পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী صN سb?) চাষীরা কোনো উপলক্ষে শহরে এলে তাদের জন্যে বহুতর বাসা, ৮৯১টি খেলা ও আরামের জায়গা (recreation corners). \oi 2\pi zeii zeis কমী ও চাষীদের ঘরে রেডিয়ো শ্রদ্ধতিযন্ত্র । বীরভূম জেলার লোক বাষকিরদের চেয়ে নিঃসন্দেহ স্বভাবত উন্নততর শ্রেণীর জীব । বাষকিরিয়ার সঙ্গে বীরভূমের শিক্ষা ও আরামের ব্যবস্থা মিলিয়ে দেখো । উভয় পক্ষের ডিফিকালটিজেরও তুলনা করা কর্তব্য হবে । সোভিয়েট রাষ্ট্রসংঘের মধ্যে যতগুলি রিপাবলিক হয়েছে তার মধ্যে তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান সব চেয়ে অল্পদিনের । তাদের পত্তন হয়েছে। ১৯২৪ খৃস্টাব্দের অক্টোবরে, অর্থাৎ বছর-ছায়েকের চেয়েও তাদের বয়স কম । তুর্কমেনিস্তানের জনসংখ্যা সবসুদ্ধ সাড়ে দশ লক্ষ । এদের মধ্যে নয়। লক্ষ লোক চাষের কাজ করে । কিন্তু নানা কারণে খেতের অবস্থা ভালো নয়, পশুপালনের সুযোগও তদ্রুপ । এরকম দেশকে বাচাবার উপায় কারখানার কাজ খোলা, যাকে বলে industrialization । বিদেশী বা স্বদেশী ধনী মহাজনদের পকেট ভরাবার জন্যে কারখানার কথা হচ্ছে না, এখানকার কারখানার উপস্বত্ব সর্বসাধারণের । ইতিমধ্যেই একটা বড়ো সুতোর কল এবং রেশমের কল খোলা হয়েছে । আশকাবাদ শহরে একটা বৈদ্যাতজনন স্টেশন বসেছে, অন্যান্য শহরেও উদ্যোগ চলেছে। যন্ত্রচলনক্ষম শ্রমিক চাই, তাই বহুসংখ্যক তুর্কমেনি যুবকদের মধ্যরূশিয়ার বড়ো বড়ো কারখানায় শিক্ষার জন্যে পাঠানো হয়ে থাকে । আমাদের যুবকদের পক্ষে বিদেশী-চালিত কারখানায় শিক্ষার সুযোগলাভ যে কত দুঃসাধ্য তা সকলেরই জানা আছে। বুলেটিনে লিখছে, তুর্কমেনিস্তানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা এত কঠিন যে, তার তুলনা বোধ হয় অন্য কোথাও পাওয়া যায় না । বিরলবসতি জনসংস্থান দূরে দূরে, দেশে রাস্তার অভাব, জলের অভাব, আপাতত মাথা-পিছু পাচ রুবল করে শিক্ষার খরচ পড়ছে। এ দেশের প্রজাসংখ্যার সিকি পরিমাণ লোক যাযাবর (nomads) ৷ তাদের জন্যে প্রাথমিক পাঠশালার সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডিং স্কুল খোলা হয়েছে, ইদারার কাছাকাছি, যেখানে বহু পরিবার মিলে আড্ডা করে সেইরকম জায়গায়। পড়ুয়াদের জন্যে খবরের কাগজও প্ৰকাশ করা হয়ে থাকে । মস্কেী শহরে নদীতীরে সাবেক কালের একটি উদ্যানবেষ্টিত সুন্দর প্রাসাদে তুর্কমেনদের জন্য শিক্ষক শিক্ষিত করবার একটি বিদ্যাভবন (Turcomen People's Home of Education) স্থাপিত হয়েছে । সেখানে সম্প্রতি একশো তুর্কমেন ছাত্র শিক্ষা পাচ্ছে, বারো-তেরো বছর তাদের বয়স । এই বিদ্যাভবনের ব্যবস্থা স্বায়ত্ত্বশাসননীতি-অনুসারে । এই ব্যবস্থার মধ্যে কতকগুলি কর্মবিভাগ আছে । যেমন স্বাস্থ্যবিভাগ, গাৰ্হস্থ্যবিভাগ (household commission), ক্লাস-কমিটি । স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে । দেখা হয়, সমস্ত মহলগুলি (compartments). ক্লাসগুলি, বাসের ঘর, আঙিনা পরিষ্কার আছে কি না । কোনো ছেলের যদি অসুখ করে, তা সে যতই সামান্য হোক, তার জন্যে ডাক্তার দেখাবার বন্দোবস্ত এই বিভাগের 'পরে । গাৰ্হস্থ্যবিভাগের অন্তগত অনেকগুলি উপবিভাগ আছে । এই বিভাগের কর্তব্য হচ্ছে দেখা- ছেলেরা পরিষ্কার পরিপাটি আছে কি না । ক্লাসে পড়বার কালে ছেলেদের ব্যবহারের প্রতি দৃষ্টি রাখা ক্লাস-কমিটির কাজ । প্ৰত্যেক বিভাগ থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে অধ্যক্ষসভা গড়ে ওঠে । এই অধ্যক্ষসভার প্রতিনিধিরা স্কুল-কেন্সিলে ভোট দেবার অধিকার পায় । ছেলেদের নিজেদের মধ্যে বা আর-কারও সঙ্গে বিবাদ হলে অধ্যক্ষসভা তার তদন্ত করে ; এই সভার বিচার স্বীকার করে নিতে সব ছাত্রই বাধ্য। এই বিদ্যাভবনের সঙ্গে একটি ক্লাব আছে । সেখানে অনেক সময়ে ছেলেরা নিজের ভাষায় নিজেরা নাট্যাভিনয় করে, গান-বাজনার সংগত হয় । ক্লাবের একটি সিনেমা আছে, তার থেকে মধ্য-এশিয়ার জীবনযাত্রার চিত্রাবলী ছেলেরা দেখতে পায় । এ ছাড়া দেওয়ালে-টাঙানো খবরের কাগজ বের করা হয় ।