে ছায়ার বাপের ভাগ্যি । এই থেকে একটা কথা শেখা যায় যে ছায়ার সঙ্গে লড়াই করে কখনো হার হয়। না। আর-একটা কথা এই যে, নিজের মনে যদি জানি ‘জিতেছি তা হলে সে জিত কেউ কেড়ে নিতে পারে না । শেষ দিন পর্যন্ত মুনশিজির জিত রইল। সবাই বলত ‘শাবাশ, আর মুনশি মুখ টিপে शमgछन । দিদি, এখন বুঝতে পারছি, ওর পাগলামির সঙ্গে আমার মিল কোথায় । আমিও ছায়ার সঙ্গে লড়াই করি ! সে লড়াইয়ে আমি যে জিতি তার কোনো সন্দেহ থাকে না । ইতিহাসে ছায়ার লড়াইকে সতি্যু লড়াই বলে বর্ণনা করে। 普 普 熹 ভীষণ লড়াই তার উঠোন-কোণের, সতুর মনটা ছিল নেপোলিয়নের। ইংরেজ ফৌজের সাথে দ্বার রুদ্ধে দু-বেলা লড়াই হত দুই চোখমুদে । ঘোড়া টগবগা ছোটে, ধুলা যায় উড়ে, বাঙালি সৈন্যদল চলে মােঠ জুড়ে । ইংরেজ দুদ্দাড় কোথা দেয় ছুটি, কোন দূরে মসিমস করে তার বুট । বিছানায় শুয়ে শুয়ে শোনে বারে বারে, দেশে তার জয়রব ওঠে চারি ধারে । যখন হাত-পা নেড়ে করে বক্তৃতা কী যে ইংরেজি ফোটে বলা যায় কি তা । ক্লাসে কথা বেরোয় না, গলা তার ভাঙা, প্রশ্ন শুধালে মুখ হয়ে ওঠে রাঙা । কহিল চেহারা তার, অতি মুখচোরারোজ পেনসিল তার কেড়ে নেয় গোরা। খবরের কাগজের ছেঁড়া ছবি কেটে খাতা সে বানিয়েছিল আঠা দিয়ে ঐটে । রোজ তার পাতাগুলি দেখত সে নেড়ে, ভুদু একদিন সেটা নিয়ে গেল কেড়ে । কালি দিয়ে গাধা লিখে পিঠে দিয়ে ছাপ হাততালি দিতে দিতে ট্যাচায় প্ৰতাপ । বাহিরের ব্যবহারে হারে সে সদাই, ভিতরের ছবিটাতেজিত ছাড়া নাই।