পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. ፍጭ ዕ” রবীন্দ্র-রচনাবলী খাজনা দিয়ে ফসল সামলাতে হত। যে ম্যানেজার দুধে স্নান করেন এটা তার ভালো লাগে নি। বছরের জলধানের ফসল কাটবার সময় আসছে- এটা চরের বিশেষ ফসল। চারের জমির জল নেমে গেলেই কুষাণ পলিমাটিতে বীজ ছিটিয়ে দেয়, শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে ফসল গোলায় তোলে। এ বছরটা ছিল ভালো ; ধানের শিষে সমস্ত মাঠ হি হি করছে। এবারকার ফসল বেদখল হলে ভৰি (giga | ম্যানেজার বললেন, সর্দার, একটা কাজ আছে । জসিমের জমিতে তোমাকে ধান আগলাতে হবে। একা তোমারই উপরে ভার। দেখব কেমন মরদ তুমি । ম্যানেজার। তখনো দুধের মানের গুমোর হজম করে উঠতে পারেন নি। মিশরকে হুকুম দিয়ে। গুড়গুড়ি টানতে লাগলেন । ধান কাটার সময় এল। দিন নেই, রাত নেই, মিশির জাসিমের খেতে পাহারা দেয়। একদিন ভরা খেতে অন্য পক্ষের লোক হাল্লা করে এল, মিশির বুক ফুলিয়ে বললে, বাবা-সকল আমি থাকতে এ ধান তোমাদের ঘরে উঠবে না। সেলাম ঠুকে চলে যাও । মিশির যত বড়ো সর্দার হােক, সেদিন সে একলা । যখন তাকে ঘেরাও করলে সে গুটিসুটি মেরে বসে সবাইকে আটকাতে লাগল। অপর পক্ষের লোক বলল, দাদা, পারবে না । কেন প্ৰাণ দেবে । মিশির বললে, নিমক খেয়েছি, প্ৰাণ যায় যাক ; নিমকের মান রাখতেই হবে । চলল দাঙ্গা- শুধু লাঠির মারা হলে হয়তো মিশির ঠেকাতেও পারত। অপর পক্ষে সড়ক চালাল । একটা এসে বিধল মিশিরের পায়ে । অপর পক্ষ আবার তাকে সতর্ক করে বললে, আর কেন । এবার ক্ষান্ত দে ভাই । মিশির বললে, মিশির সর্দার প্রাণের ভয় করে না, ভয় করে বেইমানির । শেষকালে একটা সড়কি এসে বিধল তার পেটে । এটা হল মরণের মাের । পুলিশের হাতে পড়বার ভয়ে অপর পক্ষ পালাবার পথ দেখলে । মিশির সড়কি টেনে উপড়ে, পেটে চাদর জড়িয়ে ছুটলি তাদের পিছন-পিছন । বেশি দূরে যেতে পারলে না। পড়ে গেল মাটিতে । পুলিশ এল। মিশির জমিদারকে বাচাঁবার জন্য, তার নামও করলে না। বললে, আমি জন্সিমের চাকরি নিয়ে তার ধান আগলাচ্ছিলুম। ম্যানেজার সব খবর পেলেন । গুড়গুড়ি লাগলেন টানতে । ষ্ঠার দুধের স্নানের খ্যাতি- এ তো যে-সে লোকের কর্ম নয়। কিন্তু, নিমক খেয়েছে। যখন তখন প্ৰাণ দেওয়া- এটা এতই কী আশ্চর্য। এমন তো ঘটেই থাকে। কিন্তু, দুধে স্নান ! 峰 举 毒 তুমি ভাবো এই-যে বেঁটা কিছুই বুঝি নয়কে ওটা, ফুলের গুমের সবার চেয়ে বড়োবিমুখ হয়ে আজ যদি ও আলগা করে বাধন স্বীয় তখনি ফুল হয় যে পড়ো-পড়ে । বেঁাটাই ওকে হাওয়ায় নাচায়, অপমানের থেকে বাচায়, ধরে রাখে সূৰ্য্যলোকের ভোজে ;