পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o রবীন্দ্র-রচনাবলী “সকল : এরা সকলেই চলে গেছে, কিংবা, চৌধুরীদের সকলকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। কিন্তু সকল শব্দের প্রয়োগ সব শব্দের চেয়ে সংকীর্ণ। এই প্রসঙ্গে আমাদের ভাষার একটা বিশেষ ভঙ্গির কথা বলি। সব শব্দের অর্থে কোনো দূষণীয়তা নেই, যত সর্বনাম শব্দটাও নিরীহ । কিন্তু দুটােকে এক করলে সেই জুড়িশব্দটা হয়ে ওঠে নিদর BBD S u SDDD DDD SDuDDDS TBDD DD DB DB BuD DuDDB BDBDB BSBS ভাষায় যেন মুখ সিট্রিকোতে আসে, যথা ; যত সব বান্দর, কিংবা কুঁড়ে, কিংবা লক্ষ্মীছাড়া। এখানে বলা উচিত। ঐ যত শব্দটার মধ্যেই আছে বিষ। “যত বীদের এক জায়গায় জুটেছে বললেই যথেষ্ট অকথ্য বলা হয়। লক্ষ্য করবার বিষয়টা এই যে, “যত শব্দটা একটা অসম্পূর্ণ সর্বনাম, “তত দিয়ে তবে এর সম্পূর্ণতা । ‘তত' বাদ দিলে “যত হয়ে পড়ে বেকার, লেগে যায় অনৰ্থক গালমন্দর কাজে । বাংলাভাষায় সর্বনামের খুব ঘটা । নানা শ্রেণীর সর্বনাম, যথা ব্যক্তিবাচক, স্থানবাচক, কালবাচক, পরিমাণবাচক, তুলনাবাচক, প্রশ্নবাচক । ‘মুই এক কালে উত্তমপুরুষ সর্বনামের সাধারণ ব্যবহারে প্রচলিত ছিল, প্রাচীন কাব্যগ্রন্থে তা দেখতে পাই । ‘আমহি ক্রমশ ‘আমি রূপ ধরে ওকে করলে কোণঠেসা, ও রইল গ্ৰাম্য ভাষার আড়ালে ; সেকালের সাহিত্যে ওকে দেখা গেছে দীনতা প্রকাশের কাজে, যেমন : মুঞি অতি অভাগিনী ! নিজের প্রতি অবজ্ঞা স্বাভাবিক নয়। তাই ওকে সংকোচে সরে দাড়াতে হল। কিন্তু মধ্যম পুরুষের বেলায় যথাস্থানে কুষ্ঠার কোনো কারণ নেই, তাই ‘তুই’ শব্দে বাধা ঘটে নি, নীচের বেঞ্চিতে ও রয়ে গেল। ‘তুই’ ‘তুমি-রূপে ভর্তি হয়েছে উপরের কোঠায় । এরও গৌরবার্থ অনেকখানি ক্ষয়ে গেল, বোধ করি নিবিচার সৌজন্যের আতিশয্যে । তাই উপরওয়ালাদের জন্যে আরো একটা শব্দের আমদানি করতে হয়েছে, "আপাই, থেকে ‘আপনি । আইনমতে মধ্যম পুরুষের আসন ওর নয়, ওর অনুবতী ক্রিয়াপদের রূপ দেখলেই তার প্রমাণ হয় । ‘তুমি’র বেলায় “আছা ; “আপনির বেলায় আছেন, এই শব্দটি যদি খাটি মধ্যমপুরুষ জাতীয় হত তা হলে ওর অনুচর ক্রিয়াপদ হতে পারত 'उानेि उाछ किश्वों 'उचाई । “আপনি শব্দের মূল হচ্ছে সংস্কৃত ‘আত্মান । বাংলায় প্রথমপুরুষেও স্বয়ং অর্থে এর ব্যবহার আছে, যেমন : সে আপনিই আপনার প্রভু। আত্মীয়কে বলা হয় "আপনি লোক” । হিন্দিতে সম্মানসূচক অর্থে প্ৰথমপুরুষ মধ্যম পুরুষ উভয়তই “আপ ব্যবহৃত হয়। বাংলাভাষায় উত্তমপুরুষে "আম-প্রত্যয়যুক্ত ক্রিয়াপদের ব্যবহার চলে, সে সম্বন্ধে কিছু বক্তব্য আছে । তার তিনরকম রূপ প্রচলিত : করলাম, করলুম, করলেম । করলাম” নদীয়া হতে শুরু করে বাংলার পূর্বে ও উত্তরে চলে থাকে। এর প্রাচীন রূপ দেখেছি : আইলাঙ কইলাঙ । আমরা দক্ষিণী বাঙালি, আমাদের অভ্যস্ত করলুম ও করলেম । উত্তমপুরুষের ক্রিয়াপদে সানুনাসিক উকার পদ্যে এখনো চলে, যেমন : হেরিনু করিনু । কলকাতার অপভাষায় করানু “খেনু ব্যবহার শোনা যায় ক্রিয়াপদে এই সানুনাসিক উ প্রাচীন সাহিত্যে যথেষ্ট পাই ; কেন গেলু কালিদীর কূলে, দুকুলে দিলী দুখ, মলু। মলু, সই। 'করলেম' শব্দের আলোচনা পরে করা যাবে। কৃত্তিবাসের পুরাতন রামায়ণে দেখেছি রাখিলোম প্ৰাণ । তেমনি পাওয়া যায়। ‘তুমির জায়গায় “তোমি । বাংলাভাষায় উকারে ওকারে দেনাপাওনা চলে এ তার প্রমাণ । প্ৰথমপুরুষের মহলে আছে ‘সে আর তিনি । রামমোহন রায়ের সময়ে দেখা যায় তিনি শব্দের সাধুভাবার প্রয়োগ “তেঁহ । মেয়েদের মুখে “তেনার ‘তেনীরা আজও শোনা যায়, ওটা “তেঁহ শব্দের কাছাকাছি। প্রাচীন রামায়ণে “র্তার “র্তাহার শব্দ নেই বললেই হয়, তার বদলে আছে তিনি “তাহান । নাকারের অনুনাসিকটা বহুবচনের রূপ। তাই সম্মানের চন্দ্ৰবিন্দুতিলকধারী বহুবচনায়াপী “তেঁহ ও “তিহাে (পুরাতন সাহিত্যে) হয়েছে। “তিনি ; গীেরবে তার রূপ বহুবচনের বটে, কিন্তু ব্যবহার একবচনের। তাই পুনর্বাের বহুবচনের আবশ্যকে রা বিভক্তি জুড়ে তাহা শব্দের রান্তা দিয়ে “তঁহারা শব্দ সাজানো হয়ে থাকে। সেইসঙ্গে যে ক্রিয়াপদটি তার দখলে তাতে আছে প্রাচীন নকিয়াত