পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে কথা জানত নবনী, সে পণ করেছিল হৃদয় জয় করবে। প্ৰাণপণ সাধনায় । কুশল মাঝে মাঝে রুচিতে বুদ্ধিতে উচাট খেয়ে ওকে হঠাৎ বলেছে। রাঢ় কথা, ও সায়েছে চুপ করে ; মেনে নিয়েছে নিজেকে অযোগ্য বলে, ওর নালিশ নিজেরই উপরে । ভেবেছিল দীনা বলেই একদিন হবে ওরা জয়, ঘাস যেমন দিনে দিনে নেয় ঘিরে কঠোর পাহাড়কে । এ যেন ছিল ওর ভালোবাসার শিল্পরচনা, নির্দয় পাথরটাকে ভেঙে ভেঙে রাপ আবাহন করা ব্যথিত বক্ষের নিরন্তর আঘাতে । আজ নবনীর সেই দিনরাতের আরাধনার ধন গেল দুরে । , ওরা দুঃখের থালাটি ছিল অশ্রদ্ধা-ভেজা অর্ঘ্যে ভরা, আজ থেকে দুঃখ রইবে কিন্তু দুঃখের নৈবেদ্য রইবে না । এখন ওদের সম্বন্ধের পথ রইল শুধু এ পারে ও পারে চিঠি লেখার সাকো বেয়ে । কিন্তু নবনী তো সাজিয়ে লিখতে জানে না মনের কথা, ও কেবল যত্বের স্বাদ লাগাতে জানে সেবাতে, অরকিডের চমক দিয়ে যেতে ফুলদানির পরে গোপনে বিছিয়ে আসতে নিজের-হাতে-কাজ-করা আসন যেখানে কুশল পা রাখে । কুশল ফিরল দেশে, বিয়ের দিন করল স্থির । আঙটি এনেছে বিলেত থেকে, গেল সেটা পরাতে ; গিয়ে দেখে ঠিকানা না রেখেই নবনী নিরুদেশ । আজ সে হারিয়েছে প্ৰিয়াকে, কিন্তু মন গেল না চিঠিগুলি হারাতেওর মমতাজ পালালো, রইল। তাজমহল । , নাম লুকিয়ে ছাপালো চিঠি ‘উদভ্ৰান্তপ্রেমিক” আখ্যা দিয়ে । Y a