পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

stol 盤の" তেমনি ছিল তার ধৈর্য। বাগান নিয়ে তিনি যেন জাদু করতেন। লাল হত নীল, সাদা হত আলতার রঙ, আঁটি যেত উড়ে, খোসা যেত খসে। যেটা ফলতে লাগেছ মাস তার মেয়াদ কমে হত দু'মাস। ছিলেন গরিব, ব্যাবসাতে সুবিধা করতে পারতেন না। যে করত তার হাতের কাজের তারিফ তাকে দামি মাল অমনি দিতেন বিলিয়ে। যার মতলব ছিল দাম ফাকি দিতে সে এসে বলত, কী ফুল ফুটেছে আপনার সেই গাছটাতে, চার দিক থেকে লোক আসছে দেখতে, একেবারে তাক লেগে য়াচ্ছে। তিনি দাম চাইতে ভুলে যেতেন । ঠার জীবনের খুব বড়ো শখ ছিল তার মেয়েটি। তার নাম ছিল ক্যামিল । সে ছিল তার দিনরাত্রের আনন্দ, তার কাজকর্মের সঙ্গিনী। তাকে তিনি তঁর বাগানের কাজে পাকা করে তুলেছিলেন। ঠিকমত বুদ্ধি করে কলমের জোড় লাগাতে সে তার বাপের চেয়ে কম ছিল না । বাগানে সে মালী রাখতে দেয় নি। সে নিজে হাতে মাটি খুঁড়তে, বীজ বুনতে, আগাছা নিড়োতে, বাপের সঙ্গে সমান পরিশ্রম করত । এ ছাড়া রোধেবেড়ে বােপকে খাওয়ানো, কাপড় শেলাই করে দেওয়া, তার হয়ে চিঠির জবাব দেওয়া- সব কাজের ভার নিয়েছিল নিজে। চেস্টনািট গাছের তলায় ওদের ছোট্ট এই ঘরটি সেবায় শান্তিতে ছিল মধুমাখা । ওদের বাগানের ছায়ায় চা খেতে খেতে পাড়ার লোক সে কথা জানিয়ে যেত। ওরা জবাবে বলত, অনেক দামের আমাদের এই বাসা, রাজার মণিমানিক দিয়ে তৈরি নয়, তৈরি হয়েছে দুটি প্রাণীর ভালোবাসা দিয়ে, আর-কোথাও এ পাওয়া যাবে না । যে ছেলের সঙ্গে মেয়েটির বিবাহের কথা ছিল সেই জ্যাক মাঝে মাঝে কাজে যোগ দিতে আসত ; কানে কানে জিগগেস করত, শুভদিন আসবে কবে । ক্যামিল কেবলই দিন পিছিয়ে দিত ; বােপকে ছেড়ে সে কিছুতেই বিয়ে করতে চাইত না । জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধ বাধল। ফ্রান্সের। রাজ্যের কড়া নিয়ম, পিয়েরকে যুদ্ধে টেনে নিয়ে গেল । কামিল চোখের জল লুকিয়ে ব্যাপকে বললে, কিছু ভয় কোরো না, বাবা । আমাদের এই বাগানকে প্রাণ দিয়ে বাচিয়ে রাখব । মেয়েটি তখন হলদে রজনীগন্ধা তৈরি করে তোলবার পরখ করছিল । বাপ বলেছিলেন, হবে না ; মেয়ে বলেছিল, হবে। তার কথা যদি খাটে তা হলে যুদ্ধ থেকে বাপ ফিরে এলে তাকে অবাক করে দেবে, এই ছিল তার পণ । ইতিমধ্যে জ্যাক এসেছিল দু দিনের ছুটিতে রণক্ষেত্র থেকে খবর দিতে যে, পিয়ের পেয়েছে সেনানায়কের তকমা । নিজে না আসতে পেরে তাকে পাঠিয়ে দিয়েছে এই সুখবর দিতে। জ্যাক এসে দেখলে, সেইদিনই সকালে গোলা এসে পড়েছিল ফুলবাগানে। যে তাকে প্ৰাণ দিয়ে বঁচিয়ে রেখেছিল তার প্রাণসুদ্ধ নিয়ে ছারখার হয়ে গেল বাগানটি। এর মধ্যে দয়ার হাত ছিল এইটুকু, ক্যামিল ছিল না। 35 সকলের আশ্চর্য লেগেছিল সভ্যতার জোর হিসাব করে । লম্বা দৌড়ের কামানের গোলা এসে পড়েছিল পঁচিশ মাইল তফাত থেকে । একে বলে কালের উন্নতি । সভ্যতার কত যে জোর, আর-এক দেশে আর-একবার তার পরীক্ষা হয়েছে। তার প্রমাণ রয়ে গৈছে ধুলার মধ্যে, আর-কোথাও নয় । সে চীনদেশে। তাকে লড়তে হয়েছিল বড়ো বড়ো দুই সভ্য জগতের সঙ্গে। পিকিন শহরে ছিল আশ্চর্য এক রাজবাড়ি । তার মধ্যে ছিল বহু-কালের-জড়ো করা মান-মাতানো শিল্পের কাজ। মানুষের হাতের তেমন গুণাপনা আর কখনো হয় নি, হবে না। যুদ্ধে চীনের হার হল ; হার হবার কথা, কেননা মার-জখমের কারদানিতে সভ্যতার অদ্ভুত বাহাদুরি। কিন্তু, স্বায় রে আশ্চর্য শিল্প, অনেক কালের গুণীদের ধ্যানের ধন, সভ্যতার অল্প কালের আঁচড়ে কামড়ে ইড্রেমিড়ে গেল কোথায়। পিকিনে একদিন গিয়েছিলুম বেড়াতে, নিজের চােখে দেখে এসেছি। বেশি। किड्न रक्(5 भन या न !