পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eys রবীন্দ্র-রচনাবলী Sዓ হতে আর ‘থেকে এই দুটাে শব্দ বাংলা অপাদানের সম্বল। প্রাচীন হিন্দিতে হতে শব্দের জুড়ি পাওয়া যায় হন্তো, নেপালিতে ‘ভন্দা, সংস্কৃত ভবন্ত। প্রাচীন রামায়ণে দেখেছি; ঘরে হােন ভূমি R | অপভ্রংশ প্রাকৃতের অপাদানে পাওয়া যায় : হােতেও হােতেউ। “থেকে' শব্দটার ধ্বনিসাদৃশ্য পাওয়া যায় নেপালিতে, যেমন : “র্তাহ দেখি= সেখান থেকে, মােঝ দেখি=মাঝ থেকে ।” গুজরাটিতে আছে “থাকি । বাংলায় অপাদানে একটা গ্ৰাম্য প্রয়োগ আছে “ঠেঞে’ (ঠাই হতে), যথা : তোমার ঠেঞে কিছু আদায় করতে হবে। একদা পালি ব্যাকরণে পেয়েছিলুম ‘অজতগগে’ শব্দ। এর সংস্কৃত মূল “অদ্যতঃ অগ্ৰে' ; ‘আক্ত থেকে শব্দের সঙ্গে এর ধ্বনি ও অর্থের মিল আছে। জানি নে পণ্ডিতদের কাছে এ ইঙ্গিত গ্রাহ্য হবে Fil II এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে । 'পশুর থেকে মানুষের উৎপত্তি এ কথা বলা চলে। কিন্তু মানুষ থেকে গন্ধ বেরচ্ছে বলি নে, বলি “মানুষের গা থেকে' কিংবা 'কাপড় থেকে” । “বিপিন থেকে টাকা পেয়েছি বলা চলে না, বলতে হয় “বিপিনের কাছ থেকে টাকা পেয়েছি । এর কারণ, অচেতন পদার্থের নামের সঙ্গেই “থেকে' শব্দের সাক্ষাৎ সম্বন্ধ। তাই ‘মেঘ থেকে বৃষ্টি নামে, "পাখি থেকে গান ওঠে না, "পাখির কণ্ঠ থেকে গান ওঠে । । কেবল “থেকে' নয়, হতে” শব্দ-প্রয়োগেও ঐ একই কথা । ‘অযোধ্যা হতে রাম নির্বাসিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন ‘রাবণের কাছ হতে । তুলনামূলক অর্থেও ব্যবহৃত হয় : হতে থেকে চেয়ে চাইতে । অন্য প্রসঙ্গে সম্বন্ধপদের আলোচনা হয়ে গেছে। এক কালে বহুবচনে সম্বন্ধপদের ‘দিগের’ শব্দের পূর্বেও সম্বন্ধের আর-একটা বিভক্তি থাকত, যেমন ‘আমারদিগের । বাংলা সম্বন্ধপদের একটা প্ৰত্যয় আছে 'কার' । এর ব্যবহার সার্বত্রিক নয় । সময়বাচক ক্রিয়াবিশেষণে ‘এখন “তখন “যখন কখন এর সঙ্গে ‘কার’ জোড়া হয় । বিশেষ কোনো 'বেলাকার দিনকার রাতকারও চলে । “আজি’ এবং ‘কাল’ শব্দে কর্মকারকের বিভক্তির সঙ্গে যোগ করে ওর ব্যবহার ; আজকেকার কালকেকার । 'পৰ্ত্তকার, অমুক হস্তাকার, বা ‘বছরকার' হয়, কিন্তু অমুক HSBBDD SDB SaBBBS D KSS SBDBBBS DS SHDBBBS DDD DDSSS SDuBBBDDS DDS "মিথ্যাকার' হয় না । ভিতরকার বাহিরকার উপরকার নিচেকার। এদিককার ওদিককার এধারকার ওধারকার- চলে। ব্যক্তি বা বস্তুবাচক শব্দ সম্পর্কে এর ব্যবহার নেই। জিন' শব্দ যোগে সংখ্যাবাচক শব্দে 'কার' প্রয়োগ হয় : একজনকার দুজনকার । কিন্তু “জন ছাড়া মনুষ্যবাচক আর-কোনো শব্দের সঙ্গে ওরা যোগ নেই । ইংরেজাকার বলা চলে না । እbr হওয়া থাকা আর করা, এই তিন অবস্থাকে প্রকাশ করে ক্রিয়াপদে। আমি ধনী, তুমি পণ্ডিত- এ কথা ইংরেজিতে বলতে গেলে এর সঙ্গে হওয়া ক্রিয়াপদ যোগ করতে হয়, বাংলায় সেটা উহ্য আছে। ‘রাস্তািট সোজ’, ‘পুকুরটা গভীর, যখন বলি তখন সেটাতে তার নিত্য অবস্থা জানায় । কিন্তু “বর্ষায় পুকুর ঘোলা হয়েছে এটা আকস্মিক অবস্থা, তাই হওয়ার কথাটা তুলতে হয়। ওর লোভ হয়েছে, মনে হচ্ছে ওর ভর হবে- বাক্যগুলিও এইরকম । সাবেক বাংলায় বিশেষ্য বা সর্বনাম শব্দ-সহযোগে ইংরেজি is ও are-এর অনুরূপ প্রয়োগ পাওয়া যায় ; তুমি কে বটে, সে কে বটে, আমি রাজার বিয়ারি বটি । অচেতনবাচক শব্দেও চলত, যেমন :