পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের সঞ্চয় তুলিবার জন্য সে নিজের প্রতি কোনো জবরদস্তি করিতে পারে না। সে যাহা সে তাহা হইয়াই দেখা দেয় ; তাহকে গ্রহণ করা, তাহাকে ভোগ করা পাঠকেরই গন্নাজ । নিজের অনুভূতি ও সেই অনুভূতির বিষয়ের মাঝখানে কোনো মধ্যস্থ পদার্থের প্রয়োজন ও ব্যবধান না রাখিয়া কোনো কোনো মানুষ জন্মগ্ৰণ করেন, বিশ্বজগৎ ও মানবজীবনের রসকে তাহারা নিঃসংশয় ভরসার সহিত নিজের হৃদয়ের ভাষায় প্রকাশ করিতে পারেন ; তাহারাই নিজের সমসাময়িক কাব্যসাহিত্যের সমস্ত কৃত্রিমতাকে সাহসের সঙ্গে অতিক্রম করিয়া থাকেন। একদিন ইংরেজি সাহিত্যের কৃত্রিমতার যুগে বার্নস জমিয়াছিলেন। তিনি তাহার সমগ্ৰ হৃদয় দিয়া অনুভব করিয়াছিলেন ও প্রকাশ করিয়াছিলেন। এইজন্য তখনকার বাধা দত্তরের বেড়া ভেদ করিয়া స్టాగాళా অবরিত হৃদয় কাব্যসাহিত্যের মাঝখানে আসিয়া অসংকোচে আসন গ্ৰহণ এখনকার কাব্যসাহিত্যের যুগে কবি য়েটস যে বিশেষ সমাদর লাভ করিয়াছেন, তাহারও গোড়াকার কথাটা ঐ । তাহার কবিতা তাহার সমসাময়িক কাব্যের প্রতিব্বনির পন্থায় না গিয়া কবির নিজের হৃদয়কে প্রকাশ করিয়াছে। ঐ-যে নিজের হৃদয় বলিলাম ও কথাকে একটু বুধিয়া লইতে হইবে। হীরার টুকরা যেমন আকাশের আলোককে প্রকাশ করার দ্বারাই আপনাকে প্রকাশ করে তেমনি মানুষের হৃদয় কেবলমাত্র নিজের ব্যক্তিগত সত্তায় প্রকাশই পায় না, সেখানে সে অন্ধকার । যখনই সে আপনাকে দিয়া আপনার চেয়ে বড়োকে প্রতিফলিত করিতে পারে তখনই সেই আলোকে সে প্রকাশ পায় ও সেই আলোককে সে প্রকাশ করে। কবি প্লেটুসের কাব্যে আয়ািলন্ডের হৃদয় ব্যক্ত হইয়াছে। এ কথাটাকে আর-একটু পরিষ্কার করিয়া বলা উচিত। একই সূর্যের আলো নানা মেঘের উপর পড়িয়াছে কিন্তু মেঘখণ্ডগুলির অবস্থা ও অবস্থান অনুসারে তাহাতে ভিন্ন ভিন্ন রঙ ফলিয়া উঠিয়াছে। কিন্তু, এই রঙের ভিন্নতা পরস্পরের বিরুদ্ধ নহে ; তাহারা আপন আপন বৈচিত্র্যের দ্বারাই সকলের সঙ্গে সকলে মিলিতে পারিতেছে। রঙ-করা তুলা প্ৰাণপণে মেঘের নকল করিয়াও মিলিতে পারিত 可同 তেমনি আয়ার্লভূই বলো, স্কটুলভাই বলো, বা অন্য যে-কোনো দেশই বলো, সেখানকার জনসাধারণের চিত্তে বিশ্বজগতের আলো এমন করিয়া পড়ে যাহাতে সে একটা বিশেষ রঙ ফলাইয়া তুলে। বিশ্বমানবের চিদাকাশ এমনি করিয়াই বর্ণবৈচিত্র্যে সুন্দর হইয়া উঠিতেছে। কবি ভাবের আলোককে কেবল প্ৰকাশ করেন তাহা নহে, তিনি যে দেশের মানুষ সেই দেশের হৃদয়ের রঙ দিয়া তাহাকে একটু বিশেষ ভাবে সুন্দর করিয়া প্রকাশ করেন। সকলেই যে করিতে পারেন তাহা বলি না, কিন্তু যিনি পারেন। তিনি ধন্য । আমাদের দেশে বৈষ্ণব-পদাবলি বাঙালি-কাব্য রূপেই বিশ্বকাব্য। তাহা বিশ্বের জিনিস বিশ্বকে দিতেছে, কিন্তু তাহারই মধ্যে নিজের একটা রস যোগ করিয়া দিতেছে ; নিজের একটি রূপের পাত্রে তাহকে ভরিয়া দিতেছে। সংসারের রণক্ষেত্রে লড়াই করা যাহার ব্যবসায় তাহাকে কবচ পরিতে হয় ; তাহাকে সংসারের সমন্ত আবরণ আচ্ছাদন গ্ৰহণ করিতে হয় ; নহলে পদে পদে চারি দিক হইতে তাহকে আঘাত লাগে। কিন্তু, আপনাকে সম্পূর্ণরূপে প্ৰকাশ করা যাহার কাজ, আবরণের অভাবই তাহার যথার্থ সজা। কবিয়োটুসের সঙ্গে আলাপ করিয়া আমার ঐ কথাই মনে হইতেছিল। এই একটি মানুষ, ইনি নিজের চিত্তের অবারিত স্পর্শ শক্তি দিয়া জগৎকে গ্ৰহণ করিতেছেন। মানুষ নানা শিক্ষার ভিতর দিয়া, অভ্যাসের ভিতর দিয়া, অনুকরণের ভিতর দিয়া, যেমন করিয়া চারিদিককে দেখে এ দেখা তেমন দেখা R যখনই কোনো মানুষ এইপ্ৰকার অব্যবহিত ভাবে জগৎকে দেখে ও তাহার খবর দেয় তখন দেখিতে পাই মানুষের পুরাতন অভিজ্ঞতার সঙ্গে অহার একটা মিল আছে;তাহা খাপছাড়া নহে। যাহারা সরল চক্ষে দেখিয়াহে সকলেই এমনি করিয়া দেখিয়াছে। বৈদিক কবিয়াও জলে স্থলে প্ৰাণকে দেখিয়াছেন, EYLLB BBD BB S BBDDBBDBSBB D BLBLLSBBBBS BBBD BuDDBBBB