পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮২

O রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ܘ ܔ বিভা । বুক ফেটে গেল দাদা, বুক ফেটে গেল । উদয় । দুঃখ করিস নে বিভা, যে গেছে সে সুখে গেছে। এ বাড়িতে এসে সেই সোনার লক্ষ্মী এই আজ প্ৰথম আরাম পেল । ওখানে কিসের গোলমাল । (বাতায়ন হইতে নীচে চাহিয়া) প্ৰজারা এসেছে দেখছি। ওদের বিদায় করে দিয়ে আসি-গে । [প্ৰস্থান -ऋ, তৃতীয় দৃশ্য নীচের আঙিনায় মাধবপুরের প্রজাদল প্ৰথম । (উচ্চস্বরে) আমরা এখানে হত্যা দিয়ে পড়ে থাকব । দ্বিতীয় । আমরা এখানে না খেয়ে মরব । প্রহরীর প্রবেশ প্রহরী । এরা সব বৈরাগী ঠাকুরের চেলা, এদের গায়ে হাত দিতে ভয় করে । কিন্তু যেরকম গোলমাল লাগিয়েছে, এখনই মহারাজের কানে যাবে- মুশকিলে পড়ব । কী বাবা, তোমরা মিছে চেচামেচি করছি কেন বলো তো । সকলে । আমরা রাজার কাছে দরবার করব । প্রহরী । আমার পরামর্শ শোন বাবা, দরবার করতে গিয়ে মরবি । তোরা নেহাত ছোটাে বলেই মহারাজ তোদের গায়ে হাত দেন নি, কিন্তু হাঙ্গামা যদি করিস তো একটি প্ৰাণীও রক্ষা পাবি নে । প্ৰথম । আমরা আর তো কিছুই চাই নে, যে গারদে বাবা আছেন আমরাও সেখানে থাকতে চাই । প্রহরী । ওরে, চাই বললেই হবে এমন দেশ এ নয় । দ্বিতীয় । আচ্ছা, আমরা আমাদের যুবরাজকে দেখে যাব । প্রহরী । তিনি তোদের ভয়েই লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন। তৃতীয় । তাকে না দেখে আমরা যাব না । সকলে । (উর্ধর্বস্বরে) দোহাই যুবরাজ বাহাদুর । উদয়াদিত্যের প্রবেশ উদয় । আমি তোদের হুকুম করছি তোরা দেশে ফিরে যা । প্রথম । তোমার হুকুম মানব- আমাদের ঠাকুরও হুকুম করেছে, তার হুকুমও মানব- কিন্তু তোমাকে আমরা নিয়ে যাব । উদয় । আমায় নিয়ে কী হবে । প্ৰথম । তোমাকে আমাদের রাজা করব । সু। তাদের তাে বড়ো আস্পৰ্থ হয়েছে। এমন কথা মুখে আনিস। তাদের কিমবার জায়গ N দ্বিতীয় । মরতে হয় মরব, কিন্তু আমাদের আর দুঃখ সহ্য হয় না । তৃতীয় । আমাদের যে বুক কেমন করে ফাটছে তা বিধাতাপুরুষ জানেন । চতুর্থ। রাজা, তোমার দুঃখে আমাদের কলিজা জ্বলে গেল । পঞ্চম । আমরা জোর করে নিয়ে যাব, কেড়ে নিয়ে যাব ।