পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Stro রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী নবনীর চরিত্র নিয়ে বিশ্লেষণ ব্যাখ্যা হয়েছে বিস্তর । , কেউ বলেছে, বাঙালির মেয়েকে লেখক এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ইবসেনের মুক্তিবাণীর দিকে- | কেউ বলেছে, রসাতলে । অনেকে এসেছে আমার কাছে জিজ্ঞাসা নিয়ে ; আমি বলেছি, “আমি কী জানি ।” বলেছি, “শাস্ত্ৰে বলে, দেবা ন জানন্তি ।” পাঠকবন্ধু বলেছে, “নারীর প্রসঙ্গে নাহয় চুপ করলেম হতবুদ্ধি দেবতারই মতো, কিন্তু পুরুষ ? তারও কি অজ্ঞাতবাস চির রহস্যে । ও মানুষটা হঠাৎ পোষ মানলে কোন মন্ত্রে ।” আমি বলেছি, “মেয়েই হােক আর পুরুষই হােক ; স্পষ্ট নয় কোনো পক্ষই ; যেটুকু সুখ দেয় বা দুঃখ দেয় স্পষ্ট কেবল সেইটুকুই । প্রশ্ন কোরো না, পড়ে দেখো কী বলছে কুশল ।” কুশল বলে, “নবনী চার বছর ছিল দৃষ্টির বাইরে, যেন নেমে গেল সৃষ্টির বাইরোতেই ; ওর মাধুৰ্যটুকুই রইল মনে, আর সবা-কিছু হল গৌণ । সহজ হয়েছে। ওকে সুন্দর ছাদে চিঠি লিখতে । অভাব হয়েছে, করেছি। দাবি ওরা ভালোবাসার উপর অবাধ ভরসা। মনকে করেছে রসসিক্ত, করেছে গর্বিত । প্ৰত্যেক চিঠিতে আপন ভাষায় ভুলিয়েছি আপনারই মন । লেখার উত্তাপে ঢালাই করা অলংকার ওর স্মৃতির মূর্তিটিকে সাজিয়ে তুলেছে দেবীর মতো । ও হয়েছে নূতন রচনা । এইজন্যেই খাস্টান শাস্ত্ৰে বলে, সৃষ্টির আদিতে ছিল বাণী ।”