পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(for রবীন্দ্র-রচনাবলী 崇 崙 嶽 মানুষ সবার বড়ো জগতের ঘটনা, মনে হত, মিছে না। এ শাস্ত্রের রটনা | তখন এ জীবনকে পবিত্র মেনেছি যখন মানুষ বলে মানুষকে জেনেছি। ভোরবেলা জানলায় পাখিগুলো জাগালে ভাবিতম, আছি যেন স্বর্গের নাগালে । মনে হত, পাকা ধানে বঁাশি যেন বাজানো, মায়ের আঁচল-ভরা দান যেন সাজানো। তরী যেত নীলাকাশে সাদা পাল মেলিয়া, প্ৰাণে যেত অজানার ছায়াখানি ফেলিয়া । বুনো হাঁস নদীপারে মেলে যেত পাখা সে, উতলা ভাবনা মোর নিয়ে যেত আকাশে । নদীর শুনেছি। ধ্বনি কত রাত দুপুরে, অলৱী যেত যেন তাল রেখে নুপুরে । পূজার বেজেছে বঁশি ঘুম হতে উঠিতেই । পূজায় পাড়ার হাওয়া ভরে যেত ছুটিতেই। বন্ধুরা জুটিতম কত নব বরষে, সুধায় ভরিত প্ৰাণ সুহৃদের পরশে । - পশ্চিমে হেনকালে পথে কাটা বিছিয়ে সভ্যতা দেখা দিল দাঁত তার খিচিয়ে । সভ্যতা করে বলে ভেবেছিনু জানি তাআজ দেখি কী অশুচি, কী যে অপমানিত । কলবল সম্বল সিভিলাইজেশনের, তার সবচেয়ে কাজ মানুষকে পোষণের । মানুষের সাজে কে যে সাজিয়েছে অসুরে, আজ দেখি “পশু' বলা গাল দেওয়া পশুরে । মানুষকে ভুল করে গড়েছেন বিধাতা, কত মারে এত বঁকা হতে পারে সিধা তা । দয়া কি হয়েছে তার হতাশের রোদনে, তাইগিয়েছেন লেগে ভ্ৰমসংশোধনে । আজ তিনি নররূপী দানবের বংশে মানুষ লাগিয়েছেন মানুষের ধ্বংসে।