পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tr . রবীন্দ্র-রচনাবলী অন্ধতা-বশতই আমরা বুঝিতে পারি না। এখানে প্রত্যেক পত্রিই যে আকৃত্রিম নিষ্ঠার সহিত খৃস্টানধর্মের আদর্শনিজের জীবনে গ্ৰহণ করিয়াছে। এ কথা আমি বিশ্বাস করি না ; কিন্তু ইহারা বংশগত পত্রি নহে, সমাজের কাছে ইহানের জবাবদিহি আছে, নিজের চরিত্রকে আচরণকে ইহারা কলুবিত করিতে পারে না- সুতরাং আর-কিছুই না হােক, সেই নির্মল চরিত্রের, সেই ধৰ্মনৈতিক সাধনার সুরটিকে যথাসাধ্য দেশের কাছে ইহারা ধরিয়া রাখিয়াছে। শাস্ত্ৰে যাহাঁই বলুক, ব্যবহারত অর্ধামিক ব্ৰাহ্মণকে দিয়া ধর্মকর্মকরাইতে আমাদের সমাজের কিছুমাত্ৰ লাজ সংকোচ নাই। ইহাতে ধর্মের সঙ্গে পুণ্যের আন্তরিক বিচ্ছেদ না ঘটিয়া থাকিতে পারে না- ইহাতে আমাদের মনুষ্যত্বকে আমরা প্রত্যহ অবমানিত করিতেছি । এখানে অধাৰ্মিক পত্রিকে সমাজ কখনোই ক্ষমা করিবে না ; সে পাদ্রি হয়তো ভক্তিমান না হইতে পারে, কিন্তু তাহকে চরিত্রবান হইতেই হইবে- এই উপায়েই সমাজ নিজের মনুষ্যত্বের প্রতি সন্মান রক্ষা করিতেছে এবং নিঃসন্দেহই চরিত্রসম্পদে তাহার পুরস্কার লাভ করিতেছে। তাই বলিতেছিলাম, এখানকার পাদ্রির দল সমস্ত দেশের জন্য একটা ধৰ্মনৈতিক মেটা-ভাত মোটা-কাপড়ের ব্যবস্থা করিয়াছে। কিন্তু, সেইটুকুতেই তো সন্তুষ্ট হওয়ার কথা নহে। সমস্ত দেশের সামনে ক্ষণে ক্ষণে যে বড়ো বড়ো ধৰ্মসমস্যা উপস্থিত হয় খৃস্টের বাণীর সঙ্গে সুর মিলাইয়া পাদ্রিরা তো তাহার মীমাংসা করেন না। দেশের চিত্রের মধ্যে খৃস্টকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া রাখিবার যে ভার তাহারা লইয়াছেন, এইখানে পদে পদে তাহার ব্যত্যয় দেখিতে পাই। যখন বোয়ার-যুদ্ধ উপস্থিত হইয়াছিল তখন সমস্ত দেশের পত্রিরা তাহার কিরূপ বিচার করিয়ছিলেন। এই যে পারস্যকে দুই টুকরা করিয়া কুটিয়া ফেলিৱার জন্য যুরোপের দুই মোটা মোটা গৃহিণী বঁটি পাতিয়া বসিয়াছেনপাদ্রিরা চুপ করিয়া আছেন কেন। ভারতবর্ষে কুলি সংগ্রহ ব্যাপারে, কুলি খাটাইবার ব্যবস্থায়, সেখানকার শাসনতন্মে, সেখানে দেশীয়দের প্রতি ইংরেজের ব্যবহারে এমনকি কোনো অবিচার ঘটে না। যাহাতে খুস্টের নাম লইয়া তাহারা সকলে মিলিয়া দুর্বল অপমানিতের পাশে আসিয়া দাড়াইতে পারেন। তেমন স্বগীয় দৃশ্য কি আমরা দেখিয়ছি। ইংরেজিতে ‘পয়সার বেলায় পাকা টাকার বেলায় বোকা’ বলিয়া একটা চলতি কথা আছে, বড়ো বড়ো খৃস্টানদেশের ধর্মনৈতিক আচরণে আমরা তাহার পরিচয় প্রতিদিন পাইতেছি ; তাহারা ব্যক্তিগত নৈতিক আদর্শকে আঁটি করিয়া রাখিতে চান। অথচ সমন্ত জাতি বৃহবন্ধ হইয়া এমন সকল প্ৰকাণ্ড পাপাচরণে নির্লজভাবে প্ৰবৃত্ত হইতেছেন যাহাতে সুদূরব্যাপী দেশ ও কালকে আশ্ৰয় করিয়া দুর্বিবহ দুঃখদুর্গতির সৃষ্টি করিতেছে ; এমন দুদিনে অনেক মহাত্মাকে স্বজাতির এই সর্বজনীন শয়তানির বিরুদ্ধে নিৰ্ভয়ে লড়িতে দেখিয়ছি, কিন্তু তাহদের মধ্যে পাদ্রি কয়জন। এমনকি, গণনা করিলে দেখা যাইবে, তাহদের মধ্যে অধিকাংশই প্রচলিত ধৃস্টানধর্মে আহ্বান নহেন। অথচ চার্চের চিরপ্ৰথা সন্মত কোনো বাহা পূজাবিধিতে সামান্য একটু নড়াচড় ঘটাইলে সমস্ত পান্ত্রিসমাজে বিষম হুলুমুল পড়িয়া যায়। এইজনাইকি যিশু তাহার রক্ত দিয়াছিলেন। জগতের সম্মুখে ইহা কোন সুসমাচার প্রচার করিতেছে। খৃস্টানদেশের পান্ত্রির দল স্বজাতির ‘ধর্মী তহবিলের সিকিপয়সা আধিপয়সা আগলাইয়া বসিয়া আছেন, কিন্তু বড়ো বড়ো ‘কোম্পানির • কাগজ যুঁকিয়া দিবার বেলায় তাহদের ইশ নাই৷র্তাহারা উহাদের দেবতাকে কড়ির মূল্যে সন্মান করেন ও মোহরের মূল্যে অপমানিত করিয়া থাকেন, ইহাই প্রতিদিন দেখিতেছি। পত্রিদের মধ্যে এমন মহদাশয় আছেন ধ্যাহারা আকৃত্রিম বিশ্ববন্ধু, কিন্তু সে তাহদোয় ব্যক্তিগত মাহাম্য। কিন্তু, দলের দিকে তাকাইলে এই কথা মনে আসে যে, ধর্মকে দলের হতে সমৰ্পণ করিলে তাহকে খানিকটা পরিমাণে Buu TB BB BBLLLLLL LLLLL LLLLLML D BB BDLS BBB DBDBBuB LBLLDLB BSKM বিষয়ে ভালো হইলেও তাঁহাতে জাতের বিষ খানিকটা থাকিয়া যায় ও তাহাজমিয়া উঠিতে থাকে। ধর্ম মানুষকে মুক্তি দেয়, এইজন্য ধর্মকে সকলের চেয়ে মুক্ত রাখা চাই ; কিন্তু ধর্ম যেখানে দলের বেড়ায় আটকা পড়ে সেখানেই ক্রমশ তাহার ছোটাে দিকটাই বড়ো দিকের চেয়ে বড়ো হইয়া উঠে, বহিরের জিনিস অন্তরের জিনিসকে আদহীয় করে ও যাহা সাময়িক তাহানিত্যকে পীড়াদিতে থাকে। এইজন্যই