পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী وك (SS যদি—বা ভেঙেছে ক্ষণিক মোহের ভুল এখনো প্ৰাণে কি যাবে না মানের মূল ? যাহা খুঁজিবার সাঙ্গ হল তো খোজা, যাহা বুঝিবার শেষ হয়ে গেল বোঝা, তবু কেন হেন সংশয়ঘনছায়ে মনের কথাটি নীরব মনে লুকায় রে ? তৃতীয় দৃশ্য লোকারণ্য। শঙ্খ । হুলুধ্বনি । সানাই নিবারণ ও শিবচরণ নিবারণ । কানাই ! ও কানাই ! কী করি বলো দেখি ! কানাই গেল কোথায় ? শিবচরণ । তুমি ব্যস্ত হােয়ো না ভাই ! এ ব্যস্ত হবার কাজ নয় । আমি সব ঠিক করে দিচ্ছি। তুমি পাত পাড়া হল কি না দেখে এসো দেখি । ভূত্য । বাবু, আসন এসে পৌচেছে, সেগুলো রাখি কোথায় ? নিবারণ | এসেছে ! বঁাচা গেছে । তা সেগুলো ছাতেশিবচরণ । ব্যস্ত হচ্ছে কেন দাদা ! কী হয়েছে বলো দেখি । কী রে বেটা, তুই হা করে দাড়িয়ে রয়েছিস কেন ? কাজকর্ম কিছু হাতে নেই নাকি ? ভূত্য । আসন এসেছে, সেগুলো রাখি কোথায় তাই জিজ্ঞাসা করছি । শিবচরণ। আমার মাথায়! একটু গুছিয়ে-গাছিয়ে নিজের বৃদ্ধিতে কাজ করা, তা তোদের দ্বারা হবে না। চল, আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। ওরে বাতিগুলো যে এখনাে জ্বালালে না। এখানে কোনাে কাজেরই একটা বিলিব্যবস্থা নেই- সমস্ত বেবন্দোবস্ত । নিবারণ, ভাই, তুমি একটু ঠাণ্ডা হয়ে বোসো দেখি-- ব্যস্ত হয়ে বেড়ালে কোনো কাজই হয় না । আঃ, বেটাদের কেবল ফাকি ! বেহারিা বেটারা সব পালিয়েছে দেখছি, আচ্ছা করে তাদের কানমলা না দিলে— নিবারণ ৷ পালিয়েছে নাকি ! কী করা যায় ? শিবচরণ | ব্যস্ত হােয়ো না ভাই- সব ঠিক হয়ে যাবে । বড়ো বড়ো ক্রিয়াকর্মের সময় মাথা ঠাণ্ডা রাখা ভারি দরকার । কিন্তু এই রোধো বেটার সঙ্গে তো আর পারি। নে ! আমি তাকে পইপই করে বললুম “তুমি নিজে দাড়িয়ে থেকে লুচি ভাজিয়ো”, কিন্তু কাল থেকে হতভাগা বেটার চুলের টিকি দেখবার জো নেই ! লুচি যেন কিছু কম পড়েছে বোধ হচ্ছে । নিবারণ | বলো কী শিবু ! তা হলে তো সর্বনাশ ! শিবচরণ । ভয় কী দাদা ! তুমি নিশ্চিন্তে থাকো, সে আমি করে নিচ্ছি। একবার রাধুর দেখা পেলে হয়, আচ্ছা করে শুনিয়ে দিতে হবে । নিবারণ । আহার প্রস্তুত চন্দ্ৰবাবু, কিছু খাবেন চলুন । চন্দ্ৰকান্ত । আমাদের পরে হবে, আগে সকলের হােক । শিবচরণ । না না, একে একে সব হয়ে যাক । চলো চন্দর, তোমাদের খাইয়ে আনি গে । নিবারণ,