পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

08 রবীন্দ্র-রচনাবলী ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়েছি যৌবনের সদর দরজায়। আবার ফিরতে হল সেই ছেলেবেলার সীমানার দিকে | এবার বোলো বছর বয়সের হিসাব দিতে হচ্ছে। তার আরম্ভের মুখেই দেখা দিয়েছে ভারতী” । আজকাল দেশে চারদিকেই ফুটে ফুটে উঠছে কাগজ বের করবার টগবগানি। বুঝতে পারি সে নেশার জোর, যখন ফিরে তাকাই সেদিনকার খোপামির দিকে । আমার মতো ছেলে যার না ছিল বিদ্যে, না। ছিল সাধি, সেও সেই বৈঠকে জায়গা জুড়ে বসল, অথচ সেটা কারো নজরে পড়ল না- এর থেকে জানা যায়, চার দিকে ছেলেমানুযি হওয়ার যেন ঘুর লেগেছিল। দেশে একমাত্র পাকা হাতের কাগজ তখন দেখা দিয়েছিল বঙ্গদর্শন। আমাদের এ ছিল। কঁচাপাকা ; বড়দাদা, যা লিখছেন তা লেখাও যেমন শক্ত বোঝাও তেমনি, আর তারই মধ্যে আমি লিখে বসলুম এক গল্প - সেটা যে কী বকুনির সুদুল তার যাচাই করবার বয়স ছিল না, বুঝে দেখবার 05N GRAN TSRS VONN 33 ୩୩ ଗ୍ଧ । এইখানে বড়দাদার কথাটা বলে নেবার সময় এল। জ্যোতিদাদার আসর ছিল তেতালার ঘরে, আর বড়দাদার ছিল আমাদের দক্ষিণের বারান্দায়। এক সময়ে তিনি ডুবেছিলেন আপন-মনে ভারী ভারী তত্ত্বকথা নিয়ে, সে ছিল আমাদের নাগালের বাইরে । যা লিখতেন, যা ভাবতেন, তা শোনাবার লোক ছিল কম। যদি কেউ রাজি হয়ে ধরা দিত। তাকে উনি ছাড়তে চাইতেন না, কিংবা সে ঔকে ছাড়ত না- ওঁর উপর যা দাবি করত। সে কেবল তত্ত্বকথা শোনা নিয়ে নয়। একটি সঙ্গী বড়দাদার জুটেছিলেন, তার নাম জানি নে, তাকে সবাই ডাকত ফিলজফার বলে। অন্য দাদারা তাকে নিয়ে হসাহসি করতেন কেবল তার মাটনচপের 'পরে লোভ নিয়ে নয়, দিনের পর দিন তার নানা রকমের জরুরি দরকার নিয়ে। দর্শনশাস্ত্র ছাড়া বড়দাদার শখ ছিল গণিতের সমস্যা বানানাে। অন্ধচিহ্নওয়ালা পাতাগুলো দক্ষিনে হাওয়ায় উড়ে বেড়াত বারান্দাময়। বড়দাদা গান গাইতে পারতেন না, বিলিতি বঁশি বাজাতেন, কিন্তু সে গানের জন্য নয়- অঙ্ক দিয়ে এক-এক রাগিণীতে গানের সুর মেপে নেবার জন্যে। তার পরে এক সময়ে ধরলেন “স্বপ্নপ্ৰয়াণ লিখতে। তার গোড়ায় শুরু হল ছন্দ বানানো। সংস্কৃত ভাষার ধ্বনিকে বাংলা ভাষার ধ্বনির বাটখারায় ওজন করে করে সাজিয়ে তুলতেন— তার অনেকগুলো রেখেছেন, অনেকগুলি রাখেন নি, ছেড়া পাতায় ছড়াছড়ি গেছে। তার পরে কাব্য লিখতে লাগলেন ; যত লিখে রাখতেন তার চেয়ে ফেলে দিতেন। অনেক বেশি । যা লিখতেন তা সহজে পছন্দ হত না। তার সেই সব ফেলাছড়া লাইনগুলো কুড়িয়ে রাখবার মতো বুদ্ধি আমাদের ছিল না। যেমন যেমন লিখতেন শুনিয়ে যেতেন, শোনবার লোক জমত র্তার চার দিকে । আমরা বাড়িসুদ্ধ সবাই মেতে গিয়েছিলুম এই কাব্যের রসে । পড়ার মাঝে মাঝে উচ্চহাসি উঠিত উথলিয়ে। র্তার হাসি ছিল আকাশ-ভরা ; সেই হাসির ঝোকের মাথায় কেউ যদি হাতের কাছে থাকত তাকে চাপড়িয়ে অস্থির করে তুলতেন । জোড়াসকের বাড়ির প্রাণের একটি ঝরনাতলা ছিল এই দক্ষিণের বারান্দা, শুকিয়ে গেল এর শ্ৰোত, বড়দাদা চলে গেলেন শান্তিনিকেতন আশ্রমে। আমার কেবল মাঝে মাঝে মনে পড়ে, ঐ বারান্দার সামনেকার বাগানে মন-কেমন-করা শরতের রোদন্দুর ছড়িয়ে পড়েছে, আমি নতুন গান তৈরি করে গাচ্ছি। “আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে কী জানি পরান কী যে চায় । আর মনে আসে একটি তপ্ত দিনের বঁা বঁটা দুই প্রহরের গান হেলাফেলা সারাবেল এ কী খেলা। আপনি সনে । বড়দাদার আর-একটি অভ্যাস ছিল চোখে পড়বার মতো, সে তার সীতার কাটা । পুকুরে নেমে কিছু না হবে তো পঞ্চাশ বার এপার-ওপার করতেন। পেনেটির বাগানে যখন ছিলেন তখন গঙ্গা » eቻዋዞማ ፬ማማ $Sw8 [ ኳR ›brፃፃ ] ২। দ্বিজেন্দ্ৰনাথ ঠাকুর ० डिथमिीं- छानी, बावन-डाय ४२vs ; शायद 8, १ ९११ ।