পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানুষের ধর্ম 98. ত্যাগ করতে পারে এবং দুঃখকে স্বীকার করে দুঃখকে অতিক্রম করে । স্বার্থের জীবনযাত্রায় সুখদুঃখের ভার গুরুতর, মানুষ স্বার্থকে যখন ছাড়িয়ে যায়। তখন তার ভর এত হালকা হয়ে যায় যে, তখন পরম দুঃখের মধ্যে তার সহিষ্ণুতাকে, পরম অপমানের আঘাতে তার ক্ষমাকে, অলৌকিক বলে মনে হয় । আপনাকে বৃহতে উপলব্ধি করাই সত্য, অহংসীমায় অবরুদ্ধ জানাই অসত্য । ব্যক্তিগত দুঃখ এই TOPVSJ 1 আমরা দুঃখকে যে ভাবে দেখি বৃহতের মধ্যে সে ভাব থাকতে পারে না, যদি থাকত তা হলে সেখানে দুঃখের লাঘব বা অবসান হত না । সংগীতের অসম্পূর্ণতায় বিস্তর বেসুর আছে, সেই বোসুরের একটিও থাকতে পারে না সম্পূর্ণ সংগীতে- সেই সম্পূৰ্ণ সংগীতের দিকে যতই যাওয়া যায় ততই বেসুরের হ্রাস হতে থাকে । বেসুর আমাদের পীড়া দেয়, যদি না দিত তা হলে সুরের দিকে আমাদের যাত্রা এগোেত না । তাই বিরাটকে বলি রুদ্র, তিনি মুক্তির দিকে আকর্ষণ করেন দুঃখের পথে । অপূর্ণতাকে ক্ষয় করার দ্বারা পূর্ণের সঙ্গে মিলন বিশুদ্ধ আনন্দময় হবে, এই অভিপ্ৰায় আছে বিশ্বমানবের মধ্যে । তার প্রতি প্রেমকে জাগরিত করে তারই প্রেমকে সার্থক করব, যুগে যুগে এই প্ৰতীক্ষার আহবান আসছে আমাদের কাছে । সেই আহবানের আকর্ষণে মানুষ বেরিয়ে পড়েছে অজানার দিকে, এই যাত্রার ইতিহাসই তার ইতিহাস । তার চলার পথপার্থে কত সাম্রাজ্য উঠল এবং পড়ল, ধনসম্পদ হল স্তুপাকৃত, আবার গোল মিলিয়ে ধুলোর মধ্যে । তার আকাঙক্ষাকে রূপ দেবার জন্যে কত প্ৰতিমা সে গড়ে তুললে, আবার ভেঙে দিয়ে গেল, বয়স পেরিয়ে ছেলেবেলাকার খেলনার মতো । কত মায়ামক্সের চাবি বানাবার চেষ্টা করলে- তাই দিয়ে খুলতে চেয়েছিল প্ৰকৃতির রহস্যভাণ্ডার, আবার সমস্ত ফেলে দিয়ে নূতন করে খুঁজতে বেরিয়েছে গহনে প্রবেশের গোপন পথ । এমনি করে তার ইতিবৃত্তে এক যুগের পর আর-এক যুগ আসছে- মানুষ অশ্রান্ত যাত্রা করেছে। অন্নবক্সের জন্যে নয়, আপনার সমস্ত শক্তি দিয়ে মানবলোকে মহামানবের প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে, আপনার জটিল বাধার থেকে আপনার অন্তরতম সত্যকে উদ্ধার করবার জন্যে ; সেই সত্য যা তার পূজিত দ্রব্যভারের চেয়ে বড়ো, তার সমস্ত কৃতকর্মের চেয়ে বড়ো, তার সমস্ত প্ৰথা মত বিশ্বাসের চেয়ে বড়ো, যার মৃত্যু নেই, যার ক্ষয় নেই । প্রভূত হয়েছে মানুষের ভুলভ্রান্তি নিস্ফলতা, পথে পথে তারা প্ৰকাণ্ড ভগ্নস্তৃপরূপে ছড়িয়ে আছে ; মানুষের দুঃখব্যথার আঘাত হয়েছে অপরিসীম, তার অবরুদ্ধ সার্থকতার শৃঙ্খল-ছেদনের কঠিন অধ্যবসায় ; এ-সমস্ত এক মুহুৰ্তও কে সহ্য করতে পারত, মানুষের অন্তরবাসী ভূমার মধ্যে যদি এর চিরন্তন কোনো অর্থ না থাকত । মানুষের সকল দুঃখের উপরকার কথা এই যে— মানুষ আপন চৈতন্যকে প্রসারিত করছে আপনি অসীমের দিকে, জ্ঞানে প্রেমে কর্মে বৃহত্তর ঐক্যকে আয়ত্ত করতে চলেছে আপনার সকল মহৎ কীর্তিতে, তার নিকটতর সামীপ্য পাবার জন্যে ব্যগ্ৰ বাহু বাড়িয়েছে র্যাকে তে সর্বািগং সর্বতঃ প্ৰাপ্যধীরা যুক্তাত্মানঃ সর্বমেবাবিশন্তি । মানুষ হয়ে জন্মলাভ করে আরাম চাইবে কে, বিশ্রাম পাব কোথায় । মুক্তি পেতে হবে, মুক্তি দিতে হবে, এই-বে তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মহাবিশ্বজীবনের তরঙ্গেতে নাচিতে নাচিতে নিৰ্ভয়ে ছুটিতে হবে, সত্যেরে করিয়া ধ্রুবতারা । মৃত্যুরে না করি শঙ্কা । দুদিনের অশ্রািজলধারা মন্তকে পড়িবে করি।--তারি মাঝে যাব অভিসারে তরি কাছে জীবন সর্বস্বাধন অপিয়াছিযারে জন্ম জন্ম ধরি । cक Cन ! खानि नां 6क 1 नेि न६ि छात्र ।