পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ, WOG Gł এসেছ- কেন এসেছি তোমরা”- অবশেষে আর কোনো কথা জুটিল না- বাকীরুদ্ধ হইয়া মুখে, का9छ निग्रा दांत्रिग्रा टर्लिन । قی কোথায় গেল আমার হাস্যাবেগ । আমি যে কাজটি করিয়াছি তাহার মধ্যে কৌতুক ছাড়া আর যে, কিছু ছিল এতক্ষণ তাহা আমার মাথায় আসে নাই। হঠাৎ দেখিলাম, অত্যন্ত কোমল স্থানে অত্যন্ত কঠিন আঘাত করিয়াছি ; হঠাৎ আমার কৃতকার্যের বীভৎস নিষ্ঠুরতা আমার সম্মুখে দেদীপ্যমান হইয়া উঠিলা- লজ্জায় এবং অনুতাপে পদাহিত কুকুরের ন্যায় ঘর হইতে নিঃশব্দে বাহির হইয়া গেলাম । বৃদ্ধ আমার কাছে কী দোষ করিয়াছিল । তাহার নিরীহ অহংকার তো কখনো কোনো প্ৰাণীকে আঘাত করে নাই । আমার অহংকার কেন এমন হিংস্ৰমূর্তি ধারণা করিল। তাহা ছাড়া আর একটি বিষয়ে আজ হঠাৎ দৃষ্টি খুলিয়া গেল । এতদিন আমি কুসুমকে কোনো অবিবাহিত পাত্রের প্রসন্নদৃষ্টিপাতের প্রতীক্ষায় সংরক্ষিত পণ্যপদার্থের মতো দেবিতাম ; ভাবিতাম, আমি পছন্দ করি নাই বলিয়া ও পডিয়া আছে, দৈবাৎ যাহার পছন্দ হইবে ও তাঁহারই হইবে । আজ দেখিলাম, এই গৃহকোণে ঐ বালিকা-মূর্তির অন্তরালে একটি মানবহৃদয় আছে। তাহার নিজের সুখদুঃখ অনুরাগবিরাগ লইয়া একটি অন্তঃকরণ এক দিকে অজ্ঞেয় অতীত আর-এক দিকে অভাবনীয় ভবিষ্যৎ-নামক দুই অনন্ত রহস্যরাজ্যের দিকে পূর্বে পশ্চিমে প্রসারিত হইয়া রহিয়াছে । যে মানুষের মধ্যে হৃদয় আছে সে কি কেবল পলের টাকা-এবং নাক-চোখের পরিমাণ মাপিয়া পছন্দ করিয়া লইবার যোগ্য । সমস্ত রাত্রি নিদ্রা হইল না। পরদিন প্ৰত্যুবে বৃদ্ধের সমস্ত অপহৃত বহুমূল্য দ্রব্যগুলি লইয়া চোরের ন্যায় চুপিচুপি ঠাকুরদার বাসায় গিয়া প্রবেশ করিলাম- ইচ্ছা ছিল, কাহাকেও কিছু না বলিয়া গোপনে চাকরের হন্তে সমান্ত দিয়া আসিব । কথোপকথন শুনিতে পাইলাম । বালিকা সুমিষ্ট সমেহম্বরে জিজ্ঞাসা করিতেছিল, “দাদামশায়, কাল লাটসাহেব তোমাকে কী বললেন ।” ঠাকুরদা অত্যন্ত হৰ্ষিতচিত্তে লাটসাহেব মুখে প্রাচীন নয়নজোড়-বংশের বিস্তর কাল্পনিক গুণানুবাদ বসাইতেছিলেন । বালিকা তাহাই শুনিয়া মহােৎসাহ প্ৰকাশ করিতেছিল । বৃদ্ধ অভিভাবকের প্রতি মাতৃহৃদয়া এই ক্ষুদ্র বালিকার সকরুণ ছলনায় আমার দুই চক্ষে জল ছিল। ছিল করিয়া আসিল । অনেকক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম ; অবশেষে ঠাকুরদা তাহার কাহিনী সমাপন করিয়া চলিয়া আসিলে আমার প্রতারপর বামালগুলি লইয়া বালিকার নিকট উপস্থিত হইলাম এবং নিঃশব্দে তাহার সম্মুখে রাখিয়া চলিয়া আসিলাম । বর্তমান কালের প্রথানুসারে অন্যদিন বৃদ্ধিকে দেখিয়া কোনোপ্রকার অভিবাদন করিতাম না ; আজ তাহাকে প্ৰণাম করিলাম । বৃদ্ধ নিশ্চয় মনে ভাবিলেন, গতকল্য ছোটােলটি তাহার বাড়িতে ছোটোলাটের গল্প বানাইয়া বলিতে লাগিলেন, আমিও কোনো প্ৰতিবাদ না করিয়া তাহাতে যোগ দিলাম । বাহিরের অন্য লোক যাহারা শুনিল তাহারা এ কথাটাকে আদ্যোপােন্ত গল্প বলিয়া স্থির করিল, এবং সকীেতুকে বুদ্ধের সহিত সকল কথায় সায় দিয়া গেল । সকলে উঠিয়া গেলে আমি অত্যন্ত সলজ্যুমুখে দীনভাবে বৃদ্ধের নিকট একটি প্রস্তাব করিলাম । সুপ্রিয়, যদিও নািনলোড়ের বাবুলের সহিত আমাদের বংশমর্যােগর তুলনাই হইতে পারে না, මීර් fea প্ৰস্তাবটা শেষ হইবামাত্র বুদ্ধ আমাকে বক্ষে আলিঙ্গন করিয়া ধরিলেন এবং আনন্দবেগে বলিয়া উঠিলেন, “আমি গরিব— আমার যে এমন সৌভাগ্য হবে তা আমি জানতুম না ভাই, আমার কুসুম সােল গণ্য করেছে তাই তুমি আজ এর দিলে " বলতে বলতে বুদ্ধের চক্ষু দিয়া জল পড়তে 邻河1