পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

C. S. রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী সামলাতে পারছে না, সদা সৰ্বক্ষণই তাদের মূল সম্বল ছিটকে পড়তে পড়তে হালকা হয়ে তারা এক 29ों (शक अe oीं है । এতকাল রেডিয়ম-নামক এক মৌলিক ধাতু লুকিয়ে ছিল স্কুল আবরণের মধ্যে। তার আবিষ্কাকে সঙ্গে সঙ্গে পরমাণুর গৃঢ়তম রহস্য ধরা পড়ে গেল। বিজ্ঞানীদের সঙ্গে তার প্রথম মোকাবিলার ইতিহাস মনে রেখে দেবার যোগ্য। যখন র্যণ্টগেন রশ্মির আবিষ্কার হল, দেখা গেল তার স্থূল বাধা ভেদ করবার ক্ষমতা। তখন উমরি বেকরেল ছিলেন প্যারিস মূনিসিপাল স্কুলে বিজ্ঞানের অধ্যাপক। স্বতোদীপ্তিমান পদার্থ মাত্রেরই এই বাধা ভেদ করবার শক্তি আছে কি না, সেই পরীক্ষায় তিনি লাগলেন। এইরকম কতকগুলি ধাতুপদার্থ নিয়ে কাজ আরম্ভ করে দিলেন । তাদের কালো কাগজে মুড়ে রেখে দিলেন ফোটোগ্রাফের প্লেটের উপরে। দেখলেন তাতে মোড়ক ভেদ করে কেবল ঘুরেনিয়ম ধাতুরই চিহ্ন পড়ল। সকলের চেয়ে গুরুভার যার পরমাণু তার তেজস্ক্রিয়তা সপ্রমাণ হয়ে গেল। পিচব্লেন্ড-নামক এক খনিজ পদার্থ থেকে ঘুরেনিয়মকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়ে থাকে। বেকরেলের এক অসামান্য বুদ্ধিমতী ছাত্রী ছিলেন মাদাম কুরি। র্তার স্বামী পিয়ের কুরি ফরাসী বিজ্ঞান-বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তারা স্বামী-স্ত্রীতে মিলে এই পিচব্লেন্ড নিয়ে পরখ করতে লাগলেন, দেখলেন এর তেজস্ক্রিয় প্রভাব ঘুরেনিয়মের চেয়ে আরো প্রবল। পিচব্লেন্ডের মধ্যে এমন কোনো কোনো পদার্থ আছে যারা এই শক্তির মূলে, তারই আবিষ্কারের চেষ্টায় তিনটি নূতন পদার্থ বের হল— রেডিয়ম, পলোনিয়ম এবং অ্যাকটিনিয়ম। পরীক্ষা করতে করতে প্ৰায় চল্লিশটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে। প্রায় এদের সবগুলিই বিজ্ঞানে নতুন জানা । তখনকার দিনে সকলের চেয়ে চমক লাগিয়ে দিল। এই ধাতুর একটি অদ্ভুত স্বভাব। সে নিজের মধ্যে থেকে জ্যোতিকণা বিকীর্ণ করে নিজেকে নানা মৌলিক পদার্থে রূপান্তরিত করতে করতে অবশেষে সীসে করে তোলে। এ যেন একটা বৈজ্ঞানিক ভেলকি বললেই হয়। এক ধাতু থেকে অনা ধাতুর যে উদ্ভব হতে পারে, সে এই প্রথম জানা গেল । যে-সকল পদার্থ রেডিয়ামের এক জাতের, অর্থাৎ তেজ-ছিটানােই যাদের স্বভাব তারা সকলেই জাত-খোওয়াবার দলে। তারা কেবলই আপনার তেজের মূলধন খরচ করতে থাকে। এই অপব্যয়ের ফর্দে প্ৰথম যে তেজঃপদার্থ পড়ে, গ্ৰীক বর্ণমালার প্রথম অক্ষরের নামে তার নাম দেওয়া হয়েছে আলফা। বাংলা বর্ণমালা ধরে তাকে ক বললে চলে। এ একটা পরমাণু, পজিটিভ জাতের ২ রেডিয়ামের আরো একটি ছিটিয়ে-ফেলা তেজের কণা আছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে বঁটা, বলা যেতে পারে খ। সেইলেকট্রন, নেগেটিভ চার্জ করা, বিষম তার দ্রুত বেগ। তবু পাতলা একটি কাগজ চলার রাস্তায় পড়লে আলফা-পরমাণু দেহান্তর লাভ করে, সে হয়ে যায় হীলিয়ম গ্যাস। আরো কিছু বাধা লাগে বীটাকে থামিয়ে দিতে। রেডিয়ামের তুণে এই দুইটি ছাড়া আর-একটি রশ্মি আছে তার নাম গামা। সে পরমাণুবা অতিপরমাণু নয়, সে একটি বিশেষ আলোকরশ্মি। তার কিরণ স্থূল বস্তুকে ভেদ করে যেতে পারে, যেমন যায় র্যান্টগেন রশ্মি । এই সব তেজস্কণার ব্যবহার সকল অবস্থাতেই সমান, লোহা-গলানো গরমেও, গ্যাস-তরল করা ঠাণ্ডাতেও । তা ছাড়া তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আবার পূর্বের মতো দানা বেঁধে দেওয়া কারও সাধ্য নেই । পরমাণুর কেন্দ্ৰপিণ্ডটিতে যতক্ষণ-না কোনো লোকসান ঘটে ততক্ষণ দুটা-চারটি ইলেকট্রন যদি ছিনিয়ে নেওয়া যায় তা হলে তার বৈদ্যুতের বাধা বরাদে কিছু কমতি পড়তে পারে। কিন্তু অপঘাতটা সাংঘাতিক হয় না। যদি ঐ কেন্দ্রবন্ধটার খাস তহবিলে লুটপাট সম্ভব হয় তা হলেই পরমাণুর জাত 진 1 পরমাণুর নিজের মধ্যে একান্ত ঐক্য নেই। এ-খবরটা পেয়েই বিজ্ঞানীরা প্রথমটা আশা করেছিলেন যে, তারা তেজ-ফুড়ে মারা গোলন্দাজ রেডিয়মকে লাগবেন পরমাণুর মধ্যে ভেদ ঘটিয়ে তার