পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

為br রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বঁকাচা আম তিনটে কঁচা আমি পড়ে ছিল গাছতলায় চৈত্রমাসের সকালে মৃদু রোদদুরে । যখন দেখলুম। অস্থির ব্যগ্রতায় হাত গেল না। কুড়িয়ে নিতে । তখন চা খেতে খেতে মনে ভাবলুম, বদল হয়েছে পালের হাওয়া । পুব দিকের খেয়ার ঘাট ঝাপসা হয়ে এল । সেদিন গেছে যেদিন দৈবে-পাওয়া দুটি-একটি কঁগচা আম ছিল আমার সোনার চাবি, খুলে দিত সমস্ত দিনের খুশির গোপন কুঠুরি ; আজ সে তালা নেই, চাবিও লাগে না । গোড়াকার কথাটা বলি । আমার বয়সে এ বাড়িতে যেদিন প্ৰথম আসছে বউ পরের ঘর থেকে, সেদিন যে-মনটা ছিল নোঙর-ফেলা নীেকো বান ডেকে তাকে দিলে তোলপাড় করে । জীবনের বাধা বরাদ ছাপিয়ে দিয়ে এল অদৃষ্টের বদান্যতা । পুরোনো ছেড়া আটপৌরে দিনরাত্রিগুলো খসে পড়ল সমস্ত বাড়িটা থেকে । কদিন তিনবেলা রোশন'চৌকিতে চার দিকের প্রাত্যহিক ভাষা দিল বদলিয়ে ; ঘরে ঘরে চলল। আলোর গোলমাল ঝাড়ে লণ্ঠনে । অত্যন্ত পরিচিতের মাঝখানে ফুটে উঠল অত্যন্ত আশ্চর্য । কে এল রঙিন সাজে সজায়, আলতা-পরা পায়ে পায়েইঙ্গিত করল যে, সে এই সংসারের পরিমিত দামের মানুষ নয়— সেদিন সে ছিল একলা অতুলনীয় । বালকের দৃষ্টিতে এই প্ৰথম প্ৰকাশ পেল— জগতে এমন কিছু যাকে দেখা যায়। কিন্তু জানা যায় না । বঁাশি থামল, বাণী থামল না আমাদের বধু রইল বিস্ময়ের অদৃশ্য রশ্মি দিয়ে ঘেরা । তার ভাব, তার আড়ি, তার খেলাধুলো ননদের সঙ্গে । অনেক সংকোচে অল্প একটু কাছে যেতে চাই,