পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6iნჯIQკნდ VSVS)J বৃহৎমস্তক গভীরমুখ শ্যামবর্ণ ছেলেটার মধ্যে এমন কী আছে যেজন্য তাহার প্রতি এতটা স্নেহের অপব্যয় করা হইতেছে । r ভালোবাসার ভাবগতিক মেয়েরা খুব চট করিয়া বোঝে । শশী অবিলম্বেই বুঝিল, জয়গোপাল নীলমণির প্রতি বিশেষ অনুরক্ত নহে । তখন ভাইটিকে সে বিশেষ সাবধানে আড়াল করিয়া রাখিত— স্বামীর স্নেহহীন বিবাগ দৃষ্টি হইতে তাহাকে তফাতে রাখিতে চেষ্টা করিত । এইরূপে ছেলেটি তাহার গোপন যত্যুের ধন, তাহার একলার স্নেহের সামগ্ৰী হইয়া উঠিল । সকলেই জানেন, স্নেহ যত গোপনের, যােত নির্জনের হয় ততই প্রবল হইতে থাকে । মধ্যে চাপিয়া সমস্ত প্ৰাণ দিয়া, বুক দিয়া, তাহার কান্না থামাইবার চেষ্টা করিত— বিশেষত, নীলমণির কান্নায় যদি রাত্রে তাহার স্বামীর ঘুমের ব্যাঘাত হইত এবং স্বামী এই ক্ৰন্দনপরায়ণ ছেলেটার প্রতি অত্যন্ত হিংস্রভাবে ঘূণা প্রকাশ্যপূর্বক জর্জর চিত্তে গর্জন করিয়া উঠিত তখন শশী যেন অপরাধিনীর মতো সংকুচিত শশব্যস্ত হইয়া পড়িত ; তৎক্ষণাৎ তাহাকে কোলে কবিয়া দূরে লইয়া গিয়া একান্ত সানুনয় স্নেহের স্বরে ‘সোনা আমার, ধন আমার, মানিক আমার বলিয়া ঘুম পাড়াইতে থাকিত । ছেলেতে ছেলেতে নানা উপলক্ষে ঝগড়া বিবাদ হইয়াই থাকে । পর্বে এরূপ স্থলে শশী নিজের ছেলেদের দণ্ড দিয়া ভাইয়ের পক্ষ অবলম্বন কবিত, কারণ, তাহার মা ছিল না } এখন বিচারকের সঙ্গে সঙ্গে দণ্ডবিধির পরিবর্তন হইল ! এখন সৰ্ব্বদাই নিরপরাধে এবং অবিচারে নীলমণিকে কঠিন দণ্ড ভোগ করিতে হইত । সেই অন্যায় শশীর বক্ষে শেলের মতো বাজিত : তাই সে দণ্ডিত ভ্ৰাতাকে ঘরে লইয়া BuB uBBBS BuBuBB BBS SBSBBSBB BBBS BuBB SBBBS SHBB DBuu yB BuDuB BBB BBBB সাসুনঃ বিধান করিবার চেষ্টা ক্ষরিত ! DBDDJJ SJDSS 00BDSyT BuuBuBmBB BBSDD SBDBuBuBBuB BBDBBBBD BBuBBB uBueuB Su eLeuBuD BBD হয়, আবার জয়গোপাল নীলমণির প্রতি যতই বিরাগ প্রকাশ করে শশী তাহাকে তােতই স্নেহসুধায় w r. বিয়া দিতে থাকে । জয়গোপাল লোকটা কখনো তাহাব স্ত্রীর প্রতি কোনোরূপ কঠোর ব্যবহার করে না এবং শশী নীরবে নম্রভাবে প্রীতির সহিত তাহার স্বামীর সেবা করিয়া থাকে ; কেবল এই নীলমণিকে লইয়া ভিতরে ভিতরে উভয়ে উভয়কে অহরহ আঘাত দিতে লাগিল । এইরূপ নীরব দ্বন্দ্বের গোপন আঘাতপ্রতিঘাত প্ৰকাশ্য বিবাদের অপেক্ষা ঢের বেশি দুঃসহ। তৃতীয় পরিচ্ছেদ নীলমণির সমস্ত শরীরের মধ্যে মাথাটাই সর্বপ্রধান ছিল । দেখিলে মনে হইত, বিধাতা যেন একটা সরু। কাঠির মধ্যে ফু দিয়া তাহার ডগার উপরে একটা বড়ো বুদবুদ ফুটাইয়া তুলিয়াছেন । ডাক্তাররাও মাঝে মাঝে আশঙ্কা প্ৰকাশ করিত, ছেলেটি এইরূপ বুদবুদের মতোই ক্ষণভঙ্গুর ক্ষণস্থায়ী হইবে । অনেকদিন পর্যন্ত সে কথা কহিতে এবং চলিতে শেখে নাই। তাহার বিষন্ন গভীর মুখ দেখিয়া বোধ হইত, তাহার পিতামাতা তাহাদের অধিক বয়সের সমস্ত চিন্তাভার এই ক্ষুদ্র শিশুর মাথার উপরে চাপাইয়া দিয়া গেছেন । দিদির যত্নে ও সেবায় নীলমণি তাহার বিপদের কাল উত্তীর্ণ হইয়া ছয় বৎসরে পা দিল । কার্তিক মাসে ভাইফোটার দিনে নূতন জামা চাদর এবং একখানি লালপোড়ে ধুতি পরাইয়া বাবু সাজাইয়া নীলমণিকে শশী ভাইফোটা দিতেছেন এমন সময়ে পূর্বোক্ত স্পষ্টভাষিণী প্রতিবেশিনী তারা আসিয়া কথায় কথায় শশীর সহিত ঝগড়া বাধাইয়া দিল ।